Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

ভোটে অশান্তি নিয়ে আশঙ্কায় বাসন্তীর মানুষ

ভোটারদের আশ্বাস দিতে মাসখানেক আগেই বাসন্তীতে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। এলাকায় ঘুরে মানুষকে অভয় দিচ্ছেন তাঁরা। তবে ভোটে গোলমালের সাক্ষী থাকা বাসন্তীর মানুষের আশঙ্কা কাটছে না।

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

প্রসেনজিৎ সাহা
বাসন্তী শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:২৩
Share: Save:

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাসন্তী বিধানসভার বিভিন্ন প্রান্ত। ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছিল আনিসুর ওস্তাগার নামে এক ভোটারের। ঘটনার পর বছর ঘুরেছে। সামনে আরও একটা ভোট। এ বার শান্তিতে ভোট দিতে পারবেন কি না, সেই প্রশ্নই ঘুরছে মানুষের মনে।

ভোটারদের আশ্বাস দিতে মাসখানেক আগেই বাসন্তীতে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। এলাকায় ঘুরে মানুষকে অভয় দিচ্ছেন তাঁরা। তবে ভোটে গোলমালের সাক্ষী থাকা বাসন্তীর মানুষের আশঙ্কা কাটছে না। নিতাই সর্দার, রুহুল আমিন মোল্লার মতো মানুষজন বলেন, “ভোট এলেই বাসন্তী অশান্ত হয়ে ওঠে। বোমা-গুলির লড়াই হয়। মৃত্যু ঘটে। বিগত বহু নির্বাচনে অশান্তি হয়েছে।” রমজান পিয়াদা, অচিন্ত্য মণ্ডলদের দাবি, “বাহিনী যতই আশ্বাস দিক, শান্তিতে ভোট দিতে পারব কি না বলা মুশকিল।” নির্বাচন কমিশন অবশ্য শান্তিপূর্ণ ভোটের আশ্বাস দিয়েছে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

রাজনীতির কারবারিদের দাবি, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে বাসন্তীর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনেকটাই বদলেছে। এক সময়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর তীব্র সংঘাত ছিল এলাকায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে যুব গোষ্ঠী কার্যত পিছু হটেছে। তৃণমূল নেতা রাজা গাজিই বর্তমানে বিধানসভা কেন্দ্র জুড়ে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গোষ্ঠীকোন্দল সে ভাবে চোখে পড়ছে না। এর মধ্যে অবশ্য শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি। ঝড়খালি, নফরগঞ্জ, ভরতগত, উত্তর মোকামবেড়িয়ায় মতো এলাকায় বিজেপির সংগঠন বেড়েছে। ফলে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল না থাকলেও লোকসভা ভোটে রাজনৈতিক টক্কর কিছু কম হবে না, মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

ইতিমধ্যে বিরোধীদের উপরে হামলার একাধিক অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সভায় গিয়ে রাজা গাজির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অবিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

বিজেপির জয়নগর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সর্দার বলেন, “বাসন্তীতে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা হচ্ছে, দেওয়াল লিখতে দিচ্ছে না। এ বার ওদের হার নিশ্চিত ভেবে শাসকের অত্যাচারের পরিমাণ আরও বেড়েছে।” তৃণমূল বিধায়ক শ্যামল মণ্ডলের আবার দাবি, “বিরোধীদের তেমন কোনও সংগঠনই নেই এলাকায়। আর তৃণমূলের উন্নয়নে এখানকার মানুষ যথেষ্ট খুশি। পায়ের তলায় মাটি পাচ্ছেন না বলেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।” রাজা বলেন, “বাসন্তীতে তৃণমূলের ভূত দেখছেন শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে বিজেপির সমস্ত নেতা।”

এ বার জয়নগর লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন প্রতিমা মণ্ডল। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী অশোক কান্ডারী। দু’জনেই জোরকদমে প্রচার শুরু করেছেন এলাকায়। আইএসএফ, এসইউসিও প্রার্থী দিয়েছে।

অশোক বলেন, “সন্ত্রাসের রাজত্ব চলছে বাসন্তী জুড়ে। কর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। দেওয়াল লিখনে বাধা দিচ্ছে।” অভিযোগ মানতে চাননি প্রতিমা। তাঁর দাবি, “তৃণমূলের শক্তিশালী সংগঠন দেখে ভয় পেয়েছে বিজেপি। মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নকে সামনে রেখে ভোট দেবেন বলেই আমরা আশাবাদী।”

বাম-কংগ্রেসের তরফে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। ২০১১ সালে রাজ্য জুড়ে পালাবদল হলেও বাসন্তীতে জিতেছিলেন আরএসপি প্রার্থী সুভাষ নস্কর। তবে ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে জেতেন গোবিন্দ নস্কর। সেই থেকেই বামেদের ক্রমাগত শক্তিক্ষয় হয়েছে বাসন্তীতে। কংগ্রেসেরও তেমন সংগঠন নেই এলাকায়। বাসন্তীর প্রাক্তন বিধায়ক তথা আরএসপি নেতা সুভাষ নস্কর বলেন, “মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন, সে দিকে কমিশনের নজর দেওয়া উচিত। শীঘ্রই আমাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। মানুষ ভোট দিতে পারলে আমরাই জিতব।”

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE