কেউ স্কুলে চাকরির সুবাদে স্যালারি অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। কেউ সাধারণ সেভিংস। সে সবই রাতারাতি বদলে গিয়েছে জনধন অ্যাকাউন্টে। নোট বাতিলের সমস্যার মধ্যেই এ বার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ‘নমুনা’ বদলের এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল কোচবিহারে।
অভিযোগ, কোচবিহার শহরে একটি আঞ্চলিক ব্যাঙ্কের শাখায় কয়েকশো সাধারণ সেভিংস ও স্যালারি অ্যাকাউন্ট রাতারাতি প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা অ্যাকাউন্টে বদলে গিয়েছে। ২০১৪ সালের ২১ জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই শাখায় যে সব অ্যাকাউন্ট খোলা হয়, সেই সব গ্রাহকদের একাংশের অ্যাকাউন্টে এমন সমস্যা হয়েছে। জানুয়ারি মাসে স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকে বেতন তুলতে ওই শাখায় গিয়ে বিষয়টি জানতে পারেন।
একই ভাবে বিষয়টি নজরে আসে সাধারণ গ্রাহকদেরও। এই ঘটনায় গ্রাহকদের মধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। স্কুল শিক্ষিকা বহ্নি দে বলেন, “বেতন তুলতে গিয়েছিলাম। ব্যাঙ্ক কর্মীরা জানান, আমার অ্যাকাউন্ট জনধন প্রকল্পের অ্যাকাউন্টে বদলে গিয়েছে। শুনে ঘাবড়ে যাই। টাকা তুলতেও সমস্যায় পড়তে হয়। আরেকদিন আবেদন জানাতেও যেতে হয়।” শুক্রবার তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির এক প্রতিনিধিদল সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে শাখায় গিয়ে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানান।
ওই আঞ্চলিক ব্যাঙ্কের রিজিওন্যাল ম্যানেজার দিবাকর চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, “এমনটা হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি জানা ছিল না। বিশদে খোঁজ নিচ্ছি। কোনও কারণে সমস্যা হয়ে থাকলে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।” ব্যাঙ্কের সংশ্লিষ্ট শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ নিয়ে যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তারা বলবেন।’’
গ্রাহকদের একাংশ জানাচ্ছেন, অ্যাকাউন্টের ‘চরিত্র’ বদলের বিষয়টি ব্যাঙ্কের কর্মীরাই তাঁদের জানান। অ্যাকাউন্ট পুরনো ধাঁচে ফেরাতে আবেদনপত্র জমা দেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। সমিতির কোচবিহার জেলা সভাপতি দেবাশিস কর বলেন, “সংশ্লিষ্ট শাখাতে অন্তত আড়াইশো শিক্ষকশিক্ষিকা-সহ বহু গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট জনধন যোজনায় বদলে গিয়েছে বলে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি। ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের পর এমন ঘটনার পেছনে কোন রহস্য আছে কি না দেখা দরকার। ব্যাঙ্কের ভুল। তবে শিক্ষকরা কেন আবেদন জানাবেন?’’
ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, জনধন যোজনার অ্যাকাউন্টে সর্বাধিক ৫০ হাজার টাকা রাখা যায়। সপ্তাহে টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা ১০ হাজার। মুম্বই থেকে ব্যাঙ্কের অন লাইন ডাটা দেখভাল হয়। জানুয়ারি মাসে ওই গোলমাল ধরা পড়ে। ব্যাঙ্কের এক কর্তার দাবি, ইতিমধ্যে ৩০ জন গ্রাহক ওই ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছেন। টাকা তোলার ক্ষেত্রে একজনেরও যাতে সমস্যা না হয় সেটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy