কাঁচা হলুদ রঙের লখনউ চিকনের শাড়িটা যে দিন মা কিনে দিয়েছিল সে দিন থেকেই ঠিক করে নিয়েছি, ওটা পরেই এ বার অঞ্জলি দেব। হালকা সোনার গয়না, আলগা একটা খোঁপায় চোখ বুজলেই অষ্টমীর সকালটা যেন দেখতে পাচ্ছি। আর পাশে তো ও থাকবেই…। না। ‘ওর’ গল্প একটু পরেই বলছি আপনাদের। সে গল্প এক বার শুরু করলে তো সাজুগুজু নিয়ে আর আড্ডা হবে না। একগাদা শাড়ি রয়েছে আমার ওয়ার্ড্রোবে। পুজোতে নতুনও হয়েছে অনেকগুলো। শুটিংয়ের জন্য শাড়ি তো পরতেই হয়। তাই পুজোতে শাড়ি পরাটা নতুন নয়। তবে এ বারের পুজোটা একটু আলাদা। একটু স্পেশাল। কেন জানেন? কারণ আমার জীবনের বিশেষ মানুষ। অর্জুন। অর্জুন দেব। গুয়াহাটিতে বাড়ি ওদের। সিলেটি। শুঁটকি মাছ খায়। আবার সুশিও ভালবাসে। আমি ভীষণ লাকি টু হ্যাভ ফাউন্ড অর্জুন। সে কারণেই এ বছরের পুজোটা বেশ স্পেশাল। ওদের বাড়ি থেকে আমাকে দারুণ গিফট দিয়েছে। মেখলা আর অসম সিল্ক। লাল-কালো কম্বিনেশনের অসম সিল্কটা আমার দারুণ লেগেছে। কবে ওটা পরব ঠিক করিনি। তবে পুজোতে যে কোনও এক দিন হালকা গয়না দিয়ে পরব শাড়িটা। জানেন তো, ভালবাসার মানুষের দেওয়া উপহার যাই হোক না কেন আপনাকে সুন্দর দেখাবেই! তবে আমার কিচ্ছু কেনা হয়নি এখনও। কখন শপিং করব বলুন তো? শুটিংয়ের চাপে একদম সময় পাচ্ছি না।ষষ্ঠী থেকে দশমী কলকাতায় থাকব বলে এখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজ শেষ করছি। বাবা, মা আর ভাইয়ের জন্য কিছু তো কিনতেই হবে। মা হয়তো কিছু বলবে না, কিন্তু ভাই কিছুতেই ছাড়বে না। আমি অতটা ফ্যাশন সচেতন নই। জামাকাপড় পরাটা আমার মুডের ওপর ডিপেন্ড করে। পুজোর সকালে হয়তো টাঙ্গাইল, ঢাকাইয়ের মতো হালকা শাড়ি পরব। অনেক প্যান্ডেলের উদ্বোধন রয়েছে, অনেক জায়গায় বিচারক হিসাবেও যাব— তাই পুজোর সকালে কুর্তা-পালাজো বা কুর্তা-লংস্কার্টও পরতে পারি। বন্ধুরা একটা দারুণ অ্যাপ্লিকের শাড়ি দিয়েছে। সেটাও পরব এক দিন। তবে রাতের জন্য কাঞ্জিভরম বা তসর আমার পছন্দের। লাল, কালো, সাদা আর ভাইব্র্যান্ট পিঙ্ক আমার এ বার পুজোর রং। তবে কোনও ডিজাইনার শাড়ি নয়, বচ্ছরকার দিনে ট্র্যাডিশনাল শাড়িতেই সাজব। এমনিতে রূপোর গয়না, বিড্স বা ট্রাইবাল কস্টিউম জুয়েলারি আমার ভাল লাগে। তবে হিরে বা সোনাও পরি। সবটাই নির্ভর করে কেমন শাড়ি পরছি তার ওপর। এখন তো শেয়ার করে শাড়ি পরাই হয় না। মানে ছোটবেলায় পিসির মেয়েদের সঙ্গে জামাকাপড় এক্সচেঞ্জ করে পরতাম। খুব মজা হত। আর ছিল ‘ভূত ভূত’ খেলা। জানেন তো খেলাটা কেমন? কাইন্ড অফ ডার্ক রুম বলতে পারেন। তা ছাড়া ক্যারম, ব্যাডমিন্টন, চাইনিজ চেকার তো ছিলই। দেখেছেন তো! চাইনিজ বলেছি আর খাবার কথা মনে পড়ে গেল। আমি কিন্তু খুব ফুডি। আপনারা হয়তো ভাবছেন আমি সত্যি বলছি না। তা কিন্তু নয়। আমি খেতে দারুণ ভালবাসি। আবার ওয়ার্কআউটও করি। আর পুজোতে তো স্ট্রিট ফুড মাস্ট। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতে ফুচকা খেয়েই হয়তো ডিনার হয়ে যাবে। ছোটবেলার কথা উঠলেই মন কেমন করে। তবে তখনকার আর এখনকার পুজোর মধ্যে যে কোনও একটা বেছে নিতে বললে আমি পারব না। কারণ, দু’টো দু’রকম। আর দু’টোই ভাল। শুধু একটা জিনিস ভীষণ মিস করি। নাগরদোলা। এখনও সঙ্গী পেলে উঠে পড়ব। অর্জুন রাজি হবে কিনা জানি না। তবে ওই অত উঁচু থেকে ঘোরাটা আমাকে যেন ভিতর থেকে নাড়িয়ে দেয়!
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy