মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এক মহিলার বেদখল হওয়া জমি উদ্ধার করতে ও তাঁর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে তৎপরতা শুরু করলো দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। রবিবার বালুরঘাট শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নেপালিপাড়া এলাকার ঘটনা।
বালুরঘাট টাউন তৃণমূল সভাপতি সুভাষ চাকি ও তাঁর দলবল ওই জমি দখলের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন জমির মালিক তথা আইনজীবী সুব্রতা বসু তালুকদার। অভিযোগ, তাঁদের বসতি বাড়ি লাগোয়া প্রায় ১৫ শতক জমি ভয় দেখিয়ে সুভাষবাবু অবৈধভাবে প্রবেশ করে গাড়ি রাখার ঘর বানিয়ে নেন বলে অভিযোগ।
সুব্রতাদেবী ৮ অগস্ট বালুরঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু সুভাষবাবু রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবশালী। পাশাপাশি সুভাষবাবু বালুরঘাট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটরও। তাই স্থানীয় ভাবে তিনি কতটা সহায়তা পাবেন সেই আশঙ্কা ছিল সুব্রতাদেবীর। গত সপ্তাহে সুব্রতাদেবী সে কারণে সরাসরি নবান্ন গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়র দ্বারস্থ হন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখাও করেন তিনি। তাঁকে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন।
সুব্রতাদেবীর কথায়, ‘‘সে সময় মুখ্যমন্ত্রী আমাকে বলেন, তিনি অন্যায়কে কোনও সময় প্রশ্রয় দেন না। দলের কেউ অন্যায় ভাবে জায়গা দখল করবে, সমর্থন করবেন না।’’ সুব্রতাদেবী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, আমার কাগজপত্র ঠিক থাকলে আমি ন্যায় বিচার অবশ্যই পাব। মুখ্যমন্ত্রীর এই আশ্বাসে আমি নিশ্চিন্ত হই।’’
এরপর শনিবারেই নবান্ন থেকে বালুরঘাটে জেলা প্রশাসনের কাছে নির্দেশ চলে আসে। এ দিন সকালে জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ভূমি রাজস্ব দফতরের একাধিক আধিকারিক এবং পুলিশ নিয়ে গিয়ে জমির দলিল খতিয়ে দেখে সুব্রতাদেবীকে আশ্বস্ত করেন।
ওই জমির নথি যে তাঁদের নামেই রয়েছে, অনলাইনে তা দেখে পুলিশ সুপার সুব্রতাদেবীকে বলেন, ‘‘এদিন থেকে ওই জমিতে বহিরাগত কেউ ঢুকতে পারবে না।’’ তাদের সুরক্ষার সমস্ত ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়েছে বলে পুলিশ সুপার তাঁদের আশ্বাস দেন। পরে পুলিশ সুপার প্রসূনবাবু বলেন, নির্দেশ মতো ঘটনাটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সুব্রতাদেবীর বাড়ির পাশেই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সুভাষবাবুর বাড়ি। এদিন পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তদন্তকারী দল নেপালিপাড়া এলাকায় পৌঁছলে দূর থেকে সুভাষবাবু বিষয়টি আঁচ করেন। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জমির মালিককে ন্যায় বিচার দিতে প্রশাসনের তরফে তৎপরতা শুরু হয়েছে জেনে সুভাষবাবু আর ওই মুখো হননি। তাঁর সপক্ষে কোনও বক্তব্য জানাতেও চাননি। তদন্তে আসা পরিদর্শনকারীদের সামনে আসেননি বলে অভিযোগ।
অভিযুক্ত সুভাষবাবু অবশ্য পরে দাবি করেন, ‘‘ওই জায়গা সুব্রতাদেবীদের নয়। দীর্ঘ দিন ধরে ওই জায়গায় ঘর করে গাড়ি রাখি। প্রশাসনকে ভুল বোঝানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy