শাকিব
কখনও বোর্ডের নির্বাচকদের ‘বাঞ্চ অব জোকারস’ বলে বিতর্কে জড়িয়েছেন। কখনও বিশ্বের তাবড় তাবড় বোলারকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছেন। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল এবং ফাইনালে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ হয়ে সকলকে আবার তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের আগে কেউ যদি ‘কামব্যাক কিং’ হন, তা হলে তিনি মহিন্দর অমরনাথই। ‘এইটিথ্রি’ ছবিতে এ রকমই একটি বর্ণময় চরিত্রে অভিনয় করতে চলেছেন শাকিব সালিম।
রিয়্যাল লাইফের মহিন্দর অমরনাথকে রিল লাইফে তুলে ধরতে কতটা পরিশ্রম করতে হয়েছে? ‘‘জিমি স্যর (অমরনাথ) ভীষণই শান্ত, ধীরস্থির। আমি এক মিনিটে ৫০০ লাইন বলি। আর উনি এক মিনিটে একটা লাইন বলেন কি না সন্দেহ! তবে যে কথাটা বলেন, সেটা খুবই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন। ওঁর চরিত্রে অভিনয় করার জন্য আমাকে রীতিমতো মেডিটেশন করতে হয়েছে,’’ এক নাগাড়ে কথাগুলো বলছিলেন শাকিব। এর সঙ্গেই যোগ করলেন, ‘‘প্রায় ছ’ মাস ধরে আমি জিমি স্যরের খেলার ভিডিয়ো মন দিয়ে দেখেছি। তাঁর হাতের গ্রিপ কেমন ছিল, ব্যাক লিফ্ট কতটা উপরে ছিল... এই টেকনিক্যাল বিষয়গুলো জানা সহজ ছিল না।’’
শাকিব নিজে ক্রিকেটার ছিলেন। সেটা নিশ্চয়ই কাজে লেগেছে? নস্ট্যালজিক গলায় বললেন, ‘‘ক্রিকেটটা খুব সিরিয়াসলি খেলতাম। দিল্লির হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ খেলেছি। মা কাশ্মীরি। তাই এক বছর কাশ্মীরের হয়েও ক্রিকেট খেলেছি। ভাবতাম, জাতীয় দলের হয়েও খেলব। তবে ১৯ বছর বয়সে উপলব্ধি করলাম, ক্রিকেট আমার হবি হতে পারে, কিন্তু কেরিয়ার নয়। কারণ জাতীয় দলে ঢোকার তালিকায় আমার চাইতেও বহু ভাল ক্রিকেটারের লাইন রয়েছে। তবে এই ছবির মাধ্যমে আমার স্বপ্নপূরণ হচ্ছে। জাতীয় দলের জার্সিতে শুধু বিশ্বকাপ খেলাই নয়, জেতারও স্বাদ পাচ্ছি। আর কী চাই!’’
ইতিমধ্যেই ‘বম্বে টকিজ়’, ‘রেস থ্রি’-সহ বেশ কিছু ছবিতে নজর কেড়েছেন শাকিব। নতুন ওয়েব সিরিজ় ‘ক্র্যাকডাউন’-এ দেখা যাবে তাঁকে। সেই সঙ্গে ‘টাইম টু ডান্স’ ছবিটিতেও রয়েছেন। তবে শাকিব সবচেয়ে বেশি উদ্গ্রীব ‘এইটিথ্রি’-র মুক্তি নিয়ে। অভিনেতার দাবি, এই ছবিটি নাকি তাঁর কেরিয়ারে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ।
শুটিং শুরুর আগে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় সাত দিনের ওয়র্কশপ হয়েছিল। সেখানে মহিন্দর অমরনাথ নিজে উপস্থিত ছিলেন। কী টিপ্স দিয়েছিলেন? শাকিব বললেন, ‘‘পুরো সময়টাই আমি জিমি স্যরের সঙ্গে কাটাতাম। ওঁর ব্যক্তিগত জীবন, বাবা লালা অমরনাথের সঙ্গে সম্পর্ক, জীবনের ভাল-খারাপ প্রতিটা দিক জানার চেষ্টা করেছি। উনি কী ভাবে হাঁটেন, কথা বলেন, সেগুলো লক্ষ্য করেছি।’’ অমরনাথে মুগ্ধ শাকিব আরও বলছিলেন, ‘‘আমি স্যরকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, মাইকেল হোল্ডিং, বলের গতির জন্য যাঁকে ‘হুইসপারিং ডেথ’ বলা হত, সেই বোলারের মুখোমুখি তিনি কী ভাবে হতেন? এই প্রশ্ন শুনে গম্ভীর মুখে স্যর বলেছিলেন, ‘ওঁর বলে এত গতি ছিল যে, কোনও কিছু ভাবার সময় থাকত না। শুধু বল লক্ষ্য করে ব্যাটের মাঝখান দিয়ে মারার চেষ্টা করতাম। আমি তোমাকে সেটাই করতে বলব। বাকিটা তোমার অভিনয়।’’
সুনীল গাওস্করের চোখে মহিন্দর অমরনাথ হলেন শ্রেষ্ঠ শিল্পী ক্রিকেটার। সেই চরিত্রকে শাকিব সালিম কতটা ফুটিয়ে তুলতে পারবেন, সে কথা সময়ই বলবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy