শুটিংয়ের অবসরে গোয়েন্দা গিন্নি।— নিজস্ব চিত্র।
কেমন আছেন গোয়েন্দা গিন্নি?
ইন্দ্রাণী: খুব ভাল। আপনি?
ভাল। কেমন এনজয় করছেন আপনার নতুন ডাকনাম?
ইন্দ্রাণী: ওরে বাবা। (উচ্ছ্বসিত হয়ে) দারুণ। খুব ভাল লাগছে।
গোয়েন্দা গিন্নির সাফল্যের রহস্য কী?
ইন্দ্রাণী: প্রথমত এত বছর পর আমার বাংলায় ফিরে আসা। বাংলা দর্শকদের থেকে তো প্রায় সরেই গিয়েছিলাম। গত ছ’বছর ধরে হিন্দি সিরিয়াল করছিলাম। আর তার থেকেও বড় কারণ এই সিরিয়ালের সাবজেক্ট। মহিলা গোয়েন্দাদের কোনও ডেলি সোপ এর আগে বাংলায় কখনও হয়নি। এই যে একটা দারুণ কম্বিনেশন, পরিবার এবং গোয়ান্দাগিরি একসঙ্গে, এটাই মানুষের ভাল লাগছে।
নতুন বউরা শাশুড়িদের কী ভাবে সামলে রাখবেন?
ইন্দ্রাণী: (গোপন কথা শেয়ার করার ভঙ্গীতে) শাশুড়িদের ট্যাঁকে পুরতে হলে রসে-বশে রাখ। মানে গুরুত্ব দাও। এই প্রজন্মের মধ্যে যে আমি-আমি ব্যাপারটা আছে, সেটা ভুলে তুমি-তুমি করলেই শাশুড়ি হাতের মুঠোয়।
এটা কী এক্সপেরিমেন্টাল প্রজেক্ট ছিল?
ইন্দ্রাণী: ঠিকই বলেছেন। গোয়েন্দা গিন্নি হিট না-ও হতে পারত। আসলে একঘেয়ে ফ্যামিলি ড্রামা, রোম্যান্টিক গল্প, ফ্যান্টাসি বা মাইথোলজি থেকে বেরিয়ে অন্যরকম বিষয়ই জনপ্রিয়তার কারণ।
জেন-এক্সও নাকি গোয়েন্দা গিন্নির ভক্ত?
ইন্দ্রাণী: এটা আমার সবথেকে বড় প্রাপ্তি জানেন। গোয়েন্দা গিন্নি সব বয়সী মানুষ দেখেন। এতদিন যাঁরা ডেলি সোপ দেখব! বলে নাক কুঁচকে থাকতেন তাঁদের আমরা টিভি দেখানোর অভ্যেস করিয়েছি। অনেককে আমি জানি যাঁরা রিপিটও মিস করি না। দেশে, বিদেশে অনেক মানুষ ফেসবুকে, হোয়াট্অ্যাপে এমনকী পার্সোনালিও আমাকে জানিয়েছে গোয়েন্দা গিন্নি তাঁদের কত প্রিয়।
ছ’বছর আগে কলকাতা থেকে চলে যাওয়ার পিছনে কি কোনও অভিমান ছিল?
ইন্দ্রাণী: না! বরং বলব কাজের সুযোগ ছিল না। আমি বলতে চাইছি, সে সময় বাংলায় কাজের ক্ষেত্রে আমার নতুন করে আর পাওয়ার কিছু ছিল না। ঠিক সে সময় ২০০৮-এ আমার লাক ফেভার করে গিয়েছিল। আমি ‘সুজাতা’র অফার পাই। মুম্বইতে ওটাই আমার ফার্স্ট ডেলি সোপ। তিনটে ডেলি সোপ ব্যাক টু ব্যক করেছিলাম।
বড়পর্দা দিয়েও তো আপনার কামব্যাক হতে পারত?
ইন্দ্রাণী: সেভাবে দেখলে ২০১৪-তে ফিরে প্রথমে ‘আরও একবার’ ছবিটা করেছিলাম। টেলিভিশন থেকে সে সময় অনেকে অফার করেছিলেন। কিন্তু আমি যে আবার পাকাপাকি ভাবে কলকাতায় থাকব তেমন কোনও নিশ্চয়তা ছিল না। ওখানে আমার এতদিনের সেটআপ তো, সমানে অফার আসছিল। আসলে এখানে থাকার কোনও সলিড রিজন পাচ্ছিলাম না। গোয়েন্দা গিন্নি আমার সেই সলিড রিজিন। কামব্যাকের জন্য এর থেকে ভাল কিছু হতে পারে না। জানেন, মুম্বইতে একটা প্রজেক্ট ফাইনালও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এটা করব বলেই আমি ওটাতে না বলে দিয়েছিলাম।
এই ডিসিশনের জন্য কোনও রিগ্রেট আছে?
ইন্দ্রাণী: না! এই সিদ্ধান্তের জন্য কোনও মন খারাপ নেই আমার। এটা ঠিক যে, বম্বেতে কাজ করার আলাদা মজা আছে। জাতীয় স্তরে পরিচিতি পাওয়া যায়। কিন্তু আফটার অল আমি বাংলার মেয়ে। ফলে এখান থেকে সব সময়ই যে রেসপন্স পাই তার কোনও তুলনা হয় না।
আবার বম্বে ফেরার প্ল্যান রয়েছে?
ইন্দ্রাণী: না না। (হাসতে হাসতে ) আমি না আর প্ল্যানিংয়ে বিশ্বাস করছি না। কখন যে কি পাল্টে যায় কেউ বলতে পারে না। যদি ভাগ্য আবার আমাকে বম্বে নিয়ে যায় যাব।
তেরো পার্বণ থেকে গোয়েন্দা গিন্নি— এই জার্নির সবথেকে ভাল দিক কোনটা?
ইন্দ্রাণী: বিরাট সময়। ৩১ বছরের জার্নি। সবচেয়ে ভাল যেটা, সেটা হল টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির অনেক উন্নতি হয়েছে। বম্বেতে যখন সিরিয়ালে কাজ করতাম অনেক বড় বড় ব্যাপার দেখেছি। ফিরলাম যখন, তখন দেখলাম বাংলাও অনেক এগিয়েছে।
পরমার মতো মেয়েরা কি আদৌ ঘরে বাইরে দু’টোই ব্যালেন্স করতে পারে?
ইন্দ্রাণী: মেয়েরা সবই পারেন। যাঁরা ওয়ার্কিং তাঁরা তো অবশ্যই পারেন। তবে প্রতিকূলতা সব সময়ই থাকে। কখনও সাপোর্ট পাওয়া যায়, কখনও যায় না। যত ভাল স্বামীই হোক, যত ভাল শাশুড়িই হোক তাঁদের চাহিদাটা না মিটলে তাঁরা মুহূর্তের জন্য ভুলে যান আমার বাড়ির বউকে আমিই সব কাজে সাপোর্ট করেছি। পরমার শাশুড়িই তো কখনও বলেন, বউমা গোয়ান্দাগিরি করুক, ভাল তো। আমিও যাব ওর সঙ্গে। আবার কখনও বেঁকে বসেন। বলেন, ছাড়ো তো ওসব করতে হবে না। তুমি বাড়িতে রান্নাবান্না কর।
এই সমস্যাটা মেয়েরা কী ভাবে ব্যালেন্স করবেন?
ইন্দ্রাণী: একটাই কথা বলব, আমাদের লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে। এই লড়াইটা ইন্দ্রাণীর জীবনেও আছে। পরমার জীবনেও আছে। হাসিমুখে সবাইকে খুশি রেখে, নিজেকে খুশি রেখে চলতে হবে।
গোয়েন্দা গিন্নির ইউএসপি কী?
(উত্তর জানতে চোখ রাখুন আগামী মঙ্গলবার।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy