ফাইল চিত্র।
প্রয়াত অভিনেত্রী পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনলেন তাঁর বান্ধবী ঐন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায়।
মাস দুই আগে শহরের এক পার্টিতে সাগ্নিক নাকি তাঁকে যৌন হেনস্থার চেষ্টা করেছিলেন বলে দাবি ওই মহিলার। তিনি বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পরে আমি থানায় অভিযোগ জানাব বলেও ঠিক করেছিলাম। কিন্তু পল্লবী এসে কান্নাকাটি করে। থানা-পুলিশ করলে ওর সম্মানহানি হবে বলে জানায়।’’ পল্লবীর কথা ভেবেই তিনি থানায় অভিযোগ করেননি বলে দাবি ঐন্দ্রিলার।
অভিনেত্রীর পরিবারের তরফে ঐন্দ্রিলার নামে অভিযোগ করা হলেও এখনও পর্যন্ত তদন্তকারীরা তাঁর সঙ্গে কথা বলেননি বলেই জানা গিয়েছে। তবে তাঁকে ডাকা হতে পারে বলেই পুলিশ সূত্রের খবর।
অভিনেত্রী পল্লবী দে মৃত্যু-মামলায় তাঁর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পল্লবীর বাবা নীলু দে পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে তিনি সাগ্নিক, তাঁর বান্ধবী ঐন্দ্রিলা-সহ কয়েক জনের নাম করেছিলেন। এর পর সাগ্নিককে প্রায় রাতভর জেরা করা হয়। সূত্রের খবর, গরফা থানায় জেরার সময় আগাগোড়া হাজির ছিলেন কলকাতা পুলিশের এক ডেপুটি কমিশনার। বস্তুত, তাঁর সামনেই সাগ্নিককে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া চলে। এর পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাগ্নিককে গ্রেফতার করা হয়।
পল্লবীর বাবার দাবি ছিল, অন্য এক তরুণী ঐন্দ্রিলার সঙ্গে সম্পর্কে থাকতে চেয়েই মেয়েকে খুন করেছেন সাগ্নিক। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছিলেন, পল্লবীর উপার্জিত অর্থও হস্তগত করার চেষ্টা করছিলেন সাগ্নিক। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে খুন এবং সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার মামলা দায়ের হয় সাগ্নিকের বিরুদ্ধে। গ্রেফতারের আগে গভীর রাত পর্যন্ত পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গীকে জেরাও করে পুলিশ। তারপরই গ্রেফতারি।
তদন্তে জানা গিয়েছে, পল্লবী ও সাগ্নিক কিছু সম্পত্তি কিনেছিলেন। জেরায় সেই সম্পর্কে সাগ্নিকের কাছে বিশদ তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এ ছাড়া আরও একাধিক আর্থিক লেনদেন নিয়েও পুলিশের প্রশ্নের জবাব দিতে হয় সাগ্নিককে। নতুন কোনও সম্পত্তি কেনা নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিবাদের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কি না জানতে চেয়েছিল পুলিশ।
গত রবিবার পল্লবীর গরফার ফ্ল্যাটে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। অভিনেত্রীর গলায় জড়ানো ছিল বিছানার চাদর। মেয়ে যে এই ভাবে আত্মহত্যা করতে পারেন, তা বিশ্বাস করতে চাননি পল্লবীর বাবা নীলু। তিনি রবিবারই জানিয়েছিলেন, পল্লবী এমন পদক্ষেপ করতে পারে না। ওঁকে নিশ্চয়ই কেউ খুন করেছে। যদিও রবিবার এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনও মামলা করেননি নীলু। বলেছিলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন। সোমবার বিকেলে পল্লবীর ময়নাতদন্ত হওয়ার পরই স্ত্রী সঙ্গীতা দে এবং আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে গরফা থানায় হাজির হন অভিনেত্রীর বাবা। সেখানেই পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক, তাঁর এক বান্ধবী-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান তিনি।
সব মিলিয়ে পল্লবীর মৃত্যুর তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই সামনে আসছে একের পর এক নতুন তথ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy