বাড়িতে মোট তিনটে লণ্ঠন।
বিরাট যৌথ পরিবার আলোকিত হত ওই তিন লণ্ঠনের আলোয়।
বাংলাদেশের দেবহাটা গাঁয়ের সেই বাড়ি থেকে কলকাতায় এসে ১৯৪৯ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন অনুপম দাশগুপ্ত। হাফপ্যান্ট পরে কলেজে যেতেন বলে সহপাঠীরা রসিকতা করত। তাই প্যান্ট ছেড়ে বেল্ট জড়িয়ে ধুতি পরা ধরলেন। সেই ধুতি আর জামা সপ্তাহে ছ’দিন পরতেন। আর রবিবার কেচে দিতেন। কাচা যদি বা হত, ইস্ত্রি হত কালেভদ্রে।
অভাব অনটন যাই থাকুক, কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে দুর্দান্ত ফল করে পাশ করলেন। তার পর মেডিকেল কলেজ থেকে শীর্ষ স্থান অধিকার করে এমবিবিএস পাশ করলেন আজকের বিখ্যাত স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তার পর দেশ-বিদেশে ঘুরে নানা সম্মান ও ডিগ্রি অর্জন করে নীলরতন সরকার হাসপাতালে স্নায়ুরোগ বিভাগে চোদ্দো বছর কাজ। জন্মভূমি দেবহাটায় গিয়ে প্রতি বছর তিন থেকে চার হাজার রুগির চিকিৎসা করেন। বর্তমানে আশি বছরের ডা. অনুপম দাশগুপ্ত কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিউরোলজি বিভাগে যুক্ত। চলেছে তাঁর নিরলস কাজ, জনসেবা। আর গবেষণা। ওঁর ছাত্ররা বলেন তাঁরা তিন থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে স্নায়ুরোগ নির্ণয়ের শিক্ষা ডা. দাশগুপ্তর কাছেই পেয়েছেন।
সাধারণত ডাক্তারদের নিয়ে জীবদ্দশায় তথ্যচিত্র তৈরি হয় না। কিন্তু ডা.অনুপম দাশগুপ্তের জীবনের নানা ওঠাপড়া আর বৈচিত্রময় ঘটনা নিয়ে তৈরি হয়েছে পঞ্চান্ন মিনিটের একটি তথ্যচিত্র। নাম ‘দা রোড লেস ট্রাভেলড।’ ছবিটি তৈরি করেছেন দেবাশিস মিত্র। ‘‘জুনিয়র ডাক্তারেরা যাতে ডা. অনুপম দাশগুপ্তের জীবন এবং নিঃস্বার্থ সেবার কথা জানতে পারেন সেইজন্য এই তথ্যচিত্র তৈরি করেছি। আজকের চিকিৎসকেরা অনেকেই আর্থিক লাভ-লোকসান নিয়ে বেশি ভাবেন, সেখানে ডা. অনুপম দাশগুপ্তের জীবন ভিন্ন, উদার এক আদর্শের কথা বলে,’’ বলছেন দেবাশিস।
আনাচে কানাচে
‘ফ্যাব ফাইভ’য়ের আড্ডা: যিশুর বাড়িতে। সঙ্গে সৃজিত মুখোপাধ্যায়। ছবি: ইন্দ্রনীল রায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy