ধর্মীয় সংস্থার উদ্বোধনে শহরে অনুপ জলোটা।
প্রশ্ন: অনেক দিন পরে কলকাতায়?
অনুপ: পা রেখেই মনটা ভরে গেল (হাসি)। বাঙালিরা আমার গান ভালবাসেন। কলকাতা মানেই নজরুলগীতি। ‘খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে’ কিংবা ‘অরুণকান্তি কে গো যোগী ভিখারি’ সবাই খুব আদর করে শুনেছেন। এই শহর গানপাগলা।
প্রশ্ন: বদল কিছু দেখলেন?
অনুপ: আরও সুন্দরী হয়েছে! ঝকঝকে রাস্তা। নিয়ন আলোয় রাত রঙিন। শহর পূর্ণ যুবতী। আর কলকাতার জিলিপি! অসাধারণ। শহরে এসে সবার আগে ওটা আমার চাই। সঙ্গে শহরবাসীর আতিথেয়তা। সব মিলিয়ে ভীষণ উষ্ণ।
প্রশ্ন: অনলাইন তীর্থস্থান ভ্রমণের বার্তা দিতে আপনি কেন?
অনুপ: আমাদের দেশ তো ধর্মের বাইরে নয়! সব ধর্ম এখানে মিলেমিশে একাকার। আমিও সেই পথের পথিক। গানে, কথায়, বার্তায় সেই ভাবনা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। যাতে সবার মন শান্ত থাকে। হেঁটে তীর্থস্থান ঘোরার পাশাপাশি অনলাইনেও তীর্থস্থান দেখার বিশেষ ব্যবস্থা করছে ‘মাই তীর্থ ইন্ডিয়া পি সি’। সব বয়সের মানুষের জন্য। নানা স্থান দেখানোর পাশাপাশি পুজো, প্রসাদেরও ব্যবস্থা করে দেবে এই সংস্থা। যাঁরা তীর্থস্থানে যেতে চান তাঁদেরকেও নিয়ে যাবে সংস্থা। মনে হল এই বার্তা সবার কাছে পৌঁছনো উচিত। তাই আমিও এই শহরে।
প্রশ্ন: ধর্ম নিয়ে অতি চর্চা দেশে অশান্তি ডেকে আনছে, আদৌ এত ধর্মীয় ভাব দরকার?
অনুপ: ধর্মকে এড়িয়ে ভারতবর্ষে বসবাস সম্ভব নয়। কারণ, এখানকার প্রতিটি মানুষের ধর্মীয় আবেগ আছে। ঘুমপাড়ানিয়া গান বা গল্পের মধ্যে দিয়ে মা-দিদিমারা রামায়ণ, মহাভারত, শ্রীকৃষ্ণ সহ বিভিন্ন অবতারের কথা শোনান। ফলে, আমাদের ধর্ম নিয়েই চলতে হবে। পাশাপাশি এটাও ঠিক, আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ থাকতে হবে। কাউকে প্রাধান্য দিয়ে কাউকে হেয় করা চলবে না।
প্রশ্ন: নূপুর শর্মার পয়গম্বর মন্তব্য নিয়ে আপনার কী মত?
অনুপ: নূপুর কেন এ রকম মন্তব্য করলেন জানি না, তবে আমি ওঁকে সমর্থন করি না। আমাদের দেশ বরাবর পরধর্মসহিষ্ণু। সেই জন্যই এত ধর্মের একত্রবাস। এই শান্তির পরিবেশ আমাদেরই ধরে রাখতে হবে। এমন কিছু বলব না বা করব না যাতে অন্য ধর্মাবলম্বীরা কষ্ট পান। তার থেকে হিংসা ছড়ায়। সবাই দেশে আগের মতো শান্তিতে বসবাস করুন, এটাই কামনা।
প্রশ্ন: ‘ভজন সম্রাট’ কোনও দিন অলৌকিক কাণ্ড দেখেছেন?
অনুপ: এ রকম ঘটনা প্রচুর আছে। এক বার শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা রেকর্ড করছিলাম। ৩ বছর সময় লেগেছিল পুরোটা রেকর্ড করতে। ওই ৩ বছর আমার শরীরে বাঁশির চিহ্ন ফুটে উঠেছিল। যত দিন এগিয়েছে ততই সেই চিহ্ন স্পষ্ট হয়েছিল। রেকর্ডিং শেষ হতেই ধীরে ধীরে সেটা মিলিয়ে যায়। বুঝেছিলাম, এত দিন স্বয়ং ঈশ্বর আমার সঙ্গে ছিলেন।
প্রশ্ন: গানের রিয়্যালিটি শো-তে ভজন-কীর্তনের জনপ্রিয়তা নেই! কোনও দিন চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবেন?
অনুপ: কী দরকার? ধর্মীয় গান সম্প্রচারণের প্রচুর ইউটিউব চ্যানেল আছে। যাঁরা এই ধরনের গান শুনতে ভালবাসেন তাঁরা সেখানেই শুনতে পাবেন। রিয়্যালিটি শো-তে এ সবের কোনও দরকার নেই। আমি নিজে অতিথি বিচারক হয়ে নানা শো-তে এসেছি। যে ধরনের গান হয় ওগুলোই ওখানে ঠিক।
প্রশ্ন: এই ভাবনা থেকেই ‘ভজন সম্রাট’ ‘বিগ বস ১২’-য় অংশ নিয়েছিলেন?
অনুপ: জীবনের সব দিক দেখা উচিত। সব কিছু জানা উচিত। সেই ভাবনা থেকেই আমি বিগ বস ১২-য় অংশ নিয়েছিলাম। বেশ ভাল লেগেছে। এই শো-তে সবাই নিজের কাজ নিজে করেন। শক্ত শক্ত ‘টাস্ক’ দেওয়া হয়। সেগুলোর মধ্যে দিয়ে অংশগ্রহণকারীদের যেতে হয়। দেড় মাস ছিলাম। সবটাই উপভোগ করেছি।
প্রশ্ন: ছাত্রী-শিক্ষক সম্পর্ক নিয়ে নেতিবাচক চর্চাও উপভোগ করেছিলেন?
অনুপ: ওটা পুরোটাই সাজানো ছিল। খেলা থেকে বেরিয়েই জানিয়েছিলাম। খেলা শেষ। জসলিন মাথারুর সঙ্গেও আর দেখা হয়নি। এই ধরনের প্রতিযোগিতার অংশ ওই চর্চা। সেটাই হয়েছিল। আর কিচ্ছু না।
প্রশ্ন: নেটমাধ্যমে ইদানীং নেতিবাচকতারই জয়, কী করে সামলান?
অনুপ: মাথায় নিই না। একটুও পাত্তা দিই না। এই সব কথা পড়ে মনখারাপ করার কোনও মানেই হয় না। এড়িয়ে চলুন এ সব। ভাল থাকবেন।
প্রশ্ন: আগামী দিনে আর কী করছেন?
অনুপ: গানের পাশাপাশি অভিনয়ও ভালবাসি। তাই একাধিক ছবি, সিরিজে আমাকে দেখা যাবে। এর বেশি কিছুই বলতে পারব না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy