দোলের দিন অবোলা জীবদের গায়ে রং না দেওয়ার অনুরোধ করলেন টলিপাড়ার সদস্যরা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মঙ্গলবার দোলযাত্রা। বসন্ত উৎসবে মানব জীবনে রঙের ছোঁয়া। কিন্তু প্রতি বছর আনন্দের দিনেও প্রকাশ্যে আসে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা। তার মধ্যে মানুষের হিংসার অন্যতম ‘শিকার’ হয় সারমেয়রা। প্রতি বছর তারকারা পোষ্যদের রক্ষার্থে সচেতনতার বার্তা দেন। কিন্তু তাতে কি কোনও লাভ হয়? উত্তর পেতে টলিপাড়ার কয়েক জন অভিনেতা থুড়ি পোষ্যপ্রেমীর সঙ্গে কথা বলেছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
পথকুকুরদের পাশে দাঁড়াতে শ্রীলেখা মিত্রর ভূমিকা নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। সম্প্রতি, জোকার আবাসনে ছ’টি পথকুকুরকে বিষ খাওয়ানোর ঘটনায় সোচ্চার হয়েছিলেন তিনি। শ্রীলেখা সাফ বললেন, ‘‘দোল ভালবাসার উৎসব। সেই ভালবাসা পশুপাখিদের ক্ষেত্রেও যাতে বজায় থাকে সেটাই আমার আশা। জেনেক্স ভ্যালিতে যারা ওই জঘন্য কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, তাঁদের অন্তত আমি মানুষ বলে মনে করি না। যাঁদের মধ্যে এখনও একটু হলেও মায়া-মমতা সর্বোপরি মন্যুষ্যত্ব রয়েছে আমার বার্তা তাঁদের জন্য।’’
কিন্তু বছরের পর বছর সারমেয়দের সুরক্ষায় বার্তা দেন বিশিষ্টরা। কতটা উন্নতি চোখে পড়েছে? শ্রীলেখার কথায়, ‘‘আসলে ভাল-খারাপের মিশেলেই তো সমাজ। আজও বাচ্চাদের জন্য বিস্কুট কিনতে গেলে পাড়ার দোকানি বলেন যে সব বিস্কুট দিতে পারবেন না। কারণ আরও অনেকে নাকি কুকুর খাওয়ানোর জন্য বিস্কুট কিনবেন।’’ তাই শ্রীলেখার বিশ্বাস, ‘‘কিছুটা হলেও তো মানুষ সচেতন হয়েছেন। ভাল-খারাপের মধ্যে আগামী দিনে ভালর পাল্লাই ভারী হবে এই আশা রাখি।’’
পথকুকুরদের উপর হিংসার ঘটনায় বিভিন্ন সময়ে গর্জে উঠেছেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত। বলছিলেন, ‘‘রং খেলাই হোক বা কালীপুজোর বাজি পোড়ানো— যাঁরা মানসিক ভাবে বিকারগ্রস্ত তাঁদের অনুরোধ করেও কোনও লাভ হয় না। আমরা তো রং খেলার পর সেটা পরিষ্কার করতে পারি। পোষ্যরা পারে না। রঙের ক্ষতিকারক রাসায়নিকের জন্য ওদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।’’ এই প্রসঙ্গেই দেবলীনা যে কর্মফলে বিশ্বাস করেন তা স্পষ্ট করলেন। বললেন, ‘‘বিষ খাইয়ে দেওয়া হচ্ছে! সেখানে রং না দেওয়ার কথা কেউ শুনবেন কি না জানি না। তবে কেরলের ঘটনা সকলের জানা। এনআরএস-এ কুকুর পেটানোর ঘটনায় অভিযুক্তদের কী শাস্তি হয়েছিল আমরা সেটা দেখেছি। তাই অবোলা জীবের উপর অত্যাচার করলে তার ফল পেতেই হবে।’’
দোলের প্রাক্কালে সোমবার পোষ্যদের গায়ে রং না দেওয়ার বার্তা দিতে সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। সেই সূত্র ধরেই বললেন, ‘‘বুঝতে হবে আমরা যে রং ব্যবহার করি সেটা পশুদের কথা ভেবে তৈরি হয় না। তাই ওই রং থেকে ওদের ত্বকের ক্ষতি হয়। অবোলা প্রাণীকে কষ্ট দিয়ে আনন্দ পাওয়া যে যায় না সেই মনোভাব প্রত্যেকেরই থাকা উচিত।’’ সেই সঙ্গেই অনিন্দ্য মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘পশুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে দেশে কঠোর আইন রয়েছে। বড়দের থেকে বাড়িতে ছোটরাও এগুলো শিখলে আগামী দিনে সারেময়দের জীবনটাও একটু সহজ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy