শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
সাম্প্রতিক কালে বেশ কয়েক বার বঙ্গে শোরগোল ফেলেছে শুভেন্দু অধিকারীর ‘তারিখ-রাজনীতি’। বিরোধী দলনেতার দেওয়া তারিখে কী ঘটবে, তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বিভিন্ন সময়েই আলোচনা হয়েছে। লোকসভা ভোটের আবহে সেই শুভেন্দুই এ বার দাবি করলেন, সামনের সপ্তাহে ‘বোমা’ পড়তে চলেছে! এ বার কোনও তারিখ না জানালেও বিরোধী দলনেতা দাবি করলেন, আগামী সপ্তাহের ‘বোমা’য় ‘বেসামাল’ হয়ে যাবে তৃণমূল। এ নিয়ে শুভেন্দুকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, বিজেপিই বেসামাল হয়ে আছে। তৃণমূল যে যে বিষয়ে সরব হয়ে ভোট-ময়দানে নেমেছে, তার ভিত্তিতেই ভোট হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে।
রাজ্য রাজনীতিতে বছর দুয়েক আগেই ‘তারিখের রাজনীতি’ নিয়ে এসেছিলেন শুভেন্দু। যার সূত্রপাত হয় ২০২২ সালের শেষের দিকে। সেই সময় মোট তিনটি তারিখ দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা— ১২, ১৪ এবং ২১ ডিসেম্বর। তখন সদ্য গুজরাতে বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণা হয়েছে। বিজেপির জয়ে ‘উচ্ছ্বসিত’ শুভেন্দু ডিসেম্বরে পশ্চিমবঙ্গেও ‘ধামাকা’ হবে বলে ইঙ্গিত দেন। যা নিয়ে তাঁর দলের মধ্যেও কৌতূহল তৈরি হয়। কিন্তু রাজনীতিতে কোনও তরঙ্গ না তুলেই সেই সব তারিখ পার হয়ে যায়। বিজেপির জন্য ওই তিনটি তারিখে ‘লাভজনক’ কিছু না ঘটায় দলের অনেকে ‘বিরক্ত’ও হন বলে খবর বিজেপি সূত্রে।
ঘটনাচক্রে, ১৪ ডিসেম্বর আসানসোলে শুভেন্দুরই ‘বিজেপির কম্বল বিতরণ কর্মসূচি’তে কম্বল নেওয়ার সময় পদপিষ্ট হয়ে মারা যান ৩ জন। তা নিয়ে বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণও করেছিল তৃণমূল। পরের ২১ ডিসেম্বরে খারাপ কিছু ঘটবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে অবশ্য শুভেন্দু নিজেই তারিখ-রহস্য শেষ করেন। তিনি জানান, নিয়োগ দুর্নীতিতে শাসকদলের নেতাদের নাম জড়ানো, তাঁদের জেলযাত্রার সম্ভাবনার কথাই বলেছিলেন।
এর পরেও সেই ভাবে তারিখের কথা না-বললেও ‘সময়’ বেঁধে দিয়ে তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গিয়েছে। গত বছরই যেমন শেষের দিকে শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, ডিসেম্বরে বীরভূমের তৃণমূল নেতাদের জন্য ভয়াবহ হবে। যদি ওই সময়ে সেই অর্থে বড় কিছু ঘটেনি বীরভূমে। শনিবার দক্ষিণ মালদহের ইংরেজবাজারে বিরোধী দলনেতা বললেন, ‘‘কাল রবিবার। আগামী সপ্তাহ শুরু হতে চলেছে। আপনারা দেখবেন। আমি বলব না বিস্তারিত। আগামী সপ্তাহের শুরুতে এমন একটা বোমা পড়বে, তৃণমূল বেসামাল হয়ে যাবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূল কূলকিনারা পাবে না। সেই ব্যবস্থার দিকেই যাচ্ছে। আপনারা অপেক্ষা করুন।’’
শুভেন্দুর এই মন্তব্য নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল। কুণাল বলেন, ‘‘তৃণমূল বেসামাল হওয়ার কোনও জায়গায় নেই। বিজেপি বেসামাল হয়ে আছে। এক দিকে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের মডেল এবং লক্ষ্মীর ভান্ডার— এর ভিত্তিতেই ভোট হচ্ছে।’’
মালদহের সভা থেকে বিরোধী দলনেতা জানান, আগামী ২৩ এপ্রিল ইংরেজবাজারে সভা করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুভেন্দু নিজেও ৫ মে পুরনো মালদহে রোড শো করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy