Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
National news

জঙ্গিদলে যোগ দিলেন কাশ্মীরি গবেষক!

রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেলের এই ছবি দেখে হতবাক তাঁর পরিবার। বাক্‌রুদ্ধ তাঁর বন্ধুবান্ধবরাও।

গ্রেনেড লঞ্চার হাতে মান্নানের সেই ছবি। ছবি: টুইটার।

গ্রেনেড লঞ্চার হাতে মান্নানের সেই ছবি। ছবি: টুইটার।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ১৫:১১
Share: Save:

মেধাবী ছাত্রটির আজকের ছবির সঙ্গে যেন কোনও মিলই খুঁজে পাচ্ছিল না তাঁর পরিবার। চোখে চশমা নেই। মুখ থেকে সেই নিরীহ ভাবটাও উধাও। সারা দিন যে হাতে বই নাড়াচাড়া করতেন তিনি, সেই হাতেই শক্ত করে ধরে রয়েছে গ্রেনেড লঞ্চার! আর তার নীচে লেখা, জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনে যোগ দিলাম।

রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেলের এই ছবি দেখে হতবাক তাঁর পরিবার। বাক্‌রুদ্ধ তাঁর বন্ধুবান্ধবরাও।

মান্নান ওয়ানি। দক্ষিণ কাশ্মীরের কুপওয়ারার বাসিন্দা। ২৬ বছরের ওই যুবক আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করতেন। ফলিত ভূতত্ত্ববিদ্যায় পিএইচডি করছিলেন তিনি। ২০১৬-য় ভোপালে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তাঁর গবেষণাপত্র প্রথম স্থান অদিকার করে।

ভোপালে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন মান্নান।

এমন এক জন মেধাবী ছাত্র হঠাৎ জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিলেন কেন? জবাব খুঁজে পাচ্ছে না তাঁর পরিবার।

ওই যুবকের ভাই মুবাশির আহমেদ পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। তিনি জানিয়েছেন, দু’দিন আগেও সব কিছু ঠিকঠাক ছিল। মান্নান রোজ ফোনে যোগাযোগ রাখতেন পরিবারের সঙ্গে। সম্প্রতি ছুটি নিয়ে তাঁর বাড়ি ফেরার কথাও ছিল। তিনি যে আলিগড় থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন, সে কথাও জানিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: দমনেই শান্তি অধরা কাশ্মীরে, চিদম্বরমের তির মোদীর দিকে

কিন্তু, গত ৪ তারিখ থেকে আর মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। বাড়ি পৌঁছনোর নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তিনি বাড়ি না ফেরায় শনিবার স্থানীয় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় বলে জানিয়েছেন মুবাশির। ডায়েরি করার পরের দিনই ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপে মান্নানের এমন একটি ছবি প্রকাশ্যে আসে। মান্নান যে হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়েছেম, ওই ছবির নীচে তা-ও লেখা। রাজ্য পুলিশ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।

তবে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নির্বাচনে খুবই সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল মান্নানকে। ‘দ্য কম্পানিয়ন ডট কম’ নামে একটি অনলাইন পোর্টালও রয়েছে তাঁর। সেখানে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে প্রচুর লেখালেখি করেন মান্নান। সেই পোর্টালে তাঁর পরিচয় হিসাবে লেখা রয়েছে, জিওপলিটিক্স এবং ইসলামিক মুভমেন্টে উৎসাহ থাকা এক জন ছাত্রনেতা।

হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীতে যোগ দিচ্ছেন কাশ্মীরি যুবকরা। এ বিষয়ে বহু বছর ধরেই উদ্বেগে কেন্দ্র। কাশ্মীরি যুবকরা যাতে জঙ্গি সংগঠনগুলোর মগজধোলাইয়ের শিকার না হন, সে চেষ্টা এখনও চালাচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু কোনও ভাবেই তা যে বন্ধ করা যাচ্ছে না, তার প্রমাণ মান্নানের যোগ দেওয়া। আবার গত ৩১ ডিসেম্বর সকালে পুলওয়ামায় সশস্ত্র বাহিনীর ক্যাম্পে অতর্কিতে হামলা চালায় যে তিন জঙ্গি তার মধ্যে নিহত কিশোর আহমেদ খান্ডের বাবা জম্মু-কাশ্মীর পুলিশে কর্মরত। পরিবারের অজান্তে সে-ও জঙ্গি দলে যোগ দিয়েছিল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE