সংগৃহীত চিত্র।
উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা এক লাফে অনেকটাই বৃদ্ধি করল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এক দিকে শিক্ষক ঘাটতি, অন্য দিকে ‘যোগ্য-অযোগ্য’ বিতর্কের মাঝে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে শিক্ষক মহলে।
দীর্ঘ দিন ধরে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। তার উপর ২০১৬ সালের নিয়োগের প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ওই নির্দেশের কারণে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি প্রশ্ন চিহ্নের মুখে। যদিও ওই মামলা বিচারাধীন দেশের শীর্ষ আদালতে। এই তালিকায় উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে রয়েছেন ৮০০-র বেশি শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। এই পরিস্থিতিতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ‘ডিএ গেটিং’ স্কুলগুলিতে ভর্তির ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা এক লাফে বৃদ্ধি করে ৪০০ করল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
সরকার এবং সরকার পোষিত স্কুলগুলি ৩০০ জন ছাত্র ভর্তি নিতে পারে। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নয়া নির্দেশিকায় আরও ১০০টি আসন বৃদ্ধি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে স্কুল জেলা পরিদর্শকদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে স্কুলগুলিকে।
আর এক লাফে আসন বৃদ্ধি করে ৪০০ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষক মহল থেকে শিক্ষক সংগঠনগুলির একাংশ। এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘শেষ কয়েক বছর ধরে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত রয়েছে। যাঁরা নিযুক্ত হয়েছেন তাঁদের একটা বড় অংশ এখন চাকরি হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে নতুন শিক্ষক পদের অনুমোদন, শূন্য পদে নিয়োগ জরুরি। সেটা সরকারকেই করতে হবে।’’
শিক্ষা সংসদের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘ডিএ গেটিং’ স্কুলগুলি সরাসরি ৪০০টি আসনে ভর্তি নিতে পারবে। সরকার ও সরকার পোষিত স্কুল সর্বাধিক ৩০০ আসনে ভর্তি নিতে পারবে। এই স্কুলগুলো যদি আরও বেশি ভর্তির নিতে চায়, তা হলে জেলা পরিদর্শকদের কাছে অনুমতি নিতে হবে। আর উভয় স্তরের স্কুল যদি ৪০০-র বেশি আসনে ভর্তি করতে চায় তাহলে শিক্ষা সংসদের যে আঞ্চলিক দফতর আছে সেখানে আবেদন করতে হবে। তাদের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে অনুমোদন দেবে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যাণ্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘কেবলমাত্র ছাত্র ভর্তির উর্ধ্বসীমা বৃদ্ধি করলেই সমাধান হবে না, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পাঠদান করার শিক্ষকের অভাব মেটানো দরকার দ্রুত শূন্যপদে নিয়োগের মাধ্যমে।’’
যদিও স্কুলগুলির বক্তব্য, মাধ্যমিকে কত পরীক্ষার্থী রয়েছে, কোন স্কুলে কী পরিকাঠামো আছে তা যাচাইয়ের পরে আসন সংখ্যা নির্ধারণ করে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তবে শিক্ষক ঘাটতির মতো একটা বড় বিষয় ভাবাচ্ছে শিক্ষা সংসদকে। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে প্রায় ৬০০০ স্কুল রয়েছে। বেশ কিছু নতুন বিষয় এ বছর যুক্ত করা হয়েছে। যাতে পড়ুয়ারা সেই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে এবং স্কুলগুলির পরিকাঠামোর কথা মাথায় রেখে এই আসল সংখ্যার উর্ধ্বসীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে কাউন্সিলের তরফ থেকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy