মায়ের সঙ্গে আলিয়া
তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে ‘থার্টি সিক্স চৌরঙ্গি লেন’, ‘মান্ডি’, ‘সারাংশ’, ‘ত্রিকাল’, ‘খামোশ’। তবে সোনি রাজদান বলেন, ‘‘আমি তো আলিয়ার মা।’’ অনেক দিন নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন। এগারো বছর পর এই এপ্রিলে ফিরলেন ছোট পরদায়।
কামব্যাকের সবচেয়ে কষ্টকর দিকটা কী? ‘‘অনেক। শ্যুটিংয়ের কী লম্বা সময় রে বাবা! সিনেমায় তবু তো কয়েক দিন শ্যুটিং করেই অভিনেতাদের ছুটি। টিভিতে কোনও ব্রেকই নেই! তার উপর কস্টিউম। সারা জীবন ঘুরে বেরালাম জিন্স-টিশার্টে। এখানে পরতে হচ্ছে রাজমাতার কস্টিউম! তার উপর এই গরম। আসলে আমার নিজের ছবিটা শুধু পিছিয়ে যাচ্ছিল। ভাবলাম, ঠিক আছে ‘লাভ কা হ্যায় ইন্তেজার’ সিরিয়ালের কাজটা সেরে নিই আগে,’’ হাসতে হাসতে বলছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন নানাবতী মার্ডার কেস নিয়ে ছবি বানাবেন, ‘লাভ অ্যাফেয়ার’। স্ক্রিপ্টও তৈরি। কিন্তু শ্যুটিং এখনও শুরু করতে পারেননি, বাজেটের সমস্যায়।
চরিত্রাভিনেতা হিসেবে তাঁর সমকক্ষ খুঁজে পাওয়া শক্ত। তবে নিজেকে আটকে রাখলেন ‘প্যারালাল’ সিনেমায়। ‘‘আমার কোনও দিন নায়িকাদের ইঁদুর দৌড় পছন্দ ছিল না,’’ স্পষ্ট জানান তিনি। অনেকে বলেন, তাঁর পশ্চিমি চেহারা, ছোট চুল, ওয়েস্টার্ন পোশাক... সে সময়ের বলিউড নিতে পারত না। সোনি রাজদান তাই আর ও পথে যাননি। ‘লুক’ই কি তাঁর সবচেয়ে বড় শত্রু? বেশ কয়েক সেকেন্ড থেমে বললেন, ‘‘হতে পারে। নিজেকে তো আর বদলাতে পারতাম না। আয়নায় নিজেকে দেখতামও না। এখনও দেখি না। আমি যেমন, তেমনই থাকব। আর ধুর, এখন ও সব ভেবেই বা কী করব!’’
তাঁর ভাবনা জুড়ে এখন দুই মেয়ে, আলিয়া আর শাহিন। জানালেন, ‘ভয়’ না হলেও চিন্তায় থাকেন মেয়েদের নিয়ে। স্বীকার করলেন, ‘‘অবশ্যই চিন্তায় থাকি। বিশেষ করে আলিয়াকে নিয়ে। এত বেশি কাজ করে! ভাবি মেয়েটার শরীর না খারাপ হয়। কত বলি বিশ্রাম নিতে, কিন্তু কিছুতেই কথা শুনবে না।’’ মাত্র সতেরো বছর বয়সে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকে পড়ায় তাঁর মনে হয়েছিল, বড্ড আগে আগে কাজে ঢুকে পড়লেন আলিয়া। ‘‘আরও কিছুদিন টেনশন-মুক্ত জীবন কাটাতে পারত,’’ বলেন আলিয়ার মা সোনি।
হাসতে হাসতে বলছিলেন, আলিয়া কোনও শ্যুটে বেরোলে, এখন নাকি টুইটার-ইনস্টাগ্রামে নজর রাখেন মেয়ের উপর। ‘‘ওহ, আর কত কী যে শিখতে হবে এই বয়সে! ওর জন্যই শিখতে হয়েছে ইনস্টাগ্রাম,’’ গলায় মায়ের টেনশন। কিন্তু মহেশ ভট্টর মেয়ে না হলে কি এত সহজে ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকতে পারতেন আলিয়া? ‘‘হয়তো পারত না। এখন নিজের যে জায়গাটা করে নিয়েছে, সেটা মহেশ ভট্টর মেয়ে বলে নয়। ওটা নিজের জোরে,’’ মায়ের গলাতেও ততটাই জোর।
কথায় কথায় বলছিলেন, ‘কফি উইথ কর্ণ’ শোয়ের পর, সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল্ড হতে হতে একদিন নাকি কেঁদেই ফেলেছিলেন আলিয়া। ‘‘আমি তো তার আগে জানতামই না ‘ট্রোল’ কাকে বলে। বলেছিলাম, লোকের কথায় কান দিস না। এদের পাত্তা দেওয়ার থেকে জীবনে আরও অনেক কিছু আছে।’’ কিন্তু এখন তো আলিয়া বাড়ি ছেড়ে আলাদা থাকছেন। এ রকম টিপ্স তো আর দিতে পারেন না?
‘‘আসে তো সব সময় দেখা করতে। তা ছাড়া ওরা বড় হচ্ছে। ওদের তো আলাদা জীবন থাকবেই,’’ গলায় যেন হালকা বিষণ্ণতার ছোঁয়া সোনি রাজদানের!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy