মহুয়া মৈত্র।
অনুব্রত মণ্ডলের ‘নকুলদানা’, ‘গুড়-বাতাসা’ আর ‘চড়াম চড়াম’-এর পর এ বার শোনা গেল নতুন দাওয়াই— ‘নিমপাতা’!
বিরোধীদের দাবি, সম্প্রতি উত্তর নদিয়ার একটি কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র কর্মীদের বলেছেন যে ভোট করতে গিয়ে যেখানে ‘মধু’ দেওয়ার সেখানে মধু আর যেখানে ‘নিমপাতা’ দেওয়ার সেখানে নিমপাতা দিতে হবে। এবং সে ক্ষেত্রে প্রশাসন তাঁদের পূর্ণ সমর্থন জোগাবে।
শুধু কথার কথা নয়, মঙ্গলবার একটি অডিয়ো ক্লিপও সামনে এসেছে (আনন্দবাজার তার সত্যতা যাচাই করেনি) যেখানে তৃণমূলের কৃষ্ণনগর জেলা সভানেত্রী মহুয়াকে ‘মধু’ ও ‘নিমপাতা’ ব্যবহারের পরামর্শ দিতে শোনা যাচ্ছে। একশো শতাংশ প্রশাসনিক ‘ব্যাকআপ’ পাওয়া যাবে বলেও সেখানে জানানো হচ্ছে। প্রত্যাশিত ভাবেই, তা নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব বিষয়টি এড়িয়ে যাওযার চেষ্টা করছেন।
‘ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন’ বিতর্কের জেরে সংসদ থেকে বহিষ্কৃত মহুয়ার উপরে আস্থা রেখে তাঁকে ফের প্রার্থী করা হবে নদিয়ায় এসে ঘোষণা করে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে দল এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী ঘোষণা না করলেও মহুয়াই ফের কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে প্রার্থী হচ্ছেন ধরে নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে জেলা তৃণমূল। মহুয়া বিভিন্ন এলাকায় কর্মিসভাও করছেন। প্রকাশ্যে আসা ওই অডিয়ো ক্লিপে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘যে করেই হোক বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ভোটটা এ বার করতে হবে। এ বার কিন্তু যেখানে মধু দিয়ে, যেখানে নিমপাতা দিয়ে ভোটটা করতে হবে। সিম্পল কথা। প্রশাসনিক ব্যাকআপ আপনারা হান্ড্রেট পারসেন্ট পাবেন। এই কথা আমি দিয়ে যাচ্ছি।’
সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস বলেন, “অডিয়ো ক্লিপে যা শোনা যাচ্ছে তাতে তো ভোটের আগে পরিবেশ অশান্ত করতে চাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট। তৃণমূলের অবস্থা এতটাই করুণ যে প্রশাসনের সাহায্যে দাওয়াই দেওয়ার কথা বলতে হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনকে বলব বিষয়ট গুরুত্ব দিয়ে দেখতে।” বিজেপির কিসান মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকারের কটাক্ষ, “সংসদ থেকে বহিষ্কৃত হয়েও ওঁর শিক্ষা হয়নি। নিমপাতা বলতে উনি কী বোঝাতে চাইছেন সেটা সকলেই পরিষ্কার বুঝতে পারছে। উনি তো আসলে লেডি অনুব্রত!”
মহুয়া মৈত্রকে যথারীতি চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে পাঠানো বার্তারও তিনি উত্তর দেননি। তবে তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমানের দাবি, “এমন কোন অডিয়ো ক্লিপের কথা আমাদের জানা নেই। যদি তেমন কিছু আমার কাছে আসে তা হলে বিষয়টি নিয়ে মহুয়ার সঙ্গে কথা বলব।” আর, জেলা প্রশাসনের ‘ব্যাকআপ’ প্রসঙ্গে নদিয়ার জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy