Advertisement
E-Paper

হরেকৃষ্ণ শতবর্ষেই প্রয়াত বিনয় কোঙার

কৃষক নেতা হরেকৃষ্ণ কোঙারের জন্মশতবর্ষ চলাকালীনই প্রয়াত হলেন তাঁর ভাই, সিপিএমের প্রবীণ নেতা বিনয় কোঙার। কিছু দিন ধরেই অসুস্থ হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কয়েক দিন আগে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল আইসিইউ-এ। ওই হাসপাতালেই রবিবার বিকালে মারা যান বিনয়বাবু। ঘটনাচক্রে, দাদা হরেকৃষ্ণবাবুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে গত মাসে রাজ্য সিপিএমের অনুষ্ঠানেই শেষ বার জনসমক্ষে বক্তৃতা করেছিলেন বিনয়বাবু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৭:০৩

কৃষক নেতা হরেকৃষ্ণ কোঙারের জন্মশতবর্ষ চলাকালীনই প্রয়াত হলেন তাঁর ভাই, সিপিএমের প্রবীণ নেতা বিনয় কোঙার। কিছু দিন ধরেই অসুস্থ হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কয়েক দিন আগে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল আইসিইউ-এ। ওই হাসপাতালেই রবিবার বিকালে মারা যান বিনয়বাবু। ঘটনাচক্রে, দাদা হরেকৃষ্ণবাবুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে গত মাসে রাজ্য সিপিএমের অনুষ্ঠানেই শেষ বার জনসমক্ষে বক্তৃতা করেছিলেন বিনয়বাবু।

বর্ধমানের মেমারির কোঙার পরিবার কমিউনিস্ট পার্টিতে সুপরিচিত। দাদা হরেকৃষ্ণের মতোই বিনয়বাবুর উত্থানও কৃষক আন্দোলন থেকে। সেই সূত্রেই তিনি সিপিএমের কৃষক সভার রাজ্য নেতা হয়েছিলেন, ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও। বয়সজনিত কারণে গত বার রাজ্য সম্মেলনের সময় তিনি সরে দাঁড়িয়েছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী থেকে। তবে দলের রাজ্য কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন, কেন্দ্রীয় কমিটিরও সদস্য ছিলেন। সিপিএম এ রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার সময়ে বর্ধমানের যে সব নেতার বিশেষ প্রভাব ছিল দলে, বিনয়বাবু ছিলেন তাঁর মধ্যে অন্যতম।

মেমারিতে বিনয়বাবুর পরিবারও সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর স্ত্রী এক সময় বিধায়ক হয়েছিলেন, ছেলেরাও আছেন সিপিএমে। বিনয়বাবু অবশ্য থাকতেন আলিমুদ্দিনে দলের রাজ্য দফতরেই। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বে বিনয়বাবুর কিছু বিতর্কিত মন্তব্য তাঁকে সংবাদ শিরোনামে এনে দিলেও জীবনযাত্রায় আদ্যন্ত কমিউনিস্ট হিসাবে এখনকার জমানাতেও তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গিয়েছেন, এ ভাবেই তাঁকে মনে রাখবে বাম রাজনীতি।

কংগ্রেস জমানায় বর্ধমানের সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডে নিরুপম সেনদের সঙ্গেই নাম জড়িয়েছিল বিনয়বাবুর। আদালতে অব্যাহতি পেলেও বিরোধীরা তাঁকে ওই অস্ত্রে বারেবারেই নিশানা করত। এর পরে বিনয়বাবু বড় বিতর্কে জড়ান সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে আন্দোলন চলাকালীন। সিঙ্গুরে তখন জমি অধিগ্রহণের প্রতিবাদ চলছে। সিঙ্গুরের জন্য প্রতিবাদকারী, সমাজকর্মী মেধা পাটকর নন্দীগ্রামে যাচ্ছেন শুনে কৃষক সভার তরফে বিনয়বাবুর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, সত্যিই তেমন হলে দলের মহিলা কমরেডরা মেধাকে পশ্চাদদেশ দেখাবেন! সেই সঙ্গেই তাঁর হুমকি ছিল, নন্দীগ্রামে বেশি প্রতিবাদ হলে চার দিক থেকে ঘিরে ধরে সেখানে ‘লাইফ হেল’ করে দেওয়া হবে! প্রভূত বিতর্ক বাধে তাঁর ওই মন্তব্যে। জমি আন্দোলনে বেকায়দায় থাকা সিপিএম ওই ধরনের মন্তব্যের জেরে আরও কোণঠাসাও হয়ে পড়ে।

আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের একফালি ঘরে নিতান্ত সাধারণ ভাবে থেকে গেলেও শরীরের কারণেই ইদানীং সক্রিয় রাজনীতি থেকে নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছিলেন বিনয়বাবু। হরেকৃষ্ণ শতবর্ষের অনুষ্ঠানের পরে পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এ যাত্রায় আর ফেরা হল না। সারদা-কাণ্ড নিয়ে আজ, সোমবার কলকাতায় মহামিছিল ডাকা রয়েছে বামফ্রন্টের সবক’টি গণসংগঠনের। তাই বিনয়বাবুর শেষকৃত্য আজই সম্পন্ন হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

binoy konar cpm death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy