Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
WB School Teachers' Promotion

থমকে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের পদোন্নতি, অপেক্ষা শিক্ষা দফতরের অনুমতির

২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সুপারিশ করতে বলা হয়, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কী পর্যায়ে সেই সুপারিশ রয়েছে তা পরিষ্কার করা হয়নি শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৫০
Share: Save:

থমকে সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষকদের পদোন্নতি। লোকসভা ভোটের আগে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় হতাশ শিক্ষক মহল। নির্দিষ্ট সময়সীমার সাড়ে পাঁচ মাস পার হওয়ার পরও কেন হল না সুরাহা— প্রশ্ন শিক্ষক সংগঠনগুলির।

পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্রের বক্তব্য, ‘‘পদোন্নতি নিয়ে সরকারের কতটা সদিচ্ছা রয়েছে তা এখন প্রশ্নের মুখে। তা না হলে একটা সিদ্ধান্ত নিতে এত সময় কেন লাগছে। শিক্ষকদের আশার আলো দেখিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে।’’

রাজ্যের শিক্ষা নীতি ২০২৩ অনুযায়ী স্কুল স্তরে সব শিক্ষক-শিক্ষিকার পদোন্নতি খতিয়ে দেখতে ছ’সদস্যের কমিটি গড়েছিল স্কুলশিক্ষা দফতর। ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি ও দেওয়া হয় শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল শিক্ষার গুণমান মেধা এবং দায়বদ্ধতা দেখে কমিটি একাডেমিক পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটরের (এপিআই) মাধ্যমে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের পদোন্নতির সুপারিশ করবে। ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সুপারিশ করতে বলা হয়, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কী পর্যায়ে সেই সুপারিশ রয়েছে তা পরিষ্কার করা হয়নি শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে। যদিও কমিটির সদস্যদের বক্তব্য, তাঁরা নিজেদের মধ্যে এই বিষয়গুলি নিয়ে বৈঠক সম্পন্ন করেছে এবং শিক্ষা দফতরের কাছে তাদের সুপারিশও জমা দিয়েছে। এর পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কথা শিক্ষা দফতরের।

কমিটির সদস্য এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কমিটির তরফ থেকে একাধিক বার বৈঠক হয়েছে এবং প্রাথমিক খসড়া পত্র তৈরি করে শিক্ষা দফতরের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। সরকারের বিবেচনার মধ্যে বিষয়টি রয়েছে।’’

প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ধাঁচে স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কেরিয়ার অ্যাসেসমেন্ট সেল (ক্যাশ) গঠন করে পদোন্নতির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এত দিন স্কুল স্তরে কোনও শিক্ষক যখন নিযুক্ত হন এবং অবসর নেন তাঁর কোনও পদোন্নতি হত না। অর্থাৎ, নিযুক্ত হওয়ার সময় যদি সহকারী শিক্ষক থাকেন তা হলে অবসরও ওই একই পদেই হয়ে থাকে। এই নয়া নীতি চালু হলে এপিআই-র মাধ্যমে শিক্ষকদের পারফরমেন্সের উপর পদোন্নতির হবে। এর ফলে শিক্ষকদের পদোন্নতির পাশাপাশি আর্থিক সুবিধাও বৃদ্ধি পাবে। এর পাশাপাশি, রাজ্য স্তরে স্কুলগুলিতে ‘র‍্যাঙ্কিং সিস্টেম’ চালু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই খসড়াও জমা দেওয়া হয়েছে শিক্ষা দফতরের কাছে।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেছেন, ‘‘আমরা যথা সময়ে শিক্ষকদের পদোন্নতি সংক্রান্ত দাবি কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলাম। শিক্ষাকর্মীদের পদন্নতির আওতায় নিয়ে আসার দাবিও জানানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল আর্থিক সুবিধা ছাড়া প্রমোশন মূল্যহীন। সরকার হয়তো প্রমোশনের বিষয় নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না। তবে, এর ফলে যে শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে সেটা হয়তো আন্দাজ করতে পারছে না সরকার।’’

শিক্ষা দফতর সুত্রে, সরকার পোষিত স্কুলের সঙ্গে বেসরকারি স্কুল গুলির শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে থাকা বৈষম্য (বেতনগত) অনেকটাই দূর হবে। পাশাপাশি, এপিআই থাকার দরুণ শিক্ষকদের গুণগত মানও আরও উন্নত হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Department Teacher Promotion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE