ভিড়: জ্বলছে ট্যাঙ্কার। সেই ছবিই মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি করতে জড়ো হয়েছে জনতা। শনিবার এনজেপিতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
দুঘর্টনার পিছনে কী রয়েছে পুরানো তেল চুরির গল্প! এনজেপি’র ইন্ডিয়াল ওয়েল ডিপোর সামনের রাস্তায় পরপর পাঁচটি ট্যাঙ্কারে আগুন লাগার ঘটনার পর এমনই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে। শনিবার রাতের বিধ্বংসী আগুন লাগার পর লাগোয়া ভারত নগর, ফুলেশ্বরী, বাবুপাড়া, দেশবন্ধুপাড়া বা এনজেপি সাউথ কলোনির বহু বাসিন্দা এলাকায় যান। মাস তিনেক আগের পুলিশি অভিযানের পর উত্তরবঙ্গের অন্যতম চোরাই তেলের ঘাঁট বলে পরিচিত এনজেপি কী, আবার সেই পুরানো ব্যবসায় ফিরতে শুরু করেছে- প্রশ্ন তুলেছেন দুশ্চিন্তাগ্রস্থ বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অনেকেই। বছর তিনেক আগেও এলাকায় একইভাবে একটি ট্যাঙ্কারে আগুন লাগার ঘটনা সামনে এসেছিল।
স্থানীয়দের সন্দেহ, অন্ধকারে ট্যাঙ্কার থেকে তেল চুরির সময়ই কোনওভাবে সিগারেট বা বিড়ির আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা ভয়াবহ আকার নেয়। তিনটি ট্যাঙ্কার সশব্দে ফেটে যায়। আরও দুটি ট্যাঙ্কার, দুটি টোটো, একটি ছোট গাড়ি পুড়ে গিয়েছে। পাশের, বস্তিতে রাতে আগুন ছড়ায়। দুটি বাড়ি পুড়েছে। যদিও পুলিশ-প্রশাসনের তরফে আগুন লাগার কারণ নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করা হয়নি। দমকলের তরফে তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, এদিন রাতে তেলের ডিপোর সামনের রাস্তা থেকেই আগুন ছড়ায়। সেখানে ঘটনার আগে গুটি কয়েক ট্যাঙ্কার চালকেরা ছাড়াও অন্তত জনা ২৫/৩০ যুবক জড়ো হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সেখানে যুবকেরা কী করছিলেন তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
এলাকার বিধায়ক তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘যেভাবে আগুন লেগেছিল, তা ভয়ঙ্কর হতে পারত। দমকল তো বটেই পুলিশ-প্রশাসন তদন্ত করে বিষয়টি দেখবে। কোনও বেআইনি কাজ থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। উল্লেখ্য, তিন মাস আগে এনজেপি থানার পুলিশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে কয়েক হাজার লিটার চোরাই তেল উদ্ধার করে। ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ৫ জন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তার পর চোরাই তেলের ব্যবসা অনেকটা বন্ধ হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, ইন্ডিয়ান ওয়েলের ডিপোর পাশে একাধিক বস্তি রয়েছে। সেই সময় বস্তিতে চোরাই তেল মজুত করা হয় বলে অভিযোগ। বছর সাতেক আগে একবার পুলিশি অভিযানে এলাকায় তেলের একাধিক কুয়ো, পাম্প মেশিন পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে। প্রতি ক্ষেত্রেই ইন্ডিয়ান ওয়েলের গেটের বাইরে এসে ট্যাঙ্কারগুলি সারি দিয়ে দাঁড়ায়। সকাল থেকে গভীর রাত অবধি কয়েকশ ট্যাঙ্কার এলাকায় থাকে। এই চালকদের একাংশের মদতে তেল চুরি চলে বলে অভিযোগ। টায়ারের হাওয়া কমিয়ে বাড়িয়ে তেলের পরিমাণে গরমিল করা হয়। তার পরে ট্যাঙ্কার বাইরে এনে তেল বিক্রি করে দেওয়া হয়। তা ড্রামে, জারিকেনে ভরে বস্তিতে মজুত হয়। টোটো, অটোতে করেও অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy