শ্রীলেখা মিত্র।
আজন্ম মেয়েদের কোনও নিজেদের বাড়ি নেই। জন্ম বাবার বাড়িতে। নির্দিষ্ট বয়সের পরে স্বামীর বাড়িতে। শেষ বয়সে ছেলের হাতে তোলা! অথচ নারীর ‘আমার বাসা’ বলার ইচ্ছে বহু দিনের। একুশ শতক কি সেই ইচ্ছে পূরণ করবে? ৮ মার্চ, ‘নারী দিবস’-এর ঠিক আগের দিন সোমবার শ্রীলেখা মিত্র আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন, নারীর এই চাহিদাও অধরা নেই। শহর কলকাতায় এমন বহু নারী আছেন, যাঁরা নিজেদের উপার্জনে নিজেদের মাথা গোঁজার ঠাঁই জোগাড় করেছেন।
কী ভাবে? শ্রীলেখা নিজেই বানিয়েছেন ‘আমার বাসা’। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘তখনও আমি বিচ্ছিন্ন নই। তখনই নিজের উপার্জন জমিয়ে দক্ষিণ কলকাতায় একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলাম। যেটি সম্পূর্ণ আমার। তাই যখন মেয়েকে নিয়ে আমি একা, তখন মা-বাবা-ভাইয়ের আশ্রয়ের উপরে নির্ভরশীল হতে হয়নি। যদিও আমার মেয়ে তার মা-বাবা উভয়ের কাছেই থাকে।’’ শ্রীলেখার পরিবারে তিনিই প্রথম বিবাহ-বিচ্ছিন্ন। তাই মা-বাবাকে কষ্টে ফেলতে রাজি হননি। একইসঙ্গে অভিনেত্রীর মনে হয়েছিল, ‘‘মায়ের কাছে গিয়ে ওঠা মানে তাঁর স্বামীর বাড়িতে গিয়ে ওঠা! ওটা তো মায়েরও নিজের বাড়ি নয়। ফলে, ওই বাড়িকে কী করে ‘আমার বাড়ি’ বলতে পারি?’’
‘আমার’— এই অধিকার বোধ থেকেই দক্ষিণ কলকাতার সেই বাড়ির নাম হয় ‘আমার বাসা।’ যে বাড়ির পাপোশ থেকে রান্নাঘরের উপকরণ, সৌন্দর্যায়ন— সব কিছুরই একছত্র অধিপতি শ্রীলেখা স্বয়ং। পরে যদিও সেই বসত বাড়ির ঠিকানা বদলেছে। শ্রীলেখা উঠে গিয়েছেন অন্য কোথাও। নতুন ফ্ল্যাটটিও নিজের উপার্জনেই কেনা। এ বার তাঁর ইচ্ছে জমি, বাংলো বা স্টুডিয়ো বাড়ি করা। যেখানে নিজের পাশাপাশি তাঁর পোষ্যরাও নিশ্চিন্তে মাথা গুঁজতে পারবে। কেউ তাদের অবস্থান নিয়ে অভিযোগের আঙুল তুলবে না।
শ্রীলেখার নতুন স্বপ্ন তাই ‘আমাদের বাসা’। তার আগে সমস্ত নারীর কাছে অভিনেত্রীর আর্জি, ‘‘এক জন পুরুষের মতো এক জন নারীরও নিজস্ব কিছু সম্পত্তি থাকা দরকার। যা তাকে নিরাপত্তা দেবে। নিজের বাড়ি দিয়েই না হয় শুরু হোক সেই পদক্ষেপ!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy