Advertisement
০২ মে ২০২৪
Alipurduar

উত্তরবঙ্গেও ছিল সৌমিত্রের নাড়ির টান, ফিরবেন না তিনি, ভাবতেই পারছে না আলিপুরদুয়ার

ষাটোর্ধ্ব দিলীপ বললেন, ‘ ‘হাসপাতালে ভর্তির কয়েকদিন আগেও ফোনে কথা হয়েছিল। বলেছিল ভাল আছেন। এমনটা হয়ে যাবে ভাবতেও পারিনি। আবার অরণ্যে পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম আমি। শ্যুটিং শুরুর আগে পৌছে গিয়েছিলাম।’’

'আবার অরণ্যে'-এর একটি দৃশ্য।

'আবার অরণ্যে'-এর একটি দৃশ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২০ ২১:৫৩
Share: Save:

সৌমিত্রের প্রয়াণে শোকাহত উত্তরবঙ্গে সৌমিত্রের আলিপুরদুয়ার শহরের নিউটাউন প্রভাত সঙ্ঘ এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী দিলীপকুমার দত্ত। সৌমিত্রের একাধিক আলাপচারিতায় উত্তরবঙ্গের এই মানুষটির নাম উঠে এসেছে। 'আবার অরণ্যে' ছবিতে সৌমিত্রের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, জয়ন্তীতে শ্যুটিং সেরে সেই সময়, ২০০৩ সালে সৌমিত্র থেকে ছিলেন আলিপুরদুয়ার ক্লাউড লাইন ভবনে। অদূরেই দিলীপের বাড়ি। তাই ‘ক্লাউড লাইনে’ রাত্রিযাপন করলেও সন্ধ্যার টিফিন সারতে আসতেন দিলীপের বাড়িতে। ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করা সেই মানুষটি আজ আর নেই, ভাবতেই পারছেন না দিলীপ।

ষাটোর্ধ্ব দিলীপ বললেন, ‘ ‘হাসপাতালে ভর্তির কয়েকদিন আগেও ফোনে কথা হয়েছিল। বলেছিল ভাল আছেন। এমনটা হয়ে যাবে ভাবতেও পারিনি। আবার অরণ্যে পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম আমি। শ্যুটিং শুরুর আগে পৌছে গিয়েছিলাম।’’ শ্যুটিংয়ের কথায় যেন মশগুল হয়ে গেলেন দিলীপ। বললেন, ‘‘তখন চালসায় শ্যুটিং চলছিল। মস্করা করে বলেছিলেন, এই পুলিশ তো এত তাড়াতাড়ি ঘটনাস্থলে আসে না। তুই এত তাড়াতাড়ি চলে এলি? সে কত স্মৃতি!’’

আলিপুরদুয়ারের সঙ্গে অনেকখানি সৌমিত্রের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। দিলীপবাবু জানালেন, ‘‘আলিপুরদুয়ার শহরের জীবন দত্ত সরণি সৌমিত্রদার হাত দিয়ে উদ্বোধন হয়েছিল। তিনি প্রথমে যেতে চাইছিলেন না। সুভাষ চক্রবর্তী ফোন করেছিলেন। তার পর জীবন দত্ত সরণির উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর আবার আমার বাড়িতেই ফিরেছিলেন। আজ কোথায় চলে গেলেন সব শূন্য করে। যে শূন্যস্থান তৈরি হল, তা পূর্ণ হওয়ার নয়।’’

আলিপুরদুয়ারে একাধিকবার এসেছেন তিনি। তবে ২০০৩ সালে আবার অরণ্যের শ্যুটিং হয়েছিল জয়ন্তীতে। তখন জয়ন্তীতে থাকা খাওয়ার তেমন কোন ভাল ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। সেই কারণে শ্যুটিং সেরে আবার আলিপুরদুয়ারে ফিরে আসতে হত। জয়ন্তী সেবার সৌমিত্রবাবুকে থাকতে দিতে পারেনি। গোটা জয়ন্তী এখনও সেই আক্ষেপে পুড়ছে। জয়ন্তীর শেখর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ জয়ন্তী নদীর খাতে শ্যুটিং হয়েছিল। তখন জয়ন্তীতে থাকা খাওয়ার তেমন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। সেই কারণে থাকতে দিতে পারিনি সৌমিত্রবাবুকে। আজও খুব আক্ষেপ হয়। এর পরও একাধিকবার আলিপুরদুয়ার এসেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ডুয়ার্স, আর ডুয়ার্সের এই প্রান্তিক শহরের সঙ্গে যেন নাড়ির যোগ ছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE