পর্যটন নিয়ে বৈঠক। জলপাইগুড়িতে।
ডুয়ার্স বলতে শুধুমাত্র জঙ্গল ও বন্যপ্রাণ নয়, পর্যটন মানচিত্রে ঠাই পেতে চলেছে স্থানীয় লোকসংস্কৃতি, প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদন, প্রাচীন মন্দির, নদী, পরিযায়ী পাখি-সহ গ্রামীণ জীবন।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ ডুয়ার্সের নতুন পরিচিতি গড়ে তুলতে এমনই পরিকল্পনা নিল পর্যটন দফতর এবং জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। শুক্রবার জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে প্রশাসন ও পর্যটন দফতর ট্যুর অপারেটের। বন দফতর ও রিসর্ট মালিক বিভিন্ন সংগঠনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন এলাকায় সরকারি কটেজ তৈরি ছাড়াও বাসিন্দাদের পর্যটন শিল্পে টেনে আনতে আর্থিক সাহায্য দিয়ে হোম ট্যুরিজমে উৎসাহিত করা হবে।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পৃথা সরকার বলেন, “দেশি ও বিদেশি পর্যটকরা ডুয়ার্স বলতে জানেন জঙ্গল, হাতি ও গন্ডার। জঙ্গলের বাইরে প্রচুর জায়গা রয়েছে। আমরা সেগুলি চিহ্নিত করে পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করেছি। খুব তাড়াতাড়ি ডুয়ার্সের বৈচিত্র্য উপভোগের সুযোগ পাবেন পর্যটকরা।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গলের বাইরে পর্যটনকে ছড়িয়ে দিতে গত বছর বিশেষ সেল তৈরি করে নতুন আকর্ষণীয় এলাকা চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়। এদিনের সভায় ডামডিম, ইনডং, বাতাবাড়ি, মঙ্গলবাড়ি, টিলাবাড়ি, গজলডোবা, চামূর্চি, গয়েরকাটার মধুবনি, ধূপগুড়ির খুটিমারি, গোঁসাইহাট, ময়নাগুড়ির জল্পেশ, জটিলেশ্বর, বটেশ্বর, পেটকাটি, রামসাই, বৈকুন্ঠপুরের দেবী চৌধুরানীর মন্দিরকে তুলে ধরা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
বৈঠকে জানানো হয়েছে, তিস্তা ও জলঢাকা নদী পাড়ের কিছু মনোরম জায়গা খুঁজে বার করা হয়েছে। সেখানে পরিযায়ী পাখি দেখার সুযোগ মিলবে। রামশাইতে রকমারি প্রজাপতি দেখা যাবে। ইনডং চা বাগানের কাছে রক ক্লাইম্বিং, গজলডোবার তিস্তা সেচ খালে ওয়াটার গ্লাইডিং-এর ব্যবস্থা হচ্ছে। এলাকাগুলির লোকসংস্কৃতি এবং গ্রামীণ জনজীবনকে পর্যটকদের সামনে তুলে ধরা হবে।
রাজ্য পর্যটন দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা (উত্তরবঙ্গ) সুনীল অগ্রবাল বলেন, “এলাকাগুলিতে নিয়ে রাজ্যে তো বটেই দেশে বিভিন্ন প্রান্তে প্রচার হবে। ওই সমস্ত পর্যটনকেন্দ্রে কটেজ সহ পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে। খুব তাড়াতাড়ি শেষ হবে।” তিনি জানান, জেলা প্রশাসন থেকে কিছু পাকা রাস্তা দ্রুত তৈরি করে দেওয়ার জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর এবং জেলা পরিষদের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের গোষ্ঠী তৈরি করে হোম ট্যুরিজমের জন্য আর্থিক সাহায্য করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চিলাপাতার বস্তিবাসীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
পর্যটন দফতরের অফিসারেরা জানান, এবার উত্তরবঙ্গে পর্যটকের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হবে। পর্যটন দফতর ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খুশি পর্যটনের জড়িত সংগঠনগুলি। ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে ডুয়ার্সের নতুন পরিচিতি জরুরি হয়ে পড়েছে। এই কাজ শেষ হলে উত্তরবঙ্গ পর্যটন শিল্প নতুনভাবে সমৃদ্ধ হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy