Advertisement
১৭ মে ২০২৪

স্বপ্ন আর স্বাধীনতার দ্বন্দ্ব

‘লখনউ সেন্ট্রাল’-এর পরিচালক রঞ্জিত তিওয়ারির মুখোমুখি আনন্দ প্লাস ‘লখনউ সেন্ট্রাল’-এর পরিচালক রঞ্জিত তিওয়ারির মুখোমুখি আনন্দ প্লাস

ছবির শ্যুটিংয়ের ফাঁকে ফারহানের সঙ্গে পরিচালক

ছবির শ্যুটিংয়ের ফাঁকে ফারহানের সঙ্গে পরিচালক

রূম্পা দাস
শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৯:২০
Share: Save:

জীবনে যত বিপর্যয়ই আসুক, পরাধীনতার কাছে হার মানতে চায় না কেউই। সেই স্বাধীনতার লড়াইয়ের সঙ্গে বিনি সুতোর মালায় স্বপ্ন বেচার গল্প জুড়েছেন রঞ্জিত তিওয়ারি।

জেলের কয়েদিদের ব্যান্ড তৈরির গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘লখনউ সেন্ট্রাল’। ছবি প্রসঙ্গে পরিচালককে ইংরেজিতে প্রশ্ন করতেই উত্তর এল পরিষ্কার বাংলায়। আসলে রঞ্জিতের বেড়ে ওঠা খাস কলকাতায়। প্রথমে সেন্ট জেমস, পরে ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটিতে পড়াশোনা। পারিবারিক ব্যবসায় মন বসেনি তাঁর। সিনেমার স্বপ্নপূরণ করতে পাড়ি দিয়েছিলেন আরব সাগরপারে। সাহায্য পেয়েছিলেন দাদা গোপাল তিওয়ারির। আর মুম্বইতে পরিচালক নিখিল আডবাণীর সঙ্গে পরিচয় হওয়াটা রঞ্জিতের জীবনে অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট। ‘পাতিয়ালা হাউস’, ‘ডি-ডে’, ‘কাট্টি বাট্টি’র মতো পরপর ছবিতে সহযোগী পরিচালকের ভূমিকায় কাজ করেছেন রঞ্জিত।

লখনউ সেন্ট্রাল জেলের বন্দিদের একঘেয়ে ও বর্ণহীন জীবন থেকে মুক্তি দিতে সিনিয়র সুপারিনটেন্ডেন্ট এগিয়ে এসেছিলেন এক ধাপ। কয়েদিদের নিয়ে তৈরি হয়েছিল ‘হিলিং হার্টস’ নামে গানের ব্যান্ড। এই সত্যি আখ্যানকেই বড় পরদায় রূপ দিয়েছেন রঞ্জিত।

কেন জেলের গল্পই বাছলেন? পরিচালক জানালেন, ‘‘অনেক সময় কোনও অসতর্ক মুহূর্তে আমরা বড় অন্যায় করে ফেলি। সেটা থেকে ফেরত আসা যায় না। তবে কারাগারের ভিতরেও থাকে অন্য জীবন। ‘হিলিং হার্টস’-এর বন্দিরা অন্য কিছু করতে চেয়েছিল। আমিও চাইছিলাম ভাল ছবি বানাতে। তাই বিষয়টা মন ছুঁয়ে গিয়েছিল।’’ অন্য জীবনের গল্প বলতে পরিচালক বেছে নিয়েছেন মোরাদাবাদের পটভূমি। কিষেন মোহন গিরহোত্রর ভালবাসা ছিল গানের প্রতি। ভাগ্যচক্রে একটি খুনের সঙ্গে জড়িয়ে যায় তার নাম। ঠাঁই হয় জেলে। সেখানেই আঁকড়ে ধরে নিজের প্রেম। তৈরি করে গানের ব্যান্ড। ছবিতে অভিনয় করছেন ফারহান আখতার, ডায়না পেন্টি, রনিত রায় প্রমুখ।

প্রথম ছবিতে ফারহানের মতো একজন নির্দেশককে পরিচালনা করাটাও একটা বিরাট প্রাপ্তি রঞ্জিতের। বললেন, ‘‘গল্পটা ফারহানের ভাল লেগেছিল। তাই রাজি হয়ে যান। ছবিতে চরিত্রগুলো বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য অনেক হোমওয়র্ক করতে হয়েছে। ঘুরে দেখেছি তিহাড়, ইয়ারওয়াড়া, লখনউয়ের মতো বড় জেলগুলো। অনেক সময়ে ফারহান নিজে সাজেস্ট করত। আসলে চরিত্রটা ফারহান বহন করছে। ফলে ওর মতামতও গুরুত্বপূর্ণ।’’

বন্দিদের সংশোধন নিয়ে বাংলায় হয়ে গিয়েছে ‘মুক্তধারা’। তবে বাংলা ছবিটি দেখেননি বলেই জানালেন রঞ্জিত। ফলে দুটো ছবির মধ্যে মিল থাকলেও, সেটা পুরোটাই কাকতালীয়। রঞ্জিত মনে করেন, পারিপার্শ্বিকতার শিকার হয়ে যাঁদের গায়ে ‘ক্রিমিনাল’-এর তকমা লাগে, তাঁদের ফের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনাটাও আমাদেরই কাজ। কারণ তাঁরাও এই সমাজেরই অংশ। কিন্তু ‘লখনউ সেন্ট্রাল’-এ আলাদা কী? পরিচালক জানালেন, স্রেফ বন্দিশালা নয়, এটা সংশোধনাগারের গল্প। কয়েদিদের ঘটনা, শ্যুটিংও জেলে। অথচ কোথাও ডার্ক শেডের ছোঁয়া নেই।

স্বপ্নের উড়ান ও মুক্তির দ্বন্দ্ব নিয়েই ছবি। আর পরিচালকের নিজের পছন্দ কী? ‘‘সে জন্য তো হলে গিয়ে ছবিটা দেখতে হবে,’’ হাসতে হাসতে বললেন রঞ্জিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE