প্রত্যুষা মুখ খুললেন পল্লবী-সাগ্নিককে নিয়ে
টানা এক বছর একসঙ্গে থেকেছি, ঘুমিয়েছি, জেগেছি, উঠেছি, বসেছি। গরফাতেই আমাদের ফ্ল্যাট ছিল। ঠিক সেখানেই বাড়িটা পড়ে রয়েছে। কিন্তু পল্লবী নেই। সেই পল্লবী, যাঁর ছোটখাটো সমস্যা হলে আমার পরামর্শ না নিলে একেবারেই চলত না।কী হল এমন! আগের দিনও তো ভালই ছিল। সাগ্নিকের সঙ্গে ঘোরাফেরা করল, খাওয়া দাওয়া করল। ইনস্টাগ্রামে স্টোরি দিল। এমন কী ঘটল যাতে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল?
সাগ্নিক গ্রেফতার হয়েছে। তা বলেই তাকে দোষী বলছি না আমি। কিন্তু একটাই দাবি আমার, যদি ওর একটা ছোট কোনও কথাতেও পল্লবী আত্মহত্যা করে থাকে, তা হলেও তা সবার সামনে আসুক। দোষী শাস্তি পাক।
সাগ্নিকের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার আগে থেকে আমি পল্লবীকে চিনি। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে পল্লবীর সঙ্গে সাগ্নিক, ঐন্দ্রিলা, রেহান (পল্লবীর প্রাক্তন প্রেমিক) আরও অনেকের অনেক বছরের বন্ধুত্ব। ওরা এক জায়গায় থাকত। হাওড়ায়। কিন্তু আমি ওকে যখন থেকে চিনি, তখন সাগ্নিকের নাম শুনতাম, কেবল ওর বন্ধু হিসেবে। ২০২০-র লকডাউনের আগে পর্যন্ত আমি আর পল্লবী গরফার একটি ফ্ল্যাটে থাকতাম। সেখানে একাধিক বার সাগ্নিক ওর ‘স্ত্রী’ সুকন্যাকে নিয়ে আসত। ওরা তিন জন একসঙ্গে ঘুরতেও যেত নানা জায়গায়। তার পরে কবে যে গল্পটা ঘুরে গেল জানি না।
পল্লবীর কাছ থেকেই জানতে পারি, সুকন্যার সঙ্গে সাত বছরের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিল সাগ্নিক। পল্লবীকে বলত, ‘‘দমবন্ধ লাগে। কিন্তু এত বছরের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কোনও খুঁটির প্রয়োজন।’’ আসলে পল্লবীই সেই খুঁটিতে পরিণত হয় সাগ্নিকের জীবনে।
লক়ডাউনে আমি আর পল্লবী যে যার বাড়ি চলে যাই। তার পরে দেখতে পাই, সাগ্নিকের সঙ্গে পল্লবীর প্রেম হয়েছে। ওরা সেই ফ্ল্যাটেই থাকতে শুরু করে। আমি বাড়িতেই থেকে যাই। তার পর গত মাসে ওরা গরফাতেই অন্য একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়। সেখানেই এই ঘটনা।
এর মধ্যে ঐন্দ্রিলার গল্পটা একটু অন্য। রেহানের সঙ্গে যখন পল্লবীর বিচ্ছেদ হয়, ঐন্দ্রিলার খুব খারাপ লেগেছিল। ওর রাগ হয়েছিল পল্লবীর উপরে। ফেসবুকে পল্লবীকে নিয়ে নানা ধরনের আজেবাজে কথা লেখা শুরু করে ও। তখন ঐন্দ্রিলার সঙ্গে পল্লবীর সম্পর্ক তিক্ততায় পরিণত হয়। কিন্তু গত ছ’মাসে আবার ওরা পুরনো বন্ধুত্বটাকে ফিরিয়ে আনে। কিন্তু সেই সময়ে আমি সেটা মেনে নিতে পারিনি। খারাপ লেগেছিল। আমি পল্লবীকে বলতাম, ‘‘যার সঙ্গে এত খারাপ হয়ে গিয়েছিল সম্পর্ক, তার সঙ্গে কেন আবার বন্ধুত্ব করছিস তুই?’’ কিন্তু পল্লবী শোনার মেয়ে নয়। ও আসলে খুব উদার মনের মানুষ ছিল। তিক্ততা ভুলে যেতে পারত। কিন্তু আমি পারিনি। তাই গত ছ’মাস খুব বেশি কথাবার্তা হয়নি আমাদের। কিন্তু সাগ্নিকের সঙ্গে সমস্যা হলে আমাকে ফোন করত। আমি সাহায্য করতাম। এক দিন বলেছিল, ‘‘তোর সঙ্গে কথা না বললে হয় না আমার।’’
গত কয়েক মাসে একে অপরকে সময় দিতে পারছিল না বলে খুব অশান্তি হচ্ছিল ওদের মধ্যে। সে কথা জানায় আমায় পল্লবীই। আমি পরামর্শ দিই, ‘‘কয়েক দিন আলাদা থাক তোরা। একটু শান্ত থাক, তার পরে একে অপরকে ছেড়ে থাকতে না পারলে আবার এক ছাদের তলায় চলে আয়।’’ ঠিক মানিয়েও নিত একে অপরকে।
কিন্তু তার পর কী এমন হল? কেন এমন করলি পল্লবী? এতটাই কষ্টে ছিলি তুই?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy