রাজস্থানে বিজেপির সভায় মোদী। ছবি: পিটিআই।
রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় রবিবার বিজেপির সভায় তাঁর মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে। লোকসভা ভোটের আগে তিনি কৌশলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিশানা করে ‘ঘৃণাভাষণ’ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। সেই আবহেই এ বার মরুরাজ্যের আর এক লোকসভা কেন্দ্র টঙ্ক-সওয়াই মাধোপুরে গিয়ে মেরুকরণের ‘তাস’ খেলার অভিযোগ উঠল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার বিজেপির সমাবেশে মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেস শাসনে হনুমান চালিশা শোনাও অপরাধ। হনুমান জয়ন্তীতে আমার কিছু দিন আগেকার একটি কথা মনে পড়ছে। কংগ্রেস শাসিত কর্নাটকে এক ব্যবসায়ী তাঁর দোকানে বসে হনুমান চালিশা শুনছিলেন। আর সেই অপরাধে তাঁকে মেরে রক্তাক্ত করে দেওয়া হয়েছিল।’’ রাজস্থানের পূর্বতন কংগ্রেস শাসিত সরকার রামনবমীতে শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেছিল বলেও অভিযোগ করেন মোদী।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি হায়দরাবাদে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কোন শ্রেণির হাতে কত সম্পদ আছে তা আর্থ-সামাজিক সমীক্ষা করে দেখবে। সেই বক্তব্যকে টেনে এনে বাঁশওয়াড়ায় মোদী বলেছিলেন, ‘‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ অতীতে বলেছিলেন, দেশের সম্পদে সর্বাগ্রে অধিকার মুসলিমদের। সেই কারণেই সমীক্ষা করার পরিকল্পনা নিয়েছে কংগ্রেস। যাতে দেশবাসীর কষ্টার্জিত অর্থ মুসলিম ও অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া যায়।’’ এর পরে সোমবার উত্তরপ্রদেশের আলগড়ে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের নজর আপনার সম্পত্তির উপরে রয়েছে। ক্ষমতায় এলে এরা মা-বোনেদের মঙ্গলসূত্র ছিনিয়ে নেবে।’’
বিরোধী নেতাদের মতে, প্রথম দফায় প্রত্যাশিত ফল হয়নি বুঝেই দ্বিতীয় দফার ভোটপর্বের আগে থেকেই সরাসরি সাম্প্রদায়িকতার প্রচারে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী। হিন্দু মহিলাদের মধ্যে মুসলিম তথা কংগ্রেস সম্পর্কে আতঙ্ক তৈরি করার কৌশল নিয়েছেন। রবিবার বাঁশওয়াড়ায় সরাসরি ‘মুসলিম’ শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন। সোমবার আলিগড় কিংবা মঙ্গলবার টঙ্ক-সওয়াই মাধোপুরের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় ‘মুসলিম’ শব্দটি ঊহ্য রেখেছেন।
তবে ফের তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের মা-বোনেদের কাছে সোনা থাকে। যা তাঁদের স্ত্রী-ধন ও পবিত্র। এখন এদের নজর পড়েছে মঙ্গলসূত্রে।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মঙ্গলবার সভায় মোদীর হাতে দেখা গিয়েছে বজরংবলীর শক্তির প্রতীক গদা। মোদীর মন্তব্যের জবাবে রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোবিন্দ সিংহ বলেন, ‘‘কংগ্রেস কখনও মা-বোনেদের মঙ্গলসূত্রে নজর দেয়নি। বরং মোদীর জমানাতেই কোভিড পর্বে মা-বোনেরা তাঁদের মঙ্গলসূত্র বিক্রি করে পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে কালোবাজারে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে বাধ্য হয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy