বিবেক।
শিক্ষক-গণিতবিদ আনন্দ কুমারের সংস্থার জন্য শহরে একটি স্কলারশিপ প্রোগ্রামের উদ্বোধনে এসেছিলেন বলিউড অভিনেতা বিবেক ওবেরয়।
প্র: মণি রত্নমের ‘যুবা’ ছবির জন্য কলকাতায় শুট করেছিলেন। এই শহরের সুখস্মৃতি আর কী কী রয়েছে?
উ: যখন কলেজে পড়তাম, তখন ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার হিসেবে কলকাতায় পারফর্ম করেছি ইন্ডি-পপ গানের অনুষ্ঠানে। ‘কোম্পানি’, ‘সাথিয়া’ ছবির সাফল্যের পরে কলকাতায় বারকয়েক এসেছি। তার পরে মণি স্যরের ছবির শুটিংয়ে আমি, অভিষেক (বচ্চন), অজয় (দেবগণ) একসঙ্গে অনেকটা সময় কাটিয়েছি। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপরে আমার অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল। সেটা অবশ্য সুখস্মৃতি নয় (হাসি)। এই শহরের প্রতিভা ও এসথেটিক্সকে সম্মান করি।
প্র: বাংলা ছবি দেখেন?
উ: শেষ ছবি ‘কণ্ঠ’ দেখেছি। শিবকে (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়) বলেছি, ভাল লেগেছে।
প্র: বাংলা ছবি করবেন?
উ: বাংলা ছবি করার খুব একটা ইচ্ছে নেই। ঋতুদা (ঋতুপর্ণ ঘোষ) একটা বাংলা ছবির প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন আমার কাছে। বিষয়টা খুবই ভাল লেগেছিল। কিন্তু পরে ঋতুদাই বলেছিলেন, ছবিটা হিন্দিতে করবেন। বাংলার একটা বড় সমস্যা, এখানে সিনেমার মার্কেট সে ভাবে ডেভেলপ করেনি। এ দিকে দুনিয়ায় বাংলাভাষী মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিন্তু কমার্শিয়াল দিক থেকে এই ছবিগুলোর যে জায়গা তৈরি হওয়া উচিত ছিল, সেটা এখনও হয়নি। এর পিছনে কয়েক দশকের সরকারের ব্যর্থতা না কি মানুষের অসহযোগিতা, সেটা বলতে পারব না।
প্র: প্রযোজক হিসেবে বলিউডে নতুন জার্নি শুরু করেছেন...
উ: অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। হরর থ্রিলার, আরবান লেজেন্ডদের নিয়ে গল্প... অন্য ধরনের কনটেন্ট দেখতে পাবেন।
প্র: অভিনেতা বিবেক ওবেরয়কে দর্শক কিন্তু মিস করেন...
উ: জানি। আসলে খুব সচেতন ভাবেই বিরতি নিয়েছিলাম। এক সময়ে পরপর ছবি করেছি। তার পর ওয়েব সিরিজ় ‘ইনসাইড এজ’-এর তিনটে সিজ়ন শুট করলাম। ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’ করলাম। প্রযোজনার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়িক কাজ রয়েছে, স্টার্ট আপে ইনভেস্ট করেছি। এ বার অভিনয় নিয়েও ভাবনাচিন্তা করব (হাসি)।
প্র: গত বছর সুশান্ত সিংহ রাজপুতের শেষকৃত্যে আপনি উপস্থিত ছিলেন। ওঁর সঙ্গে কি আলাপ ছিল?
উ: আক্ষেপ হয়েছিল, যদি ওর পাশে থাকতে পারতাম, ওকে গাইড করতে পারতাম। বারবার মনে হয়েছিল, ইন্ডাস্ট্রির মেন্টর, সিনিয়র বা বন্ধুবান্ধবের ওর পাশে থাকার খুব দরকার ছিল। আমি যখন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন কিছু না জানিয়ে অক্ষয় (কুমার) একদিন আমার বাড়িতে এসেছিল। কত গল্প করল, আমাকে মোটিভেট করল... ভাল লেগেছিল আমার। ইন্ডাস্ট্রিতে এই সৌহার্দ্যটুকু থাকা উচিত। না হলে এটা খুব স্বার্থপরের জায়গা। যদি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের পরিবেশ আরও ভাল করে তুলতে পারি, তবে সুশান্তকে শ্রদ্ধা জানানো সার্থক হবে।
প্র: সুরেশ ওবেরয়ের ছেলে হিসেবে আপনি ইন্ডাস্ট্রির ইনসাইডার। তা সত্ত্বেও কঠিন সময় পেরোতে হয়েছে। ইনসাইডার-আউটসাইডার বিতর্কে নিজেকে ঠিক কোন জায়গায় রাখতে চাইবেন?
উ: এই বিতর্কটা খুব অপ্রাসঙ্গিক আমার কাছে। দুটো বিষয় পরিষ্কার। ইনসাইডার হোক বা আউটসাইডার, প্রতিভা থাকলে এখানে থাকার অধিকার রয়েছে, না থাকলে নয়। ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিভার বিচার হওয়া উচিত। প্রতিভা সেলিব্রেট করা উচিত। কিন্তু প্রতিভা দেখে অনেকেই বিপদের আঁচ করেন। অনেক সময়ে সেই মেরিট দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেটা খুবই কষ্টের।
প্র: নিজের কেরিয়ারে এই সত্যি কতটা উপলব্ধি করেছেন?
উ: আমার ক্ষতি যারা করতে চেয়েছিল, তারা নেতিবাচক ভাবনার মানুষ। আমি তাদের কথা ভাবি না। অতীত তো পাল্টাতে পারব না। কিন্তু আমি কাজ করায় বিশ্বাস করি। শ্রেয়স (তলপড়ে) কলেজে আমার সিনিয়র ছিল। ও নতুন একটা ব্যবসা শুরু করার আগে আমার পরামর্শ চেয়েছিল। আমি ওকে সাহায্য করলাম। ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই এখন বিভিন্ন বিষয়ে আমার সাহায্য চায়।
প্র: বলিউডে প্রোপাগান্ডা ছবির চল বেড়েছে। এটা কি ভাল ট্রেন্ড?
উ: প্রোপাগান্ডা ছবি বলতে কী বোঝাচ্ছেন? যদি সাঁই বাবাকে নিয়ে ছবি করি, তার মানে কি তাঁর প্রচার করছি? যদি কলকাতার ব্যাকড্রপে কমিউনিস্ট পার্টির নেতার চরিত্রে অভিনয় করি, তবে কি আমি কমিউনিজ়মের প্রচার করছি? জীবনে কোনও দিন কমিউনিস্ট পার্টিকে ভোটও দিইনি!
প্র: সিনেমা-সিরিজ়ে একটি বিশেষ ভাবাদর্শকে বারবার দেখানো হলে, সেটা প্রোপাগান্ডা নয় কি?
উ: একটা ছবিকে সমালোচনা করার স্বাধীনতা যেমন মিডিয়ার রয়েছে, তেমনই কোন বিষয়ে কী ধরনের ছবি বানাবেন, তারও পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে পরিচালক-প্রযোজকের। দর্শকের ভাল লাগলে দেখবেন, না হলে দেখবেন না।
প্র: এই প্রজন্মের কোন অভিনেতাকে বেশি ভাল লাগে?
উ: রণবীর (সিংহ)। ওর সঙ্গে আমার খুব ভাল সম্পর্ক। আয়ুষ্মান (খুরানা) যে ধরনের সাহসী কনটেন্ট বেছে নিচ্ছে, তা প্রশংসনীয়। আমাদের সময়ে এত এক্সপেরিমেন্টের সুযোগ ছিল না। দর্শকও অনেক পরিণত এখন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy