বিফলে সলমনের ফ্লার্ট, ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’-র মাঝে স্কুলের প্রেমিককে বিয়ে করেন ভাগ্যশ্রী
হিমালয় দাসানি ও ভাগ্যশ্রী পটবর্ধন ছিলেন স্কুলের সহপাঠী। একে অন্যের প্রতি দুর্বলতা ছিল। কিন্তু মুখ ফুটে বলে উঠতে পারেননি। এক বার দু’জনে স্কুল থেকে এক্সকারশনে গিয়েছিলেন হায়দরাবাদে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২০ ১৫:৫৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
বলিউডে ‘ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার’ নায়িক নায়িকাদের কথা উঠলে সবার প্রথমে আসে ভাগ্যশ্রীর নাম। ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’-র আকাশছোঁয়া সাফল্যের পর তিনি হারিয়ে যান ইন্ডাস্ট্রি থেকে।
০২২১
অনেকেই এর জন্য দায়ী করেন ভাগ্যশ্রীকে। বলেন, তিনি হিমালয়কে বিয়ে করে অকালে কেরিয়ার থেকে সরে যান। এ রকম নয় যে তাঁর কাছে ছবির অফার ছিল না। কিন্তু তিনি মন দিয়েছিলেন সংসারেই।
০৩২১
ভাগ্যশ্রীর কেরিয়ার শুরু কৈশোরে। প্রথম অভিনয় অমল পালেকরের পরিচালনায় দূরদর্শনের ‘কচ্চি ধূপ’ সিরিয়ালে। ভাগ্যশ্রীর মধ্যে সুপ্ত প্রতিভাকে চিনতে পেরেছিলেন অমল পালেকরই।
০৪২১
তবে কেরিয়ার শুরুর আগেই ভাগ্যশ্রীর জীবনে এসেছিলেন হিমালয়। হিমালয় ও তাঁর পরিবারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই সিরিয়ালে অভিনয় করেছিলেন ভাগ্যশ্রী। ‘কচ্চি ধূপ’ শেষ হওয়ার পরেই ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান।
০৫২১
ছবির কিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্য নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন ভাগ্যশ্রী। হিমালয়ের পরিবারে তরফে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেই তিনি রাজি হন অভিনয়ে। ছবিতে সলমনের বিপরীতে তিনি লাজুক কিশোরী। কিন্তু পর্দার বাইরে তিনি-ই প্রোপোজ করেছিলেন হিমালয়কে।
০৬২১
হিমালয় দাসানি ও ভাগ্যশ্রী পটবর্ধন ছিলেন স্কুলের সহপাঠী। একে অন্যের প্রতি দুর্বলতা ছিল। কিন্তু মুখ ফুটে বলে উঠতে পারেননি। এক বার দু’জনে স্কুল থেকে এক্সকারশনে গিয়েছিলেন হায়দরাবাদে।
০৭২১
সফরের শুরুতে ভাগ্যশ্রীকে হিমালয় বলেছিলেন তিনি কিছু বলতে চান। কিন্তু শেষ অবধি বলতে আর পারেননি। শেষে ভাগ্যশ্রী বলেন, না বলা কথা বলেই ফেলতে। সঙ্গে আশ্বাস, তাঁর উত্তর সদর্থকই হবে। এর পর তাঁকে প্রোপোজ করেন হিমালয়।
০৮২১
কিন্তু ভাগ্যশ্রীর রক্ষণশীল পরিবার থেকে এই সম্পর্ক মেনে নেওয়া হয়নি। হিমালয়ের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা বলাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা ঠিক করেন আর যোগাযোগ রাখবেন না। কিন্তু এটাও জানতেন দু’জনে দু’জনকে ছাড়া থাকতে পারবেন না।
০৯২১
দু’জনেই ঠিক করেন একটা ব্রেক নেবেন। ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে হিমালয় আমেরিকায় পড়তে চলে যান। ভাগ্যশ্রী বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন নায়িকা হিসেবে। তাঁর যে সারল্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন হিমালয়, সেই একই গুণ ভাল লেগেছিল সলমন খানেরও।
১০২১
অনেকেই জানেন না, ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’র সেটে প্রথমে ভাগ্যশ্রীর সঙ্গে অল্পবিস্তর ফ্লার্ট করতেন সলমন। কিন্তু ভাগ্যশ্রী তাঁকে জানিয়ে দেন হিমালয়ের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা। এর পর সলমন বন্ধ করে দেন ফ্লার্ট।
১১২১
এ দিকে ভাগ্যশ্রীর জীবনে নিজের অস্তিত্ব নিয়ে কিছুটা হলেও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন হিমালয়। তিনি আমেরিকার পড়া শেষ করে ভারতে ফিরে আসেন। ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’-র শ্যুটিং চলাকালীনই বিয়ে করে নেন তাঁরা।
১২২১
ছবিতে ‘মেহন্দি’-র যে দৃশ্য ছিল, তার দু’দিন পরেই বিয়ে হয় ভাগ্যশ্রী। কিন্তু খুব সহজে সেই বিয়ে হয়নি। ভাগ্যশ্রীর রক্ষণশীল পরিবার এই প্রেমজ বিয়েতে অসম্মত ছিল।
১৩২১
বার বার কথা বলেও অভিভাবকদের রাজি করাতে পারেননি ভাগ্যশ্রী। কিন্তু তিনি ঠিক করেছিলেন, বিয়ে করলে শুধু হিমালয়কেই করবেন। মেয়েকে কার্যত নজরবন্দি করে ফেলেছিলেন ভাগ্যশ্রীর বাবা-মা।
১৪২১
শেষ অবধি পরিবারের অসম্মতিতেই বিয়ে করেন ভাগ্যশ্রী। তাঁদের বিয়ের ঘরোয়া অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন হিমালয়ের পরিবার, সলমন খান, সুরজ বরজাতিয়া এবং ছবির শ্যুটিং ইউনিট।
১৫২১
‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ মুক্তি পেতেই রাতারাতি সুপারস্টার হয়ে যান ভাগ্যশ্রী। বেড়ে যায় পুরুষ অনুরাগীর সংখ্যা। ফলে হিমালয় অত্যধিক পজেসিভ হয়ে পড়েন। এই পরিস্থিতিতে ভাগ্যশ্রী ঠিক করেন তিনি স্বামীর পাশেই থাকবেন।
১৬২১
প্রথম ছবির পরে বড় ব্যানারে অনেক ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন ভাগ্যশ্রী। কিন্তু তিনি রাজি হননি অভিনয়ে। এমনকি, অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগও হেলায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
১৭২১
সংসার ও নিজের কেরিয়ারের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে ভাগ্যশ্রী ঠিক করে তিনি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করবেন শুধু স্বামী হিমালয়ের সঙ্গেই। ভাগ্যশ্রী তখন এতটাই সুপারহিট যে, তাঁর প্রস্তাবে রাজি হয়ে প্রযোজকরা হিমালয়কে নায়ক হিসেবে সুযোগ দেন।
১৮২১
স্বামীর সঙ্গে জুটি বেঁধে ভাগ্যশ্রী তিনটি ছবি করেছিলেন। ‘কয়েদ মেঁ হ্যায়ঁ বুলবুল’, ‘ত্যাগী’ এবং ‘পায়েল’। একটা ছবিও হিট হয়নি বক্স অফিসে। তাঁর ও হিমালয়ের জুটি পছন্দ করেননি দর্শকরা। কিন্তু তাতেও সিদ্ধান্ত পাল্টাননি ভাগ্যশ্রী।
১৯২১
তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হিমালয় ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে অভিনয় করবেন না। এর পর আরও কিছু ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ভাগ্যশ্রী। কিন্তু জনপ্রিয়তা ফিরে পাননি। সফল হননি টেলিভশনেও।
২০২১
এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন নিজের সিন্ধান্তে তাঁর কোনও অনুতাপ নেই। তাঁর কাছে স্বামী ও সংসার আগে। কাজ পরে। ভাগ্যশ্রীর ছেলে অভিমন্যুও অভিনয় করেছেন ‘মর্দ কো দর্দ নহিঁ হোতা’ ছবিতে। তাঁর মেয়ে অবন্তিকারও ইন্ডাস্ট্রিতে আত্মপ্রকাশ করার কথা চলছে।
২১২১
কেরিয়ারে তথাকথিত সাফল্য না পেলেও পর্দার বাইরে হিমালয়ের ভাগ্যশ্রীর প্রেম এবং দাম্পত্য বলিউডে ঈর্ষণীয়। বাস্তবজীবনেও ভাগ্যশ্রী বলতে পেরেছেন ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া!’