সোহিনী-সমদর্শী
‘ইচ্ছে’র ১১ বছর। এই ছবি দিয়ে নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জুটির পরিচালনারও ১১ বছর। প্রথম ছবিতেই অন্য ধারার গল্প। তাতে তারকা নন, ভিন্ন ধাঁচের অভিনেতার দল। এই দুইয়ে মিলেই কি সাফল্যের মুখ দেখেছিল বড় পর্দার নবাগত পরিচালক-জুড়ি? তখন সাল ২০০৮। একাধিক প্রযোজক গল্প শুনেই শিবপ্রসাদের হাতে তামিল, তেলুগুর রূপান্তর ছবির ডিভিডি ধরিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁদের যুক্তি, ভাল গল্প। কিন্তু বাণিজ্যে সফল রূপান্তর ছবি। সেটা যদি কোনও ভাবে রপ্ত করতে পারেন নন্দিতা-শিবু!
দুই পরিচালক কারওর কথা শোননি। পর্দায় তুলে ধরেছিলেন মা-ছেলের গল্প। তাকে জীবন্ত করেছিলেন সোহিনী সেনগুপ্ত, সমদর্শী দত্ত। ফলাফল? ১১ বছর পরেও ‘ইচ্ছে’ নিয়ে আগ্রহী এই প্রজন্মও। সোহিনী তার কিছু দিন আগেই ‘পারমিতার একদিন’ ছবিতে ‘খুকু’র চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া ফেলেছেন। তার পরেই তিনি সমদর্শীর মতো এক যুবকের মা! চরিত্র শুনে তাঁকেও কি নিজের সঙ্গে লড়তে হয়েছিল? প্রশ্ন ছিল আনন্দবাজার অনলাইনের। সোহিনীর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘যুদ্ধ কিসের? আমার কাজই তো অভিনয়। আর নন্দিতাদি-শিবুর ছবিতে নতুন করে নিজেকে প্রমাণ করার তো কিছুই ছিল না! ওঁরা বলেছিলেন। শিবু নান্দীকারের ছেলে। এটা একটা আলাদা অনুভূতি। ফলে, অনুরোধ ফেলতে পারিনি। এখন তো মনে হয়, ভাগ্যিস ফেলিনি। তাই এত ভাল একটা ছবির অংশ আমি।’’
অভিনয় তাঁর রক্তে বলেই সমদর্শীকে অনায়াসে পর্দার ছেলে হিসেবে মেনে নিতে পেরেছিলেন। শিবু তাঁর ভাইয়ের মতো। মিলেমিশে কাজ করতে করতেই ছবি শেষ! সোহিনীর দাবি, ‘‘কোন তকমা গায়ে লাগল, কোন তকমা মুছতে হবে... কোনও দিন ভাবিনি। তাই হয়তো সহজেই রাজি হতে পেরেছিলাম। ‘ইচ্ছে’য় আমি মা হয়েছি নিজের ইচ্ছেয়।’’
সোহিনী এর পরে নন্দিতা-শিবুর ‘অলীক সুখে’-ও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সমদর্শী উইনডোজ প্রযোজনা সংস্থার আর কোনও ছবিতে নেই! এটা কেন? আনন্দবাজার অনলাইন কথা বলেছিল সমদর্শীর সঙ্গেও। বড় পর্দার ‘শমীক’-এর দাবি, এই উত্তর তাঁরও অজানা। এই ছবিটির পরে তিনি তাঁর মতো করে এগোনোর চেষ্টা করেছেন। নন্দিতা-শিবু একের পর এক ভাল ছবি উপহার দিয়ে গিয়েছেন দর্শকদের। তবে আশা হারাননি একেবারে। সমদর্শীর মনে হয়, এখনও অনেক কাজ বাকি পরিচালক-জুটির। সে রকমই কোনও একটি কাজে নিশ্চয়ই আবার ডাক পাবেন তিনি। এ-ও বলেছেন, ‘‘ইচ্ছে’র আগে আমার চারটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল। তবু কেউ আমায় চিনত না। ‘ইচ্ছে’ প্রথম অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে। আর কোনও কাজ না করলেও এই একটি কারণে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব নন্দিতাদি-শিবুদার কাছে।’’
অভিনয়ের পাশাপাশি সমদর্শী পরিচালনাতেও এসেছেন। তাঁর পরিচালিত সিরিজ ‘গাঙ্গুলি ওয়েড গুহজ’-এ নন্দিতা-শিবুর ঘরানার ছায়া। মাত্র একটি ছবিতে অভিনয় করেই কী করে এই বিশেষ ধারা রপ্ত করে ফেললেন? সমদর্শীর কথায়, ‘‘এটাও হয়তো 'ইচ্ছে'র প্রভাব। অভিনয় করতে করতে হয়তো পরিচালনার দিকটাও নজর করতাম। বা ওঁদের গল্প বলার ধরন।’’ এরই সঙ্গে আরও একটি ভাবনা মাথায় ঘুরত তাঁর। যে ছবি মায়ের সঙ্গে বসে দেখা যায়, তেমন ছবিই তিনিও বানাবেন। তারই ছায়া তাঁর প্রথম পরিচালনায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy