Advertisement
১১ মে ২০২৪

রণক্ষেত্র যাত্রাডাঙা, বিডিও-সহ আহত ৮

তৃণমূলের প্রধানকে অপসারণের জন্য ডাকা তলবি সভা ঘিরে বৃহস্পতিবার সকালে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল পুরাতন মালদহের যাত্রাডাঙা এলাকা। যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরের সামনেই সংঘর্ষে স্থানীয় বিডিও ও দুই পুলিশকর্মী সহ জখম হন ৮ জন।

যাত্রাডাঙার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন।

যাত্রাডাঙার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২৯
Share: Save:

তৃণমূলের প্রধানকে অপসারণের জন্য ডাকা তলবি সভা ঘিরে বৃহস্পতিবার সকালে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল পুরাতন মালদহের যাত্রাডাঙা এলাকা। যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরের সামনেই সংঘর্ষে স্থানীয় বিডিও ও দুই পুলিশকর্মী সহ জখম হন ৮ জন। অভিযোগ, অনাস্থা সভা ভেস্তে দিতে তৃণমূল ও সিপিএমের কর্মী সমর্থকেরা জোট বেঁধে পুলিশ-প্রশাসনের উপর হামলা চালান। পুলিশ লাঠি চালায়। পরে গুলিও ছোড়ে বলে অভিযোগ। পরে ওই সভা অবশ্য অনুষ্ঠিত হয়েছে। তৃণমূলের প্রধান সেখানে অনাস্থায় হেরে অপসারিত হয়েছেন।

পুলিশের দাবি, সিপিএমের কর্মীরাই গণ্ডগোল পাকিয়েছেন। তৃণমূলের অভিযোগ, কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশ-প্রশাসনের উপর হামলা চালায়। পুলিশ ৫ সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতারও করেছে। সিপিএমের পাল্টা অভিযোগ, ওই পাঁচ জনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। পুলিশের লাঠির ঘায়ে তাদের ৫ সমর্থক জখম হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন দলের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র।

মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অনাস্থা সভা নিয়ে উত্তেজনা থাকায় পঞ্চায়েত দফতরের সামনে ১৪৪ ধারা জারি ছিল। তিনি বলেন, “তা সত্ত্বেও সিপিএমের কর্মী সমর্থকরা গণ্ডগোল পাকান। ওঁদের হামলায় বিডিও সহ দুই পুলিশকর্মী জখম হন।” বাদল সরকার নামে এক পুলিশকর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রসূনবাবুর দাবি, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শূন্যে রবার বুলেট ছোড়া হয়।” পুরাতন মালদহ ব্লকের ওই বিডিও দুলেন রায় বলেন, “গণ্ডগোলের সময় একটি ইট এসে কাঁধে লাগে। তবে কারা তা ছুড়েছিল জানি না।” এই গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৫টি আসনের মধ্যে ৭টি করে আসন কংগ্রেস ও সিপিএমের দখলে রয়েছে। তৃণমূল জিতেছে ১টি আসনে। প্রধান পদটি তফসিলি মহিলা সংরক্ষিত। কংগ্রেস তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে বোর্ড গড়ে। প্রধান হন তৃণমূলের শতাব্দী সরকার ও উপপ্রধান হন কংগ্রেসের সুভাষ সরকার। সেপ্টেম্বরে পুরনো জোট ভেঙে সিপিএমের সঙ্গে জোট বাঁধেন তৃণমূল প্রধান। তারপর কংগ্রেসের উপপ্রধানকে সরাতে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়। কিন্তু সিপিএমের এক সদস্য কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় বাম-তৃণমূল জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থাও খারিজ হয়ে যায়। এ বার সিপিএমের এক সদস্যকে সঙ্গে পেয়ে তৃণমূলের প্রধানকে সরাতে অনাস্থা পেশ করে কংগ্রেস।

এদিন সেই অনাস্থার তলবি সভা ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছিল। পুলিশও মোতায়েন ছিল। কিন্তু কংগ্রেস সদস্যরা দফতরে ঢোকার সময়েই তুলকালাম বাঁধে। বৃষ্টির মতো ইট পড়তে থাকে। তখনই বিডিও সহ পুলিশকর্মীরা জখম হন।

সিপিএমের অম্বরবাবুর দাবি, সিপিএমের যে সদস্য কংগ্রেসকে সমর্থন করেছেন, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল। পুলিশের কাছে অভিযোগও জানানো হয়। তাঁর বক্তব্য, “পুলিশ কিছু করেনি। তাই এদিন আমাদের ওই সদস্যকে নিয়ে যখন কংগ্রেস সদস্যরা পঞ্চায়েত দফতরে ঢুকছিলেন, তখন দলের লোকজন শান্তিপূর্ণ ভাবেই পুলিশি ব্যবস্থার দাবি জানান।” তাঁর দাবি, পুলিশ উল্টে তাঁদের পিটিয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের অভিযোগ, “জেলা পরিষদের কংগ্রেস সভাধিপতির নেতৃত্বে আজ কংগ্রেস সদস্যরাই প্রশাসনের উপর হামলা চালিয়েছে।”

জেলা পরিষদের সভাধিপতি কংগ্রেসের সরলা মুর্মুর বাড়ি ওই এলাকাতেই। তাঁর অভিযোগ, হার নিশ্চিত জেনে সভা ভেস্তে দিতে সিপিএম ও তৃণমূলকর্মীরা জোট বেঁধে পুলিশ-প্রশাসনের উপর হামলা চালায়। তাঁর দাবি, “অপহরণের অভিযোগ ভুল। তারান হেমব্রম নামে ওই সিপিএম সদস্য কংগ্রেস যোগ দিয়েছেন। তা প্রশাসনকে জানিয়েওছেন।”

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

chanchal bdo jatradanga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE