পাওলি যখন কেয়া: ‘নাটকের মতো’।
আমি শুনেছি সে দিন তুমি
সাগরের ঢেউয়ে চেপে
নীল জল দিগন্ত ছুঁয়ে এসেছ
আমি শুনেছি সে দিন তুমি
লোনা বালি তীর ধরে
বহু দূর বহু দূর হেঁটে এসেছ…
বারান্দাওয়ালা বাড়িটার উঠোন। ঠাসা মানুষের ভিড়। তার মাঝেই শেষশয্যায় রাখা মাঝনদীর গভীরে তলিয়ে যাওয়া অভিনেত্রী খেয়ার নিথর শরীর।
তাঁর বুকের ওপর আছড়ে পড়ে ডুকরে উঠছেন প্রৌঢ়া মা অনন্যা—
‘‘তুই যে বলেছিলি আমায় বুড়ো বয়সে দেখবি? খেয়া, খেয়া কথা বলছিস না যে! কথা বল, সাড়া দে...।’’
মেয়ের সারা শরীর ফুলে ঢাকা। কপালে চন্দন। মাথায় চওড়া সিঁদুর।
সে দিকে তাকিয়ে কান্না-জড়ানো গলাতে অনন্যা বলে উঠলেন, ‘‘ওকে সিঁদুর পরালে কেন? ও এ সব মানত না। এত ফুল! ওর লাগবে না তো!’’
২০১৫-র ২১ অগস্ট মুক্তি পেতে চলা ‘নাটকের মতো’ ছবির শুরুতেই এমনই একটি দৃশ্য কয়েক দশক আগের এক পড়ন্ত বিকেলের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়! চৌপায়ায় শুয়ে থাকা পাওলি তখন আর যেন খেয়া-র শব নন। কান্নায় ভেঙে পড়া রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ও নন তাঁর মা অনন্যা।
১৯৭৭। ১৪ মার্চ। শহর জুড়ে সবার গন্তব্য সে দিন উত্তর কলকাতার ২০এ, রাজেন্দ্রলাল স্ট্রিট। সন্ধে নামার একটু আগে শববাহী কাচের গাড়িতে ওই বাড়ির সামনে আনা হল অভিনেত্রী কেয়া চক্রবর্তীকে। শ্যাওলা রঙা মুখটুকু তখন জেগে শুধু। সারা শরীর ফুলে মোড়া।
দু’দিন আগে ‘জীবন যে রকম’ ছবির শ্যুটিং করতে গিয়ে মাঝগঙ্গায় তলিয়ে যান তিনি। আগের দিনই সকালে সাঁকরাইলের ঘাটে ভেসে ওঠে তাঁর দেহ। রাস্তায় তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ভিড় ঠেলে কোনওক্রমে আনা হল ওঁর মা লাবণ্যকে। কাচের ওপারে মেয়েকে দেখে কান্নায় দুমড়ে মুচড়ে যেতে যেতে বারবার ওই ক’টা কথাই তো বলেছিলেন তিনি।
দূরে পোস্টার হাতে দাঁড়িয়ে তখন কেয়ার নাট্যদল ‘নান্দীকার’-এর বন্ধুরা। তাতে লেখা, ‘‘কেয়াদি, তুমি কাজ করতে করতে চলে গেলে,/ আমরা কাজ করতে করতে তোমাকে মনে রাখব’।
নান্দীকার ছবিতে বদলে গিয়ে ‘নটকার’, বাকিটা যেন অনেকটা এক। সেই সে দিনের মতোই।
খেয়ার প্রেমিক-স্বামী প্রসাদ হয়ে দাঁড়ান নাট্যকর্মী রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়), অমিতেশ যেন সে কালের অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় (ব্রাত্য বসু), সবিতা আকাশবাণী-র প্রযোজিকা কবি কবিতা সিংহ (ঊষসী চক্রবর্তী), মনোরঞ্জন ঘোষ কেয়ার একান্ত কাছের মানুষ অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন ঘোষ (নীল মুখোপাধ্যায়)…।
‘নাটকের মতো’ ছবির দৃশ্যে পাওলি-শাশ্বত।
মায়ের অপারেশন করাতে মোটা টাকা চাই। তখন অধ্যাপনার চাকরি ছেড়ে নান্দীকার-এর হোলটাইমার হয়ে গিয়েছেন কেয়া। রোজগার বলতে এক জুতো কোম্পানির বিজ্ঞাপন লেখা আর অনুবাদের কাজ। ছবি যা-ই হোক, অফার ছাড়তে চাননি তিনি।
চরিত্রটি এক অন্ধ মায়ের। লঞ্চে করে মা-ছেলে যেতে যেতে জলে পড়ে যায় ছেলে। তাকে বাঁচাতে মা’ও ঝাঁপ দেয় মাঝদরিয়ায়। এই দৃশ্যেরই শ্যুটিং করতে গিয়ে চিরদিনের জন্য হারিয়ে যান বছর পঁয়ত্রিশের কেয়া। ছবির খেয়াও ঠিক তাই।
কেয়ার জন্য শোকার্তদের সে দিন কোনও রং ছিল না। বিত্ত, প্রতিপত্তি, সংস্কৃতি ভেদ করে সে ছিল যেন সবার মনের মানুষের চলে যাওয়া।
শঙ্খ ঘোষের কথা মনে পড়ে যায়। তিনি এক বার লিখেছিলেন, ‘‘কেয়ার মৃত্যুর পরদিন সকালে কোনও এক বাড়ির পরিচারিকা তার কর্ত্রী গৃহিণীকে এসে বলেছিল, শুনেছেন কেয়া চক্রবর্তী মারা গেছেন? একটু অবাক হয়ে গৃহিণী তাকে জিজ্ঞেস করেন: শুনেছি, কিন্তু তোমরা জানলে কী করে? বাঃ আমরা শুনব না? খবর পেয়ে আমাদের বস্তিসুদ্ধ লোক কেঁদে সারা। আমরা যে সব দল বেঁধে ওর ‘ভালোমানুষ’ দেখতে গিয়েছিলাম। উনি তো আমাদের কথা বলতেন। উনি তো আমাদেরই লোক ছিলেন। আমরা জানব না?’’
কেয়া চক্রবর্তীর মৃত্যু নিয়ে চাপানউতোর চলে বহু দিন। মাঝগঙ্গায় শ্যুটিং করার অনুমতি ছিল তো? ডামি নয়, অভিনেত্রী স্বয়ং কেন ঝাঁপ দিলেন জলে? জাল পাতা ছিল? লাইফবোট? সাঁতার না-জানা কেয়া এই ঝুঁকি নিলেন কেন? তাঁকে কি জোর করা হয়? না কি তিনিই জোর করেন পরিচালককে? নিছক দুর্ঘটনা? না কি আত্মহত্যা? হত্যা নয় তো? কেউ ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল কি?
প্রশ্নগুলো প্রশ্নই থেকে গেছে। মাঝপথে তদন্তের যে কী হল, কে জানে! ‘নাটকের মতো’ ছবিতে খেয়ার মৃত্যুরহস্যের খোঁজেই তল্লাশে নেমেছেন বন্দর পুলিশের ইনভেস্টিগেটিং অফিসার ভবদুলাল রায় (রজতাভ দত্ত)। কখনও তিনি হাজির হয়েছেন অনন্যার বাড়ি। কথা বলেছেন প্রসাদ-অমিতেশ-সবিতাদের সঙ্গে। বাদ যাননি ছবির পরিচালক-প্রযোজক সমেত অন্য লোকজনও।
ফ্ল্যাশব্যাকে উঠে এসেছে খেয়ার ছেলেবেলা, স্কুল, কলেজ, অধ্যাপনা, থিয়েটার, লেখালেখি, প্রেম, বিয়ে, বিশ্বাস, ঘৃণা, রাগ, কান্না, পাগলামি, ছেলেমানুষি… সব কিছু।
কেয়া যখন দুই কি তিন বছরের, ওর মা ওকে ছেড়ে চলে যান বাগবাজারে বাপের বাড়ি। স্বামী কেয়ার মা লাবণ্যকে সন্দেহ করতেন। অশান্তি হত রোজ। তাই তাঁর চলে যাওয়া। কেয়ার তখন দিন কেটেছে তিন তলার বদ্ধ কুঠুরিতে। বাইরে যাওয়া মানে শুধুই স্কুল। এক-দু’মাস পর পর মা’কে আনতেন বাবা। দিন কয়েক থাকার পর আবার সেই অশান্তি। তখন ঠাকুমাই বলতেন, ‘‘তুমি চলেই যাও।’’
চলে যেতে যেতে লাবণ্য দেখতেন, ছাদের এক কোণে দাঁড়িয়ে ছোট্ট কেয়া চোখের জল ফেলছে। শব্দ নেই তাতে। একটু বড় হতে মায়ের সঙ্গে নিজেই দেখা করতে যেত কেয়া। বাগবাজারের মামাবাড়িতে। শ্যামবাজারের চা-কেবিনে। কত বার ফিরে যেতে বলেছে মাকে! রাজি হননি মা।
শেষমেশ কেয়ার এমএ পরীক্ষার সময় লাবণ্য ফিরে যান মানিকতলায় স্বামীর বাড়ি। খেয়ার বেলায় হুবহু এমনটা নয়, তবে অনেকটা যেন তাই। খেয়ার ঠাকুমা নেই। বদ্ধ-ঘরটার দেখা নেই। মায়ের চলে যাওয়াটা আছে, ফিরে ফিরে আসাটা নেই।
আইএ পরীক্ষার সময় খেয়ার বাবা মারা যাওয়ার পর তবে অনন্যা চলে যান মেয়ের কাছে। লাবণ্যের মতো স্বামী বেঁচে থাকতে নয়। তবু কোথায় যেন কেয়ার ছায়া ধরেই বড় হয়ে ওঠা খেয়ারও। সে ছায়া মিশে যায় বাড়িতে না-বলেকয়ে বন্ধুদের নিয়ে তার উধাও হওয়ার ফন্দিতে, খোলা গলায় হঠাৎ হঠাৎ গান গেয়ে ওঠার খুশিতে, এমনকী পুষ্যি বেড়ালের জন্য মায়ের সঙ্গে খুনসুটিতেও— ‘‘অমন করে বোকো না মা, ও যে হার্টফেল করবে।’’
ছোট থেকে কেয়া দাঁড়িয়ে স্রোতের বিপরীতে। তার রাগ, ঘৃণা, আবেগের ধরনগুলো ছিল আলাদা রকম। অল্পতেই কেয়ার চোখে জল আসত। আবার বেচাল দেখলেই যখন-তখন রুখে দাঁড়াত। কেয়ার কাছে ভালবাসা মানে, জীবনটাও দিতে পারা।
শীতে কুঁকড়ে যাওয়া ভিখারিকে সে যেমন নিজের গায়ের দামি শাল খুলে জড়িয়ে দিয়েছে, তেমনই বেয়াড়া মাতালের বেয়াদপি থেকে রাতবিরেতে ঝুঁকি নিয়ে বাঁচিয়েছে অভাগা রিকশাওয়ালাকে। এমনকী থিয়েটারের জন্য গয়নার বাক্স উপুড় করে দিতেও সে মুহূর্তকাল ভাবেনি। আবার শুধু ভাল লেগেছে বলে, স্বল্পচেনা কোনও কবির ডায়েরি থেকে সদ্য লেখা কবিতার পাতা টেনে ছিঁড়ে নিতেও তাঁর বাধেনি।
স্কটিশ কলেজে আমন্ত্রিত কবি-সম্মেলন। সামনের চেয়ারে কেয়া। কবিতা সিংহ পড়লেন— ‘‘মা হাতের উল্টো পিঠে মুছে নিয়েছি শেষবারের মত/ দু’চোখ ছাপিয়ে নামা চোখের জলের বৃথা দাগ…।’’ কবিতা সিংহ পরে লিখেছেন, ‘‘নেমে আসতেই কেয়া বলল, ‘কবিতাটা দেখতে দেবে? এটা তোমার হাতের লেখা?’ কোনও কথা না বলে ফর ফর করে ছিঁড়ে নিল ডায়েরির পাতাটা। ‘কবিতাটা আমার। তোমার হাতের একটা লেখা আমার কাছে থাক।’ আমি বললাম, ‘কবিতাটা দেশ-এ পাঠিয়েছি, কপি নেই আমার। কেয়া বলল, ‘না থাক। এটা দেব না।’’’
টুকরো টুকরো ছবিতে, কেয়ার কাহিনিতে বাঁধা পড়েছেন খেয়াও।
জন্মের এক বছরের মাথায় কেয়ার অন্তঃসত্ত্বা মেজ মাসি কাপড়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করেন। শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারে। তাঁর জেঠতুতো দিদি পনেরো বছর ক্লাসিক্যালের তালিম নিয়ে বিয়ের পর সব ছেড়েছুড়ে দেন।
বড় হয়ে কেয়া কেবলই ভেবে গেছে, মাসি ও-বাড়ি ছেড়ে চলে আসতে তো পারত, মায়ের মতো। দিদিই বা কম পয়সাওয়ালা গানপ্রিয় কাউকে বিয়ে করল না কেন? কেয়ার মতোই এ কথা খেয়াকেও যন্ত্রণায় ফেলে। বন্ধুর কাছে সে বিরস মনে প্রশ্ন করে। উত্তেজিত হয় মায়ের কাছে।
খেয়া প্রেমেও পড়ে। খেয়ার কলেজে এক বছরের সিনিয়র প্রসাদ। ফুটবল খেলে। কলেজের গোলকিপার। তার খেলা দেখেই খেয়ার তাকে ভাললাগা। প্রেম। বিয়ে। অধ্যাপনা। প্রসাদকে ছেড়ে মায়ের কাছে আলাদা থাকতে শুরু করা।
পাশাপাশি থিয়েটারের সঙ্গে নাড়ির যোগ তৈরি হতে থাকে খেয়ার। অমিতেশের সঙ্গে আলাপ হয়। নটকার-এ আসে। মঞ্চে নামে। অমিতেশের কথাতে চাকরিও ছেড়ে দেয়। অমিতেশকে গুরু বলে মেনে তাঁর কথাতেই জীবনটাকে বদলে ফেলা প্রসাদকে ক্রমে খেয়ার প্রতি যেন হিংস্র করে তোলে।
ছবির এই অংশে এসে ঘটনা যে ভাবে ঘটেছে, চরিত্ররা যে ভাবে জুড়েছে, পরম্পরা যে ভাবে এসেছে, কেয়া চক্রবর্তীর জীবন হয়তো হুবহু তেমন করে মেলে না। আবার মিলও যে নেই, তা’ও না। আসলে খেয়া তখন আর শুধুই কেয়া নয়। তার এক্সটেনশন। পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের কল্পনায় (প্রযোজনা: ফিরদাউসল্ হাসান, নিবেদন: ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশনস্)। এই কল্পকাহিনি যখন ফুটতে শুরু করে, একটা বড় ক্যানভাসে ঘরে বাইরে অবিচারকে অস্বীকার করা এক দল নারীর স্বর হয়ে যেন বেজে ওঠেন খেয়া।
উল্টো দিকে দম্ভ, দখলদারি মন, উদ্ভট সব ঈর্ষাকাতরতা নিয়ে ক্রমশ দূরত্ব বাড়িয়ে তোলা পুরুষদের গন্ধ পাওয়া যায় প্রসাদের সারা শরীরে, কথায়, আচারে, চাহিদায়। আজও বেঁচে থাকা অনেক অনেক খেয়া-প্রসাদের মতোই তখন হয়ে দাঁড়ায় সেই সম্পর্কের রসায়ন।
সংসারী খেয়া যেন কেয়ারই লেখা কাহিনির ‘মিসেস আর পি সেনগুপ্ত’। স্বামী, দেওরের ফরমাস ঠেলে, মুখঝামটা, বাঁকা কথা শুনে, সংসারের এঁটোকাঁটা ফেলে, বাসন মেজে যিনি সোজা স্টেজে চলে যান। শুধু থিয়েটারকে ছাড়তে পারবেন না বলে।
পরিণত বয়সের কেয়া নিজের বিশ্বাসের কারণে ছিলেন কয়েক দশক এগিয়ে। বলতেন, ‘‘বিয়ে-ফিয়ে আমি মানি না। চেস্টিটি-ফেস্টিটি আবার কী জিনিস?— সতীত্ব? সতীত্ব শুধু থাকে মেয়েদের। পুরুষদের জন্য কোনও টার্ম নেই।’’ এই পরিণতির ছাপ খেয়ার মুখেও।
দৃশ্যে বারবার সংলাপ এসেছে থিয়েটারের। আশপাশের ভণ্ডামি, নষ্টামির ওপর খেয়ার রাগ, ঘেন্না এক-এক সময় মিলে যায় সেই সংলাপে। থিয়েটারের সেট, প্রপস ঢুকে পড়ে ছবির আলোতে, ছায়াতে। সিনেমা-থিয়েটারের এক অদ্ভুত মেলামেলির খেলায় দাঁড়িয়ে খেয়া কখনও আন্তিগোনে হয়ে রাজা ক্রেয়নকে বলে ওঠেন— ‘‘জীবন সম্পর্কে তোমার যা যা ধারণা তাতে আমি থুতু ফেলি। তোমরা সবাই কুকুরের মতো। যেটা শুঁকছ, সেটাই চাটছ। এই নির্বোধ একঘেয়েমিকে তোমরা সুখ বলো?’’ — আবার সেই পৌরুষের অবদমনকে চ্যালেঞ্জ নেওয়া। তাকে মার্জিনে ঠেলে কৈফিয়ত চাওয়া। যেখানে খেয়া আছে, কেয়া কি নেই? তাঁর জীবনের এজেন্ডা কি এমন কথাই বলে না?
শেষমেশ কেয়াকে যেন কখনও আবিষ্কার, কখনও পুনর্নির্মাণ করতে করতেই যবনিকার দিকে এগোয় ‘নাটকের মতো’।—
আমি শুনেছি তোমরা নাকি/ এখনও স্বপ্ন দেখো/ এখনও গল্প লেখো/গান গাও প্রাণ ভ’রে/মানুষের বাঁচা মরা /এখনও ভাবিয়ে তোলে/তোমাদের ভালবাসা/এখনও গোলাপে ফোটে…
খেয়ার গল্প। খেয়াদের গল্প। কেয়ার মতো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy