ভোটের প্রচার করতে রক্তাক্ত হলেন বিজেপির এক মহিলা মণ্ডল সভাপতি। ছবি: সংগৃহীত।
ভোটের প্রচার করতে রক্তাক্ত হলেন বিজেপির এক মহিলা মণ্ডল সভাপতি, সঙ্গে আহত হয়েছেন বেশ কিছু বিজেপি কর্মীও। সেই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা এলাকার কসবা বিধানসভা এলাকার আনন্দপুরে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিজেপির ওই এলাকার মণ্ডল সভাপতি সরস্বতী সরকার শনিবার রাতে কয়েক জন বিজেপি কর্মীকে নিয়ে আরবান কমপ্লেক্সের কাছের পূর্বপাড়ায় দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরীর সমর্থনে পোস্টার লাগাচ্ছিলেন। এমন সময় তাঁদের ওপর চড়াও হয় কয়েক জন দুষ্কৃতী। বিজেপির অভিযোগ, মণ্ডল সভাপতি-সহ তিন জন বিজেপি কর্মী ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন। অভিযোগ, চপার দিয়ে মাথায় আঘাত করায় মাথা ফেটে রক্তাক্ত হন সরস্বতী। রাতেই খবর দেওয়া হয় জেলা সভাপতি অনুপম ভট্টাচার্য ও প্রার্থী দেবশ্রীকে। দ্রুত আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শুশ্রূষা করার পর ভোরবেলায় আনন্দপুর থানায় অভিযোগ জানাতে যান বিজেপি কর্মীরা। এ ক্ষেত্রে অভিযোগ, প্রথমে আনন্দপুর থানা তাদের অভিযোগ নিতে করতে চায়নি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাপ দেওয়া হলে থানার তরফে অভিযোগ নেওয়া হয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি আনন্দপুর থানার পুলিশ। সকালেই আক্রান্ত মণ্ডল সভাপতির উত্তর পঞ্চান্নর বাড়িতে যান দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি প্রার্থী। প্রার্থী দেবশ্রীকে নিয়ে কর্মী-সমর্থকেরা আনন্দপুর থানায় ধর্নায়ও বসেন।
এ প্রসঙ্গে বিজেপির দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভাপতি অনুপম বলেন, ‘‘দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূলের গড় হলেও এ বারের ভোটে সেই গড় নড়ে যাবে। আমাদের প্রার্থী এবং কর্মীরা ভোটপ্রচারে নেমে যে ভাবে সাড়া পাচ্ছেন, তাতে ভয় পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল। সেই ভয় থেকেই আমাদের মণ্ডল সভাপতি ও কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা ১০ নম্বর বোরোর চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষের নির্দেশে বিজেপির মহিলা মণ্ডল সভাপতি-সহ কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। এলাকার প্রভাবশালী নেতা বলেই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না আনন্দপুর থানার পুলিশ।’’
অভিযোগের জবাবে তৃণমূল নেতা সুশান্ত বলেন, ‘‘আমরা যত দূর জানি ঘটনাটি ঘটেছে রাত সাড়ে ১১টার পর। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী এত রাতে ভোটের প্রচারের কাজ করা যায় না। তা-ও আমি বলব, যা হয়েছে অন্যায় হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগাযোগ নেই। আমি খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি, ওই এলাকার বস্তিবাসীদের সঙ্গে বিজেপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এই সংঘর্ষে তৃণমূলের যুক্ত থাকার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ঘটনায় যে বা যারা যুক্ত, আমরা তাদের শাস্তির দাবি করছি। দলমত নির্বিশেষে পুলিশ-প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক, আমরা সেই দাবি রাখছি। তবে বিজেপি যে ভাবে তৃণমূল নেতৃত্বকে ঘটনার জন্য দায়ী করছে, তার কোনও সত্যতা নেই।” প্রসঙ্গত, এখনও প্রায় এক মাস বাকি দক্ষিণ কলকাতার নির্বাচনের। ১ জুন এই লোকসভার ভোট। কিন্তু এ সবের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ শুরু হয়ে গিয়েছে বিজেপি ও তৃণমূলের অন্দরে। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের তরফে প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী সাংসদ সদস্য মালা রায়। তাঁর সঙ্গে লড়াই বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রীর। সিপিএম প্রার্থী সায়রা হালিম শাহ এই ভোটযুদ্ধে থাকলেও, মূলত লড়াই দেবশ্রী বনাম মালার। যার উত্তাপ লক্ষ্য করা গিয়েছে, কসবা বিধানসভায় এলাকায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy