গবেষণাগারে ব্যস্ত গবেষকেরা নিজস্ব চিত্র।
ইসরোর সহযোগিতায় এবার সুরেন্দ্রনাথ কলেজে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের উপর বিশেষ গবেষণা করা হয়েছে, যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত গবেষক থেকে শিক্ষকেরা।
সাম্প্রতিককালে বঙ্গোপসাগরে বারবার তৈরি হয়েছে ঘূর্ণিঝড়। কোনওটি আঘাত এনেছে বাংলার উপকূলে আবার বেশ কয়েকটি ওড়িশা অথবা বাংলাদেশ উপকূলে আছড়ে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের দিক পরিবর্তন হলেও বাংলার উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস দেখা গেছে এবং একের পর এক দুর্বল বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে নিচু এলাকা এবং গ্রামের পর গ্রাম।
ঘূর্ণিঝড় সরাসরি আঘাত না করলেও কী ভাবে জলোচ্ছ্বাস বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের উপর কী প্রভাব পড়ছে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং তথ্য সংগ্রহের জন্য “ওসান স্যাট ৩ স্যাটেলাইট” উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ২০২২-এ নভেম্বরে ইসরোর তরফ থেকে। সমুদ্রের বিভিন্ন স্তরে জলোচ্ছ্বাসের পরিমাণ কত, সমুদ্রের রঙের পরিবর্তন, এ ছাড়াও সমুদ্রের বিভিন্ন স্তরে কী ভাবে পরিবর্তন হচ্ছে, এবং সমুদ্রের নীচে উষ্ণতার তারতম্য এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে স্যাটেলাইটটি।
এই বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য ইসরোর কাছে আসলেও তা আলাদা আলাদা করে গবেষণা করা প্রয়োজন। এবার জলোচ্ছ্বাসের গবেষণায় ইসরোর সঙ্গে হাত মেলালো সুরেন্দ্রনাথ কলেজ। সুরেন্দ্রনাথ কলেজের গণিত বিভাগের অধ্যাপক তুষার কান্তি সাহার তত্ত্বাবধানে মেরিন সায়েন্স-এর তিন জন গবেষক এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
অধ্যাপক তুষার বাবু বলেন “এই ধরনের গবেষণার সুযোগ ইসরোর তত্ত্বাবধানে ইউজি কলেজ হিসাবে সুরেন্দ্রনাথ এক মাত্র প্রথম। এখানে মূলত জলোচ্ছ্বাসের নিউমেরিকাল সিমুলেশন বিষয়টা গবেষণা করা হচ্ছে।”
ইতিমধ্যে গবেষণার জন্য সুরেন্দ্রনাথ কলেজের এক গবেষক ইসরোর স্পেস এপ্লিকেশন সেন্টারে গিয়ে সেখানে এক মাসের ট্রেনিং সম্পন্ন করেছেন এবং ইসরোর এক বিজ্ঞানী সুরেন্দ্রনাথ কলেজে ঘুরে গেছেন, আর ভবিষ্যতেও কয়েক জন বিজ্ঞানী এই কলেজে আসবেন বলে জানাচ্ছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ইসরোর বিশেষ ক্লাউড স্পেসে প্রত্যেক ছ-ঘন্টা অন্তর বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন ডেটা সুরেন্দ্রনাথের গবেষকরা দেখতে পান এবং তা ব্যবহার করতে পারেন গবেষণার জন্য।
এ বছর ডিসেম্বর মাসে প্রথম পর্যায়ের প্রজেক্ট রিপোর্ট নিয়ে বৈঠক রয়েছে ইসরোর সঙ্গে। এই প্রজেক্টের সময়সীমা হচ্ছে তিন বছরের। প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত গবেষকেরা মনে করছেন এই ধরনের গবেষণার ফলে আগামী দিনে শুধুমাত্র জলোচ্ছ্বাসের সম্বন্ধে নয়, সমুদ্রের অনেক অজানা তথ্য মানুষের সামনে উঠে আসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy