Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Roopa Ganguly on Mamata Shankar

‘মমদি বিখ্যাত মহিলা বিজেপির পিছন ধরে হননি’, লাইভে এসে ফুঁসে উঠলেন পদ্মশিবিরের রূপা

টলিপাড়ার বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্করের একটি মন্তব্য ঘিরে প্রায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে নেটপাড়ায়। এ বার মমতার হয়ে বিজেপিকে তুলোধনা করলেন রূপা!

Roopa Ganguly speaks up about bjp and some social media influencer amid mamata shankar controversy

(বাঁ দিকে) মমতা শঙ্কর। রূপা গঙ্গোপধ্যায় (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ ১৬:৩৬
Share: Save:

দিন কয়েক ধরে সমাজমাধ্যমের পাতায় উত্তাল শাড়ি বিতর্ক। ‘রাস্তার ল্যাম্পপোস্ট’ বা ‘শাড়ির আঁচল’ বা ‘বুকে শাড়ির আঁচল’-এর মতো শব্দবন্ধ দৃষ্টি আকর্ষণ করছে অনেকেরই।এর নেপথ্যে রয়েছে টলিপাড়ার বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্করের একটি মন্তব্য। সম্প্রতি আনন্দবাজার অনলাইনে অভিনেত্রীর একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। ওই সাক্ষাৎকারে বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর কিছু বক্তব্য নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। টলিপাড়ার এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের একাধিক ব্যক্তিত্ব এই প্রসঙ্গে সমাজমাধ্যমে অভিনেত্রীর পক্ষে বা বিপক্ষে মতামত জানিয়েছেন। সমাজের একাংশ বেজায় চটেছেন মমতা শঙ্করের ব্যবহৃত শব্দবন্ধে। এ বার মমতা শঙ্করের সমর্থনে ফুঁসে উঠলেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপধ্যায়। তাঁর নিশানায় পদ্মশিবির-ঘনিষ্ঠ নেটপ্রভাবী রাখি মিত্র।

শনিরাতে ফেসুবক লাইভে এসে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পার্টির ঘনিষ্ঠ এই নেটপ্রভাবীকে বলেন, ‘‘রাজনীতির মোড়কে বেঁচে থাকে। অসভ্য, অশিক্ষিত, অপদার্থ মহিলা যার নিজের জীবনে কিচ্ছু হয়নি, সে বলবে মমতা শঙ্করের বক্তব্যের সমালোচনা করে। মমতা শঙ্করের নখের যোগ্য নয়। হতে গেলে চার জন্ম লেগে যাবে। মমদি পৃথিবীবিখ্যাত মহিলা বিজেপির পিছন ধরে হননি। চারটে পার্টির পতাকা নিয়ে বেকার কথা বলছেন অসভ্য মহিলা। মমতা শঙ্কর আগে তৈরি হোন তার পর কথা বলবেন রাখি মিত্র (বিজেপি-ঘনিষ্ঠ যে নেটপ্রভাবীর উল্লেখ করা হচ্ছে)।’’

যদিও রাখি কী বলেছেন মমতা শঙ্করকে নিয়ে তার উল্লেখ করেননি রূপা। তাঁর কথায়, ‘‘চারটে ভিডিয়ো বানিয়ে পয়সা রোজগারের ধান্দা। চারটে রিল বানিয়ে টাকা রোজগার করার এটাই এই রাজ্যে পদ্ধতি। এই করে তুই কোথায় পৌঁছবি! তোমাদের মতো অপদার্থ, কুলাঙ্গারদের জন্য পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির এই দুর্দশা। এত আস্পর্ধা হয় কী ভাবে রাখি মিত্রের। এত বড় দুঃসাহস! সবই মনিটাইজ়েশনের জন্য করছে। মমতা শঙ্করকে নিয়ে এত বড় কথা বলার অধিকার পশ্চিমবঙ্গে ক’টা লোকের আছে। রাজনীতির মোড়কে বাঁচা বদমাইশ কতগুলো।’’

কিন্তু কী এমন কথা বলেছিলেন মমতা শঙ্কর যেখান থেকে এ হেন বিতর্কের জন্ম? তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, নতুন প্রজন্মের নারীদের সাজ নিয়ে তাঁর কী ভাবনাচিন্তা? উত্তরে নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী বলেন, ‘‘আজকাল শাড়ি পরব, কিন্তু আঁচল ঠিক থাকবে না! ঠিক বুঝতে পারি না। আগে যাঁদের আমরা রাস্তার মেয়ে বলতাম, যাঁরা ল্যাম্পপোস্টের নীচে দাঁড়িয়ে থাকেন, তাঁরা ওই ভাবে দাঁড়াতেন।’’ এরই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘গ্রামে মহিলাদের কাজ করতে গিয়ে হয়তো আঁচল সরে যেত। তাতে কোনও দোষ ছিল না। আর ওঁরা (যৌনকর্মী) তো পেশার তাগিদে পুরুষদের আকর্ষণ করার জন্য ও ভাবে শাড়ি পরে থাকেন।’’ অভিনেত্রীর এই বক্তব্য নিয়েই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। তাতেই প্রায় গেল গেল রব। কিন্তু অভিনেত্রীর এই মন্তব্যের পর যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তাতে অনেকেই কোণঠাসা করেছেন তাঁকে। কিন্তু রূপা গঙ্গোপাধ্যায় সমর্থন করেছেন তাঁকে। এবং বিজেপি পার্টির যাঁরা সমালোচনা শুরু করেছেন শিল্পীর, তাঁদের রেয়াত করেননি। রূপার সাফ কথা, ‘‘মমতা শঙ্করকে নিয়ে কোনও বাজে কথা সহ্য করব না। তাতে আমার পার্টি যা ইচ্ছে তাই করতে পারে।’’ পাশপাশি তিনি এ-ও জানান মমতা শঙ্করের পরিবারের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। এক জন শান্ত, ভদ্র মার্জিত মহিলা খুব সাবধানে কয়েকটা কথা যদি বলেন, তাঁকে নিয়ে সমালোচনা সহ্য করবেন না রূপা। রূপা এ-ও বলেন, ‘‘আমি প্রতি সন্ধ্যেবেলায় এক একটা রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টের ধারে ঘুরে বেড়াই। যাঁদের খাবার জোটে না, তাঁদের খাওয়াই। কিন্তু ছবি পোস্ট করি না।’’ খানিক হঙ্কার দিয়েই রূপা বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে মমতা শঙ্কর নিয়ে কথা বলতে গেলে ভেবেচিন্তে বলবে। আর ওঁকে নিয়ে কটু কথা বলতে গেলে আমাকে তোমাদের ফেসবুক থেকে ‘আনফ্রেন্ড’ করে দিয়ো।’’ যদিও হঠাৎ রাতে এসে কেন এমন রণংদেহি মূর্তি রূপার, সে বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে পাওয়া যায়নি বিজেপির এই নেত্রীকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE