Advertisement
২২ মে ২০২৪

আবির বনাম আবির

শীতে কলকাতায় হাজির ফেলুদা আর ব্যোমকেশ। দু’টোতেই মুখ্য চরিত্রে আবির চট্টোপাধ্যায়। আর তা নিয়ে তুমুল হইচই টালিগঞ্জে। লিখছেন ইন্দ্রনীল রায়।১৯ ডিসেম্বর। শুক্রবার। কলকাতা শহরে সে দিন একই সঙ্গে দু’জন গোয়েন্দার ‘আবির’ভাব। ফেলুদা আর ব্যোমকেশ। ‘বাদশাহি আংটি’ বনাম ‘বেণীসংহার’। সন্দীপ রায় বনাম অঞ্জন দত্ত। এবং যে কারণে গোটা টলিউড জুড়ে তুমুল হইচই, একই দিনে মুক্তি পাওয়া দুটি ছবিতেই মুখ্য ভূমিকায় থাকছেন একজনই অভিনেতা। আবির এবং আবির।

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

১৯ ডিসেম্বর। শুক্রবার।

কলকাতা শহরে সে দিন একই সঙ্গে দু’জন গোয়েন্দার ‘আবির’ভাব।

ফেলুদা আর ব্যোমকেশ।

‘বাদশাহি আংটি’ বনাম ‘বেণীসংহার’।

সন্দীপ রায় বনাম অঞ্জন দত্ত।

এবং যে কারণে গোটা টলিউড জুড়ে তুমুল হইচই, একই দিনে মুক্তি পাওয়া দুটি ছবিতেই মুখ্য ভূমিকায় থাকছেন একজনই অভিনেতা।

আবির এবং আবির।

তাই হাজরা মোড়ে যদি ‘ফেলুদা আবির’ আপনাকে ‘বাদশাহী আংটি’ দেখতে হোর্ডিং থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকেন, তা হলে রাসবিহারী ক্রসিংয়ে ‘ব্যোমকেশ আবির’ আপনাকে ডাকবেন ‘বেণীসংহার’ দেখতে।

এই রকম গুলিয়ে যাওয়া পরিস্থিতি দেখে নড়েচড়ে বসেছেন সবাই।

এমনিতে ১৯ ডিসেম্বর যে ফেলুদার ‘বাদশাহী আংটি’ মুক্তি পাবে তা বহু দিন ধরেই ঠিক ছিল। কিন্তু উইং থেকে উঠে ব্যোমকেশও যে সেদিনই পেনাল্টি বক্সে পৌঁছে যাবে সেটা চমকে দিয়েছে সবাইকেই। এক দিনে একজন অভিনেতার দুটো ছবি হামেশাই মুক্তি পায়, কিন্তু এখানে দুটো ছবি একই দিনে মুক্তি পাওয়া মানে বাঙালির অতিপ্রিয় দুই ডিটেকটিভের দ্বৈরথ।

এ ব্যাপারে কী বলছেন আবির?

“আমি আর কী বলব বলুন? যাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই ভেবেচিন্তেই করেছেন ব্যাপারটা।”

কিন্তু এতে যে মানুষ বিভ্রান্ত হতে পারে।

“হ্যাঁ, কিন্তু আমি বললে তো কিছুই বদলাবে না। যাঁরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় আছেন তাঁরা যদি এটাই চান, তা হলে এটাই হবে,” বলছেন আবির।

দর্শকের মধ্যে বিভ্রান্তি যে ছড়াতে পারে তা মেনে নিচ্ছেন সত্যজিত্‌-পুত্র সন্দীপ রায়-ও।

“ন্যাচারালি, দর্শকেরা একটু বিভ্রান্ত হবেনই। তবে এটা আমি প্রোডাকশন হাউজের ওপরেই ছাড়তে চাই। তাঁরা ব্যাপারটা আমার থেকে ভাল বুঝবেন,” বলছেন সন্দীপ।

প্রসঙ্গত এই ছবিতেই প্রথম বার ফেলুদা হিসেবে দর্শকদের সামনে আসবেন আবির। অন্য দিকে ব্যোমকেশ হিসেবে তিনি ইতিমধ্যেই দুটি ছবি করে ফেলেছেন, যা দর্শক পছন্দ করেছেন।

তা হলে কি ফেলুদাকে চাপে ফেলতেই টিম ব্যোমকেশের এই স্ট্র্যাটেজি?

“অতশত জানি না। আমরাও অনেক আগে থেকেই ১৯ ডিসেম্বর তারিখটা ঠিক করেছিলাম। আর সন্দীপ রায়ের থেকে ছবিটা ভাল বানান অঞ্জন দত্ত। তাই ব্যোমকেশ যে জিতবে সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত,” বলছেন ব্যোমকেশের প্রযোজক আরপি টেকভিশন্সের কৌস্তুভ রায়।

আর এ ব্যাপারে কী মত অঞ্জন দত্তের?

“দেখুন আমি কন্ট্রোভার্সি চাই না। বাঙালি দু’টো ছবিই দেখবে। আবিরকে তো বাঙালি ব্যোমকেশ হিসেবে গ্রহণ করেছে। ওই ধুতিটা পরে যখন আবির এসে দাঁড়ায় সিগারেট হাতে বাঙালির সেটা ভাল লেগেছে। ফেলুদাও অবশ্যই দেখবে বাঙালি। ওই থিম মিউজিকটা বেজে উঠলেই বাঙালির মনে একটা কিছু হয়। কিন্তু তা-ও বলছি, আমার কাছে আবির মানে ব্যোমকেশ। আর আমার মতে বাঙালির সেরা ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ। আর তা ছাড়া শরদিন্দুর লেখায় সাহিত্যগুণ অনেক বেশি। এখানে বলি, সব্যসাচীকে তো আমার ফেলুদা হিসেবে একেবারেই ভাল লাগেনি,” বলছেন অঞ্জন।

তা হলে কি আবিরকে সব্যসাচীর থেকে বেশি মানিয়েছে ফেলুদা হিসেবে? প্রশ্নটা শুনে হেসে ফেলেন অঞ্জন। “বললাম তো আমার কাছে আবির ইজ ব্যোমকেশ। ব্যস,” বলেন তিনি।

সব মিলিয়ে বাংলার অতি প্রিয় দুই গোয়েন্দা কী ভাবে ১৯ ডিসেম্বর একে অপরকে টেক্কা মারেন এখন তার দিকে তাকিয়ে টলিউড থেকে সাধারণ দর্শক।

এই রকম জমজমাট ফিল্মি গল্পে ২০১৪তেও যে তাঁদের তৈরি চরিত্রদের পড়তে হবে, এটা দেখলে হয়তো অবাক হতেন শরদিন্দু আর সত্যজিত্‌...

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE