Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

প্রথম দফার প্রচার শেষ হচ্ছে রামনবমীতে, ক্ষোভের চোরাস্রোত না রামমন্দির, প্রশ্ন ভোটবোধনের আগে

শুক্রবার প্রথম দফায় পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের আটটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। সঙ্গে হিন্দি বলয়ের রাজস্থানের একগুচ্ছ আসন, ছত্তীসগঢ়ের বস্তারে ভোটগ্রহণ হবে।

PM Narendra Modi.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:০১
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদীর আশা, রামনবমীকে ঘিরে নতুন করে রামমন্দিরের আবেগ তৈরি হবে। বিরোধী শিবিরের আশা, ‘আন্ডারকারেন্ট’— মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের চোরাস্রোত।

লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ১৯ এপ্রিল ২১টি রাজ্যের ১০২টি লোকসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ থেকে অসম, মহারাষ্ট্র থেকে মণিপুরের বিভিন্ন লোকসভা কেন্দ্রে শুক্রবার প্রথম দফায় ভোটগ্রহণ হবে। এই কেন্দ্রগুলিতে ভোটের প্রচার শেষ হচ্ছে আগামিকাল। একই দিনে রামনবমীও। তার ২৪ ঘণ্টা আগে মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি রামনবমীকে কেন্দ্র করে রামমন্দির ঘিরে আবেগ তৈরি করতে চাইছে। মোদী আজ বিহার, পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক জনসভায় মনে করিয়ে দিয়েছেন, বুধবার রামনবমী। এই প্রথম অযোধ্যায় রামমন্দিরে রামলালার দর্শন পাওয়া যাবে। রামমন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে গরহাজির থাকার জন্য বিরোধী জোটকে দুষেছেন তিনি।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

উল্টো দিকে কংগ্রেস তথা বিরোধী মঞ্চ ইন্ডিয়া মনে করছে, তেমন কোনও ‘হাওয়া’ এখনও তৈরি হয়নি। বিজেপি রামমন্দির ঘিরে ধর্মীয় ভাবাবেগ বা উগ্র দেশপ্রেমের আবহ তৈরি করতে পারেনি। বর‌ং মাঠে নামলে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ‘চোরাস্রোত’ টের পাওয়া যাচ্ছে। কারণ, মানুষ বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, রোজগার কমে যাওয়ার যন্ত্রণা টের পাচ্ছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে গত কয়েক দিন ধরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে চোরাস্রোতের কথা বলছেন। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা বলছেন, “এই ভোট মাছ-মাংস নিয়ে নয়। রুটিরুজি নিয়ে।”

বিরোধীদের যুক্তির প্রতিধ্বনি মহারাষ্ট্রের অমরাবতী থেকে বিজেপি প্রার্থী নবনীত রানার মুখে। তিনি বলেছেন, “এ বার মোদী হাওয়া নেই। জেতার জন্য কঠোর পরিশ্রম করবে হবে।” যা লুফে নিয়ে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের নেতারা বলেছেন, ‘আমরা তো এই কথাটাই বলে আসছি।’

মোদী আজ বিহারের জনসভা থেকে ফের এনডিএ-র চারশো পারের দাবি তুলেছেন। বলেছেন, “বিরোধী জোট প্রশ্ন তুলছে, চারশো পার কেন! দেশের জনতা ঠিক করেছে এ বার চারশো পার হবে। কারণ, দেশের মানুষ ২০৪৭-এ বিকশিত ভারত দেখতে চায়। এটা এনডিএ-কে ৪০০ পার করানোর নির্বাচন। এটা দেশ ধ্বংস করতে অভ্যস্ত লোকেদের শাস্তি দেওয়ারও নির্বাচন।”

কংগ্রেস নেতাদের দাবি, মোদী বিজেপির ৩৭০ আসন জয় ও এনডিএ-র ৪০০ আসন জয়ের কথা বলে ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে চাইছেন। তিনি চাইছেন, বিজেপি ৩৭০ আসন পাবে কি না, এনডিএ চারশো পার করবে কি না, লোকে সেটা নিয়ে আলোচনা করুক। বিজেপি সরকার গড়তে লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭২টি আসন পাবে কি না, সেটা গৌণ হয়ে যাক। সবাই যেন ধরে নেয়, মোদী তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেই গিয়েছেন। কত আসনে জিতে ক্ষমতায় আসছেন, সেটাই শুধু প্রশ্ন। রাজস্থানের কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌতের যুক্তি, “প্রধানমন্ত্রীর ৪০০ আসন জয়ের স্বপ্ন পূরণ হবে না। যে সব ভোটাররা কোনও দলের সমর্থক নন, তাঁদের প্রভাবিত করার জন্য মোদী ৪০০ পারের লক্ষ্যের কথা বলছেন। এ বছর যা কিছু হতে পারে।” ছত্তীসগঢ়ের কংগ্রেস নেতা ভূপেশ বঘেলেরও দাবি, বিজেপি কোনও আবহ তৈরি করতে ব্যর্থ। নির্বাচনে এর প্রভাব দেখা যাবে।

প্রশ্ন হল, মোদী সরকারের পক্ষে হাওয়া না উঠলেও তাদের বিরুদ্ধেও হাওয়া তৈরি হয়েছে কি? বিরোধীরা কি বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, ধনী-গরিবের অসাম্য নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে পেরেছে?

শুক্রবার প্রথম দফায় পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের আটটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। সঙ্গে হিন্দি বলয়ের রাজস্থানের একগুচ্ছ আসন, ছত্তীসগঢ়ের বস্তারে ভোটগ্রহণ হবে। উত্তরপ্রদেশে এসপি-কংগ্রেস একজোট হয়ে লড়লেও যৌথ জনসভাই করতে পারেনি। বুধবার রাহুল গান্ধী ও অখিলেশ যাদব গাজিয়াবাদে সাংবাদিক বৈঠক করবেন। তার আগে বিহারে আজ মোদী বলেছেন, “অহঙ্কারী জোটের লোকেদের রামমন্দির নিয়ে আপত্তি। একটি সম্প্রদায়ের তোষণের জন্য এঁরা প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন।” বিরোধীদের বিরুদ্ধে সনাতন হিন্দু ধর্মকে অপমানের অভিযোগ তুলে মোদী বলেছেন, যাঁরা সনাতনকে গালিগালাজ করছেন, তাঁরা শুনে নিন, দেশের সংবিধান তৈরির জন্য গণপরিষদের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ সদস্য সনাতনী ছিলেন।

বিরোধীদের দাবি, তাঁর সরকারের পক্ষে কোনও হাওয়া নেই বলেই মোদী বার বার রামমন্দিরের প্রসঙ্গ তুলছেন। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি আজ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারকে চিঠি লিখে মোদীর বিরুদ্ধে ভোটের প্রচারে রামমন্দিরের প্রসঙ্গ তোলা নিয়ে অভিযোগ জানান। তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলের প্রশ্ন, নির্বাচন কমিশন বলেছিল ধর্মকে প্রচারে ব্যবহার করা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মোদী ও বিজেপি আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE