Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

বোমায় নষ্ট হাত-দৃষ্টি, নেই প্রকল্প বা ভোট কিছুই

বছর দশেক বয়স হবে তখন ঝুম্পার। বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলতে গিয়ে দু’টো হাত উড়ে গিয়েছিল তাঁর। চোখও নষ্ট হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে সরকারি কোনও পরিচয়পত্র তৈরিই হয়নি তাঁর।

প্রতি দিনই এমন লড়াই চলে ঝুম্পা বারুইয়ের। নিজস্ব চিত্র।

প্রতি দিনই এমন লড়াই চলে ঝুম্পা বারুইয়ের। নিজস্ব চিত্র।

নবেন্দু ঘোষ 
হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:২৪
Share: Save:

বয়স তেইশ হলেও কখনও ভোটকেন্দ্রে ঢোকা হয়নি ঝুম্পা বারুইয়ের। তাঁর না আছে ভোটার কার্ড, না আধার বা প্যান কার্ড। না তো দেখতে পান চোখে, না হাত দু’টো কর্মক্ষম।

বছর দশেক বয়স হবে তখন ঝুম্পার। বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলতে গিয়ে দু’টো হাত উড়ে গিয়েছিল তাঁর। চোখও নষ্ট হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে সরকারি কোনও পরিচয়পত্র তৈরিই হয়নি তাঁর। ফলে কোনও সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাননি। ভোট এলে নেতানেত্রীরা তাঁর দুয়ারের আশপাশ দিয়ে ঘুরে গেলেও ঝুম্পার সঙ্গে তাঁদের কখনও সাক্ষাৎ হয় না।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের মাখালগাছা পঞ্চায়েতের পশ্চিম আবাদ কুলিয়াডাঙায় দাদা-বৌদির সংসারে থাকেন ঝুম্পা। তিনি জানান, বছর দশেক আগে এক দুপুরে গ্রামের কয়েক জন ছেলেমেয়ের সঙ্গে খেলছিলেন। গোলাকার একটা বস্তু দেখে বল মনে হয়েছিল। সেটি বাড়ি নিয়ে আসেন। খেলাচ্ছলেই ছুড়েও দেন। তার পরেই প্রবল বিস্ফোরণ। বদলে যায় ঝুম্পার জীবনটাই।

কলকাতার সরকারি হাসপাতালে ঝুম্পার চিকিৎসা চলেছিল দীর্ঘ দিন। কিন্তু প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে হাত দু’টো কব্জির উপর থেকে বাদ দিতে হয়েছিল। দৃষ্টিশক্তিও চলে যায়। বাবা-মা মারা গিয়েছেন। ঝুম্পার দাদা বাপ্পা ঠিকা শ্রমিকের কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘বোনের আধার কার্ড না থাকায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হয়নি, প্রতিবন্ধী শংসাপত্র থাকলেও রাজ্য সরকারের মানবিক ভাতা প্রকল্পের সুবিধা এখনও পায়নি।’’ ঝুম্পার কথায়, ‘‘দেখতে পাই না ভাল করে, এখন মানুষ দেখে চিনতেও পারি না। হাত না থাকায় ঠিক মতো খাবারও খেতে পারি না। দেশের নাগরিক হয়েও ভোট দিতে পারি না। সরকারি প্রকল্পগুলিও যদি পেতাম, বড় উপকার হত।’’

মাখালগাছা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রামকৃষ্ণ বারুই খোঁজ-খবর রাখেন প্রতিবন্ধী তরুণীর। প্রতি মাসে পঞ্চায়েতের তরফে ১২ কেজি চাল দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে পরিবারটিকে। রামকৃষ্ণ বলেন, ‘‘হাসনাবাদের বিডিওর সঙ্গে কথা বলে ঝুম্পার আধার কার্ড করানোর চেষ্টা শুরু করেছি। পঞ্চায়েতের তরফে কিছু টাকা চাঁদা তুলছি, যাতে ওঁর চোখের চিকিৎসা করানো যায়।’’ বারাসতের একটি চোখের হাসপাতালের সঙ্গে সম্প্রতি যোগাযোগ হয়েছে ঝুম্পার। তাঁরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার করলে এখনও খানিকটা দৃষ্টি ফিরতে পারে তরুণীর। তার খরচ বিপুল। যদি কোনও জায়গা থেকে কোনও সাহায্য মেলে, অপেক্ষায় আছেন তরুণী।

হাসনাবাদের বিডিও অলিম্পিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আঙুল ও চোখের রেটিনা না থাকায় আধার কার্ড করতে সমস্যা হচ্ছে ওঁর। তবুও কী করা যায় দেখছি। আধার কার্ড না থাকলে বিকলাঙ্গ ভাতার ব্যবস্থাকরা কঠিন।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Hasnabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE