Advertisement
০৬ মে ২০২৪

বনবাংলোয় আর আসা হল না টেনিদার

কাঁকড়াঝোরের বন বাংলোয় উঠেছিলেন ‘চারমূর্তি’। ১৯৭৮ সালের বাংলা সিনেমা ‘চারমূর্তি’ তৈরি হয়েছিল নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের টেনিদার কাহিনি অবলম্বনে।

চারমূর্তি ছবির সেই দৃশ্য। নিজস্ব চিত্র

চারমূর্তি ছবির সেই দৃশ্য। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলপাহাড়ি শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৯ ০৭:১৯
Share: Save:

শালবনের মাঝে মেঠো পথ ধরে যেতে যেতে গান গাইছেন টেনিদা— ‘তোলপাড়-দুদ্দাড়-ঝোপঝাড়-তোলপাড়’! সঙ্গী প্যালারাম, ক্যাবলা আর হাবুল।

কাঁকড়াঝোরের বন বাংলোয় উঠেছিলেন ‘চারমূর্তি’। ১৯৭৮ সালের বাংলা সিনেমা ‘চারমূর্তি’ তৈরি হয়েছিল নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের টেনিদার কাহিনি অবলম্বনে। বন বাংলোয় বসেই মান্না দে-র গাওয়া ‘ভারত আমার ভারতবর্ষ স্বদেশ আমার স্বপ্ন গো’ গানে লিপ দিয়েছিলেন টেনিদার ভূমিকায় অভিনয় করা চিন্ময় রায়। সেই টেনিদা আর নেই। কাঁকড়াঝোরের বনবাংলোও এখন ধ্বংসস্তূপ। চিন্ময় রায়ের মৃত্যুসংবাদে তাই মন ভার কাঁকড়াঝোরের।

উমানাথ ভট্টাচার্য পরিচালিত ওই ছবিতে বার কয়েক দেখা গিয়েছিল সাদা বন বাংলোটিকে। সিনেমার ছোট একটি দৃশ্যে গাড়োয়ানের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন কাঁকড়াঝোরের গোপীনাথ মাহাতো। গোপীনাথ প্রয়াত হয়েছেন বছর দশেক। তাঁর ভাইপো মধুসূদন জানালেন, ষাটের দশকের শেষে কলকাতায় গিয়েছিলেন গোপীনাথ। তাঁর গোঁফ জোড়া পছন্দ হয় স্বয়ং সত্যজিৎ রায়ের। পরে একবার কাঁকড়াঝোরে এসেছিলেন সত্যজিৎ। থেকেছিলেন বন বাংলোতে। সেই সূত্রেই পরে উমানাথ জেনেছিলেন কাঁকড়াঝোরের কথা।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

মাইন বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তূপ কাঁকড়াঝোরের বনবাংলো। নিজস্ব চিত্র

সেই মতো ঝন্টিপাহাড়ির সেই বন বংলো হিসেবে কাঁকড়াঝোরের লোকেশন পছন্দ হয় প্রযোজকের। আর চিন্ময় রায়? তিনি কাঁকড়াঝোরের জঙ্গল-পাহাড়ের প্রকৃতি দেখে এতটাই মুগ্ধ হন যে মাঝে মধ্যেই শ্যুটিং থামিয়ে তাকিয়ে থাকতেন লাকাইসিনির পাহাড়ের দিকে। মধুসূদন বলছিলেন, ‘‘জ্যাঠামশাইয়ের কাছে শুনেছি, ১৯৭৬-৭৭ সাল নাগাদ শ্যুটিং হয়েছিল। শ্যুটিংয়ের ফাঁকে চিন্ময় রায়রা গ্রামে ঘুরতেন। তাঁদের জন্য রান্না হত দিশি মুরগির ঝোল।’’ পরে আর কাঁকড়াঝোরে আসেননি চিন্ময়। ২০০৪ সালের ৪ ডিসেম্বর রাতে মাইন বিস্ফোরণে বন বাংলোটি ধ্বংস করে দিয়েছিল মাওবাদীরা। চিন্ময় আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘‘কাঁকড়াঝোরের অমন সুন্দর বাংলোটা আর নেই!’’ গোপীনাথের কাছেই জানা যায়, ২০০৫ সালে গোপীনাথ কলকাতায় গেলে চিন্ময় জানান, ‘‘নতুন করে বাংলোটা হলে বলিস, এক বার যাওয়ার ইচ্ছে আছে।’’ সেই ইচ্ছে আর পূরণ হল না। কাঁকড়াঝোরে নতুন করে বন বাংলো তৈরির পরিস্থিতি নেই বলে মনে করে বন দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE