ধৃত: পিন্টু শীল। নিজস্ব চিত্র
ফের সাত সকালে খুন শিলিগুড়িতে। পাড়ার মধ্যে প্রতিবেশীকে কুপিয়ে খুন করে পালানোর সময় ধরা পড়ে গেল এক যুবক। রাস্তার পাশে বৃষ্টির জমা জলে হাত ধুয়ে লোকজনকে হুমকি দিতে দিতে দৌঁড়ে পালানোর সময় বড় রাস্তায় পুলিশ ভ্যানের সামনে পড়ে যায় অভিযুক্ত। প্রথমে গেঞ্জির নীচে সে ধারালো অস্ত্রটি লুকনোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। কিন্তু শেষরক্ষা হবে না বুঝেই, ‘‘থানাতেই যাচ্ছিলাম’’ বলে পুলিশকে জানায় অভিযুক্ত।
এনজেপি থানা এলাকার শহিদ কলোনির বাসিন্দা পিন্টু শীলকে (২৭) খুনের অভিযোগে মনোজিৎ দাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারী অফিসাররা জানান, বছর চারেক আগে নিহত পিন্টুর সঙ্গে অভিযুক্তের এক আত্মীয়ের সম্পর্ক ঘিরে দুই পরিবারে গোলমাল হয়। তারপর থেকেই দুই পরিবারের মধ্যে হুমকি, চোখ রাঙানি চলছিল। সম্প্রতি গোলমাল বাড়ায়, নিহত যুবক পিন্টু তাকে পাড়া ছাড়া করার ও প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছিল বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছে অভিযুক্ত মনোজিৎ।
পুলিশ জানিয়েছে, বোতলবন্দি করে পানীয় জল বিক্রির একটি সংস্থায় কাজ করতেন পিন্টু। বৃহস্পতিবার সকাল আটটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে কাজে যাচ্ছিলেন তিনি। ভোর থেকে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। সেই সময় গলির ভিতর থেকে মনোজিৎ বার হয়ে এসে তাঁর গলায় দায়ের কোপ দিয়ে পালায়। রক্তাক্ত অবস্থায় পিন্টু লুটিয়ে পড়ে। যার বাড়ির সামনে দেহটি পড়েছিল, সেই দুলালি কর্মকার বলেন, ‘‘পাশের গলিতে জল আনতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে এসে দেখি একটি ছেলে পড়ে আছে। আরেকজন ততক্ষণে দৌড়ে পালিয়েছে।’’
পিন্টুর দাদা শ্রীকান্তের একটি সেলুন রয়েছে এলাকায়। তিনি বলেন, ‘‘মনোজিৎদের পরিবারের সঙ্গে আগে ঝামেলা হয়েছিল। কিন্তু ও এমন করবে ভাবিনি। ভাইয়ের স্ত্রী গর্ভবতী। মা রয়েছে। দু’জনকে সামলানো যাচ্ছে না।’’ ধৃত মনোজিৎ সবসময় নেশা করত বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘দুই পরিবারের গোলমাল, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেই খুন বলে মনে হচ্ছে। তদন্ত চলছে।’’
ময়নাতদন্তের পরে এ দিন সন্ধ্যায় পিন্টুর দেহ এলাকায় নিয়ে আসা হলে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন বাসিন্দারা। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। ঘটনার পরই বাড়ি ছেড়েছেন অভিযুক্তের পরিবারের লোকজন। ছিলেন শুধু দিদিমা ফুলটি দাস। তিনি বলেন, ‘‘নাতির কথা লোকমুখে শুনলাম। জানি না কী হয়েছে।’’
মাস দুয়েক আগেই শিলিগুড়ির টিকিয়াপাড়ায় এক যুবকের মাথায় পাথরের আঘাত করে খুন করার অভিযোগ ওঠে তার বন্ধুর বিরুদ্ধে। এর কয়েকদিনের মধ্যে শিলিগুড়ির কলেজ পাড়ায় সাত সকালে কুপিয়ে খুন করা হয় এক যুবককে। তার পিছনেও ছিল পারিবারিক বিবাদ। তারপর আবার বৃহস্পতিবারের খুনের ঘটনা। স্বভাবতই নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগে শহরের মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy