কৃতকর্মের জন্য তাঁর কোনও অনুশোচনা নেই! জানাচ্ছেন আফতাব। ফাইল চিত্র।
তাঁর নির্দয়তার প্রমাণ মিলেছিল আগেই। এ বার পলিগ্রাফ পরীক্ষায় শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে খুনে অভিযুক্ত, তাঁর একত্রবাসের সঙ্গী আফতাব আমিন পুণাওয়ালা জানালেন, কৃতকর্মের জন্য তাঁর কোনও অনুশোচনা নেই! প্রেমিকা এবং একত্রবাসের সঙ্গী শ্রদ্ধাকে খুন করার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনিই যে দেহটিকে টুকরো টুকরো করেন এবং জঙ্গলে গিয়ে ফেলে দেন, তা-ও স্বীকার করেছেন তিনি। তবে মঙ্গলবারের পলিগ্রাফ পরীক্ষায় সব অপরাধের কথা নিজের মুখে স্বীকার করে নিলেও এর জন্য তাঁর কোনও অনুতাপ নেই বলে জানিয়েছেন আফতাব।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, পলিগ্রাফ টেস্ট কিংবা নার্কো-অ্যানালিসিস টেস্টে তদন্তকারীদের প্রশ্নের উত্তর কী ভাবে দিতে হবে, তার মহড়া আগে থেকেই নিয়ে রেখেছিলেন আফতাব। সচরাচর এই পরীক্ষায় নিয়ন্ত্রিত মাদক কিংবা উত্তেজক পদার্থ অভিযুক্তের শরীরে প্রয়োগ করে তাঁকে অবচেতনের নানা স্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে অভিযুক্ত তদন্তকারীদের প্রশ্নের মুখে মিথ্যা বলার সুযোগ তেমন একটা পান না।
তবে এই পরীক্ষাগুলির ভিত্তিতে পাওয়া তথ্যকে অপরাধ প্রমাণের ক্ষেত্রে খুব একটা ব্যবহার করা যায় না। যদিও পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করার জন্য এই পরীক্ষাগুলির আলাদা একটা গুরুত্ব আছে। দিল্লি পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, জেরায় বার বার তাঁদের বিভ্রান্ত করেছেন আফতাব। দিল্লির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে দেহাংশগুলি উদ্ধার হয়েছে, সেগুলি শ্রদ্ধারই কি না, তা জানতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু সেই পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও পুলিশের কাছে এসে পৌঁছয়নি। তাই আফতাবের বিরুদ্ধে আদালতে পেশ করার মতো শক্তপোক্ত তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহে তাঁকে অর্ধচেতন অবস্থায় জেরা করতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার নার্কো-অ্যানালিসিস পরীক্ষার পরবর্তী ধাপের জন্য আফতাবকে দিল্লির রোহিনীর ল্যাবে নিয়ে যাওয়া হবে। এ বিষয়ে নিম্ন আদালতের তরফে প্রয়োজনীয় অনুমতি দেওয়া হয়েছে দিল্লি পুলিশকে।
প্রসঙ্গত, ছ’মাস আগে ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলীতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুনের অভিযোগ রয়েছে প্রেমিক আফতাবের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, এর পর তিনি শ্রদ্ধার দেহ ৩৫ টুকরো করেন। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে কেনা হয়েছিল নতুন ফ্রিজও। পরে ১৮ দিন ধরে ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসার অভিযোগও রয়েছে আফতাবের বিরুদ্ধে।
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ ১২ নভেম্বর আফতাবকে গ্রেফতার করে। সেই নিয়েই চলছে তদন্ত। তদন্তে নেমে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। একটি ধারালো করাতও খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। মনে করা হচ্ছে এই করাত দিয়েই শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলেন অভিযুক্ত আফতাব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy