এক জন প্রবীণ প্রাক্তনী ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। অন্য জন এই মুহূর্তে বলিউডের অন্যতম ‘আইকন’। পুণে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এফটিআইআই)-র অচলাবস্থা কাটাতে উদ্যোগী হলেন দু’জনেই। প্রথম জন সটান এফটিআইআই-তে গিয়ে কথা বলেছেন ডিরেক্টরের সঙ্গে। আর দ্বিতীয় জন বুধবার আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের সমর্থনে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কলা প্রতিষ্ঠানে বাক্-স্বাধীনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্রছাত্রীদের মতামত নিয়েই খোঁজা হোক সমাধানের পথ।
প্রথম জন, শত্রুঘ্ন সিন্হা। দ্বিতীয় জন, রণবীর কপূর।
টিভি অভিনেতা গজেন্দ্র চৌহান গত মাসের গোড়ার দিকে এফটিআইআই-এর চেয়ারম্যান পদে বসা ইস্তক অচলাবস্থা চলছে ওই প্রতিষ্ঠানে। ছাত্রছাত্রী-সহ অনেকেরই মত, ওই পদের যোগ্য নন গজেন্দ্র। তাঁর ইস্তফার দাবি তুলে ইতিমধ্যেই অনির্দিষ্ট কাল ধর্মঘট ডেকেছেন কয়েকশো ছাত্রছাত্রী। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকে চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা। গজেন্দ্র অবশ্য পদে রয়ে গিয়েছেন। ফলে প্রতিষ্ঠানে দিনের পর দিন বন্ধ রয়েছে ক্লাস। ছাত্রছাত্রীরা অনড়ই।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার এফটিআইআই-তে যান পটনা সাহিবের বিজেপি সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হা। ডিরেক্টরের সঙ্গে কথাও বলেন। যদিও সে খবর প্রকাশ্যে এসেছে আজ। শত্রুঘ্ন জানান, কেন্দ্র বা ছাত্রদের তরফে কেউই তাঁকে মধ্যস্থতা করতে বলেননি। প্রাক্তনী হিসেবে নিজের দায়িত্বেই তিনি এগিয়ে এসেছেন। এ দিন ফোনে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সংস্থা আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের। কোনও ভাবেই তাকে সমস্যায় দেখতে চাই না।’’ আর রণবীরের মন্তব্য শোনা গিয়েছে একটি ভিডিও-তে। এফটিআইআই পড়ুয়ারা আজ ওই সাদা-কালো ভিডিওটি পোস্ট করেন ইউ-টিউবে। তাতে দেখা গিয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের মতামত শুনে সমস্যার সমাধান খোঁজার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছেন রণবীর। বলছেন, ‘‘স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কিছু আইন-কানুন থাকলেও বাক্-স্বাধীনতা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্রছাত্রীরা এমন এক জনকে চাইছেন, যাঁকে দেখে তাঁরা অনুপ্রাণিত হবেন। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে দক্ষ শিক্ষক বা সঠিক পাঠ্যক্রম চেয়ে ছাত্রছাত্রীদের এই আন্দোলনকে কোন ভাবেই অযৌক্তিক বলে মানতে পারছি না।’’
অনেকেই মনে করেন, ভারতীয় সিনেমায় মনে রাখার মতো কোনও অবদান নেই গজেন্দ্রর। পদটি তিনি পেয়েছেন স্রেফ বিজেপি-ঘনিষ্ঠতার সুবাদে। এবং তাঁকে চেয়ারম্যান পদে বসিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার আদপে এফটিআইআই-এর উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চাইছে বলেই তাঁদের অভিযোগ। প্রাক্তনী থেকে শুরু করে ফিল্ম বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, ছাত্রছাত্রীদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গজেন্দ্রকে ওই প্রতিষ্ঠানের মাথায় চাপিয়ে দিয়ে ঠিক করেনি কেন্দ্র। রণবীরের গলাতেও কার্যত একই সুর। ভিডিওটিতে তিনি বলেছেন, ‘‘যে এফটিআইআই নিয়ে আমরা সবাই গর্ব করি, সেই প্রতিষ্ঠান ছাত্রছাত্রীদের কাছে চূড়ান্ত হতাশার জায়গায় পরিণত হোক — তা আমরা চাই না।’’
‘সরকারের সিদ্ধান্তে ছাত্রছাত্রীদের কোনও লাভ হবে না’ বলে মন্তব্য করে এফটিআইআই সোসাইটি ছেড়েছেন জাতীয় পুরস্কার জয়ী অসমিয়া পরিচালক জাহ্নু বরুয়া। অভিনেত্রী পল্লবী জোশীও ওই পর্ষদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এই অবস্থায় শত্রুঘ্ন ও রণবীরের বার্তায় কেন্দ্র নড়ে বসে কি না, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy