Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

গোপন ডেরায় হানা, ২ সেনা-সহ নিহত ৭

বৈঠক সারতে কুলগামের লুকনো ঘাঁটিতে জড়ো হয়েছে সাত জঙ্গি। গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে আজ ভোর রাতেই হানা দেয় সেনা ও পুলিশের বাহিনী। প্রথমে তল্লাশি চলে স্থানীয় এক দর্জির বাড়িতে। কিন্তু কোথায় কী! সন্দেহ হওয়ায় দ্বিতীয় বার ঘুরে ফের ওই বাড়িতেই আসে সেনা। আর এ বার ছাদের ফলস্ সিলিং খুলতেই ছুটে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি।

ভাণ্ডোরিয়া গোপাল সিংহ ও (ডান দিকে) রঘুবীর সিংহ। — নিজস্ব চিত্র

ভাণ্ডোরিয়া গোপাল সিংহ ও (ডান দিকে) রঘুবীর সিংহ। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:০৩
Share: Save:

বৈঠক সারতে কুলগামের লুকনো ঘাঁটিতে জড়ো হয়েছে সাত জঙ্গি। গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে আজ ভোর রাতেই হানা দেয় সেনা ও পুলিশের বাহিনী। প্রথমে তল্লাশি চলে স্থানীয় এক দর্জির বাড়িতে। কিন্তু কোথায় কী! সন্দেহ হওয়ায় দ্বিতীয় বার ঘুরে ফের ওই বাড়িতেই আসে সেনা। আর এ বার ছাদের ফলস্ সিলিং খুলতেই ছুটে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি।

রবিবার জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগাম জেলার নাগবাল গ্রামে এক গোপন ডেরায় এই সংঘর্ষে চার জন জঙ্গিকে খতম করেছে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ও রাজ্য পুলিশ। জঙ্গিদের পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয়েছে রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের দুই জওয়ানের। আহত এক নাগরিক পরে হাসপাতালে মারা যান।

স্থানীয় চার জঙ্গির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা গ্রাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায় বাহিনী। তাতে নিহত হন এক যুবক। আহত হন ১৫ জন বিক্ষোভকারী।

শ্রীনগরের ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে নাগবাল গ্রামে ওই গোপন আস্তানায় জঙ্গি বৈঠকের খবর আগেই গোপন সূত্রে জেনেছিল সেনাবাহিনী। গোয়েন্দারা জানিয়েছিলেন, জঙ্গিরা জড়ো হবে মহম্মদ শফি রেশি নামে স্থানীয় এক দর্জির বাড়িতে। এক সেনা কর্তা জানান, শনিবার রাত বারোটা নাগাদ এলাকাটি ঘিরে ফেলে নিরাপত্তা বাহিনী। ভোর রাত তিনটে নাগাদ শুরু হয় তল্লাশি-অভিযান। যদিও প্রথমে ওই দর্জির বাড়ি থেকে সন্ধান মেলেনি সন্দেহভাজন কোনও ব্যক্তির। দ্বিতীয় বার খোঁজাখুঁজির সময়ে সঙ্গে নেওয়া হয় ওই দর্জির ছেলেকে। সেই সময়ই হঠাৎ ছাদের ফলস্ সিলিংটি নজরে আসে বাহিনীর। জোর করে সেটি খুলতেই ভিতর থেকে গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। পাল্টা জবাব দেয় সেনাও। প্রায় দশ ঘণ্টা ধরে চলে গুলির লড়াই। পরিস্থিতি সামলাতে অনন্তনাগ থেকে নিয়ে আসা হয় অতিরিক্ত বাহিনী।

আরও পড়ুন।

জঙ্গি দমনের কম্যান্ডো-শিক্ষা অবশেষে শহরে

জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারান দুই জওয়ান রঘুবীর সিংহ (৩১) এবং ল্যান্স নায়েক ভাণ্ডোরিয়া গোপাল সিংহ(৩৩)। রঘুবীর গুজরাতের আমদাবাদ ও ভাণ্ডোরিয়া উত্তরাখণ্ডের চামোলির বাসিন্দা বলে জানিয়েছে সেনা। সংঘর্ষে জখম হন তিন সেনা। তাঁদের হেলিকপ্টারে শ্রীনগরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সেনার দাবি, নিহত জঙ্গিদের দু’জন লস্কর-ই-তইবা ও দু’জন হিজবুল মুজাহিদিনের সদস্য। তাদের নাম মুদ্দাসির আহমেদ তান্ত্রে, ওয়াকিল আহমেদ থোকার, ফারুক আহমেদ ভাট এবং মহম্মদ ইউনিস। বাকি তিন জঙ্গি অন্ধকারে গা-ঢাকা দিয়েছে বলে দাবি সেনার। সংঘর্ষের আগে দর্জি মহম্মদ শফি রেশির পরিবারের পাঁচ সদস্যকে বাইরে বের করে এনেছিল সেনা। কিন্তু তাঁর ছেলে সেনার সঙ্গে থাকায় জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন দর্জির ছেলে আদিল রেশি।

সেনা-অভিযানে জঙ্গি হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়তেই পথে নামে স্থানীয় মানুষ। এক লড়াই শেয হতে না হতেই শুরু হয়ে যায় আর এক লড়াই। বিক্ষোভকারীদের থামাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ ও আধাসেনা। তাতেও কাজ না হওয়ায় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালানো হয়। তাতে জখম হন ১৫ জন। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যু হয় ২১ বছরের মুস্তাক আহমেদ লাটুর।

অন্য বিষয়গুলি:

Kulgam militants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE