Advertisement
০৭ মে ২০২৪

পাক ছবি, তাই তৃপ্তি মিত্রেও কোপ

পাক অভিনেতার উপরে কোপ পড়েছিল আগেই। এ বার আপত্তি উঠল পাকিস্তানের ছবি নিয়েও। মুম্বইয়ের চলচ্চিত্র উৎসবে (ম্যামি) ‘জাগো হুয়া সবেরা’ (ডে শ্যাল ডন) নামে পাকিস্তানের একটি ছবি দেখানোর কথা ছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:১৪
Share: Save:

পাক অভিনেতার উপরে কোপ পড়েছিল আগেই। এ বার আপত্তি উঠল পাকিস্তানের ছবি নিয়েও।

মুম্বইয়ের চলচ্চিত্র উৎসবে (ম্যামি) ‘জাগো হুয়া সবেরা’ (ডে শ্যাল ডন) নামে পাকিস্তানের একটি ছবি দেখানোর কথা ছিল। কিন্তু সেটি দেখানো হবে না বলে শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। কী কারণে এই সিদ্ধান্ত? এক কথায় উদ্যোক্তাদের জবাব, ‘‘এখনকার পরিস্থিতির জন্যই এটা ভাবা হয়েছে।’’

গত সপ্তাহেই পাক অভিনেতা ফাওয়াদ খান আছেন বলে কর্ণ জোহরের ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ চারটি রাজ্যে দেখানো হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ‘সিনেমা ওনার্স এক্সিবিটরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’ (সিওইএআই)। তার আগে ফাওয়াদকে ভারত ছাড়ার ফতোয়া দিয়েছিল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনাও (এমএনএস)। ২০ অক্টোবর মুম্বইয়ের চলচ্চিত্র উৎসব শুরু। ১৯৫৯ সালের সাদা-কালো ছবি ‘জাগো হুয়া সবেরা’ সেখানে দেখানো হবে না শুনে চলচ্চিত্রামোদীদের অনেকেই হতাশ। মুম্বইয়ের ‘সংঘর্ষ’ নামে একটি সংগঠন ছবিটির প্রদর্শন নিয়ে আপত্তি তুলেছে। উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে তারা। ‘সংঘর্ষ’-এর দাবি, ‘ভারতের মানুষের জাতীয়তাবাদী আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন উদ্যোক্তারা। উরি হামলার পরে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটা মাথায় রাখা উচিত।’ ছবিটি দেখানো হলে তারা ছেড়ে কথা বলবে না, এমন হুমকিও দিয়েছে ‘সংঘর্ষ’। প্রতিবাদ জানানোর জন্য পুলিশের কাছে আগাম অনুমতি চেয়েছে তারা। তার পরেই তড়িঘড়ি ওই ছবি প্রদর্শন বাতিল করা হয়।

১৯৬০ সালে ৩২তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস-এ শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার ছবি হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিল এ জে কর্দার পরিচালিত ‘জাগো হুয়া সবেরা’। পূর্ব পাকিস্তানের আমলে ছবিটি তৈরি হয়। শ্যুটিং হয় ঢাকায়। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ অবলম্বনে ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ।

পূর্ব পাকিস্তান, পশ্চিম পাকিস্তান এবং ভারত থেকে বিভিন্ন প্রতিভার মেলবন্ধনে গড়ে ওঠা ছবিটি তাই যে কোনও সিনেমাপ্রেমীর কাছেই আকর্ষণীয়। নোমান তাসিরের সঙ্গে ছবির সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন তিমির বরণ। অভিনয় করেছিলেন তৃপ্তি মিত্র। সম্প্রতি ছবিটিকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পুনরুদ্ধার করা হয়। সেটি এ বার কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ধ্রুপদী বিভাগ’-এ দেখানোও হয়েছে।

এমন একটি ছবির প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মুখ খুলেছেন সাংসদ-অভিনেত্রী মুনমুন সেন এবং শতাব্দী রায়। তাঁরা দু’জনেই মনে করেন, শিল্পীর কোনও দেশ হয় না। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র বক্তব্য, ‘‘যে সব ছবি তৈরি হয়ে গিয়েছে, সেগুলো নিষিদ্ধ করার কোনও মানে হয় না। এতে প্রযোজকদের ক্ষতি। তবে এর পরে পাকিস্তানের শিল্পীদের নিয়ে ছবি না করাই উচিত।’’ শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীও বলেন, ‘‘আমার কাছে দেশই সব চেয়ে বড়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mumbai Film Festival Pakistani Movie Ban
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE