Advertisement
১১ মে ২০২৪
Baguiati

বাগুইআটিতে তৃণমূল কর্মী খুন! গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের? পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ স্থানীয়দের, আটক ১৩

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে খুনের ঘটনা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন স্থানীয়েরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে র‌্যাফ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৪২
Share: Save:

তৃণমূল কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল এ বার খাস কলকাতায়। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে খুনের ঘটনা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন স্থানীয়েরা।

ঘটনাটি ঘটেছে বাগুইআটির অর্জুনপুর এলাকার পশ্চিমপাড়ায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, শনিবার রাতে ওই এলাকায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। দু’পক্ষই একে অপরের দিকে ইট ছুড়তে থাকে। মারামারিও বাধে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বাগুইআটি থানার পুলিশ। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে পুলিশ চলে যেতেই আবার গন্ডগোল শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে।

অভিযোগ, এক গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীর এলাকায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করে দেয়। তার পরই আবারও দু’গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। প্রথমে বচসা, সেখান থেকেই হাতাহাতি। সেই ঝামেলার মধ্যেই ইটের আঘাতে মাথায় চোট পান সঞ্জীব দাস ওরফে পটলা। রাস্তায় পড়ে যান তিনি। তাঁর বাকি সঙ্গীরা পালিয়ে গেলেও সঞ্জীবকে ধরে ফেলেন বিপক্ষ গোষ্ঠীর লোকেরা। তার পর তাঁকে কিল-চড়-লাথি-ঘুষি মারা হয় বলেও অভিযোগ। এমনকি, লাঠি দিয়েও পেটানো হয়েছে বলে দাবি সঞ্জীবের পরিবারের।

মারধরের পর সঞ্জীবকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যান অভিযুক্তেরা। আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার গভীর রাতে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় ওই তৃণমূল কর্মীর।

সঞ্জীবের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছতেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয়েরা পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে পথ অবরোধ করেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পুলিশকে ঘিরেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়েরা। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে এলাকায় র‌্যাফ নামাতে হয়।

স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, এলাকায় প্রায়ই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা হত। বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলর তথা বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবরাজ চক্রবর্তীকে জানানো হয়েছে বার বার। কিন্তু তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি। স্থানীয়দের দাবি, শনিবার রাতেও ঘটনার সময় তাঁকে ফোন করা হয় কিন্তু তিনি উত্তর দেননি। পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে সঞ্জীবকে।

রবিবার সকালেও এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। ঘটনাস্থলে এসেছেন দেবরাজ। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। দেবরাজের কথায়, ‘‘শনিবার রাতে প্রথমে যখন অশান্তির খবর পাই, তখন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। তবে মাঝরাতে আবার যখন নতুন করে গন্ডগোল হয়, তখন আমায় ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু ফোনটা সাইলেন্ট থাকায় শুনতে পাইনি। সকালেই এলাকায় এসেছি। মৃত সঞ্জীব আমার খুব কাছের এক জন ছিলেন। যাঁরা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের সকলের শাস্তি হবে। স্বজনহারারদের কষ্ট নিয়ে কোনও রাজনীতি হয় না। পুলিশ তদন্ত করছে।’’ এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, কারা এই খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের খোঁজ চলছে। কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃত সঞ্জীবেরও নামও পুলিশের খাতায় ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Baguiati TMC Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE