দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে অরবিন্দ কেজরীবালের কাছে মুখ থুবড়ে পড়েছিল বিজেপি। সেই রাজধানীতেই কেজরীবালের দলকে তৃতীয় স্থানে ঠেলে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আসন জিতে নিল বিজেপির ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের পুরভোটে জেতার পরে বেঙ্গালুরুতে ধাক্কা খেলেও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটে জয়কে ধরে কেজরীবাল ও কংগ্রেসকে বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপি। এই জয় তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি কারণে।
l গত ক’দিন ধরেই কেজরীবাল বিভিন্ন আঞ্চলিক দলকে জাতীয় স্তরে একজোট করার চেষ্টা করছেন। নীতীশকুমার দিল্লি এসেও কেজরীবালকে বিহারে আমন্ত্রণ জানিয়ে গিয়েছেন। এই অবস্থায় বিজেপি আজ বলার সুযোগ পেল, মাত্র ছ’মাসেই কেজরীবালের বিরুদ্ধে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। তাঁর নেতিবাচক ও সংঘাতের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে দিল্লির যুবসমাজ।
l সংসদে কংগ্রেসের বিরোধিতায় সংস্কারের পদক্ষেপ আটকে যাওয়ার পর থেকে খোদ নরেন্দ্র মোদী সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন প্রতিটি সভাতেই। রাজধানীর ছাত্রভোটে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের পরাজয়ে বিজেপি এ বার আক্রমণাত্মক হওয়ার সুযোগ পাবে।
আজ সকালে ফল প্রকাশ হতেই তাই অরুণ জেটলি এবিভিপি-কে অভিনন্দন জানিয়েছেন । পরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী জগৎপ্রকাশ নড্ডা বিজেপি দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করেও কংগ্রেসকে ফের উন্নয়ন-বিরোধী বলে আক্রমণ করেন। বলেন, ‘‘সংসদ স্তব্ধ রেখে উন্নয়নকে রোখাই কংগ্রেসের মূল লক্ষ্য। লোকসভা ভোটে মানুষ তাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন। এ বারে যুবসমাজও সেই রায় দিল।’’ দিল্লি বিধানসভায় হারের পর সেটিকে নরেন্দ্র মোদীর পরাজয় বলে স্বীকার করেনি বিজেপি। কিন্তু আজ ছাত্র সংগঠন জিততেই বিজেপি নেতারা মোদীর জয়ধ্বনি করতে শুরু করেন।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন নির্বাচনে এ বারেই প্রথম ভোটে লড়ে আপের সংগঠন ‘ছাত্র-যুব সংঘর্ষ সমিতি’। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীই ছিলেন প্রচারের মুখ। দিল্লি জুড়ে তাঁরই পোস্টার দিয়েছিল আপের ছাত্র সংগঠন। কেজরীবাল নিজেও প্রচার করেছেন। আজ হারের পরে কেজরীবালের ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অন্যদের মতো অর্থবল ও বাহুবল ব্যবহার করতে পারেনি বলেই হার হয়েছে তাদের। কিন্তু বিজেপি, এমনকী কংগ্রেসও বলছে, আম আদমি পার্টি সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেছে এই ভোটে। সে কারণে ছাত্ররা তাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। কংগ্রেসের মুখপাত্র শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গোটা ভোটে অরবিন্দ কেজরীবাল নিজে প্রচারের মুখ ছিলেন। তাঁর নামেই পোস্টার পড়েছে। বিপুল অর্থ খরচ করা হয়েছে। ক্লাসে গিয়ে শিক্ষকের আপত্তি সত্ত্বেও আম আদমি পার্টির বিধায়কও প্রচার করেছেন।’’
দিল্লির কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেনের কথায়, ‘‘অরবিন্দ কেজরীবালের এ বারে আত্মসমীক্ষা করা উচিত, মাত্র ছ’মাসে তাঁদের এই ভয়ানক পরিস্থিতি হল কেন?’’ যে যোগেন্দ্র যাদবকে কেজরীবাল বহিষ্কার করেছেন, তিনিও আজ কেজরীবালের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ‘‘নতুন রাজনীতিকেরা পুরনো রাজনীতিকদের দোষ অনুকরণ করলে এই দশাই হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy