আশাক শাহ
বান্দিপোরার গ্রাম থেকে রওনা দিয়েছিলেন সার্ন-এ। এ বার সেখান থেকে পাড়ি দিচ্ছেন ইলিনয়ের ফের্মিল্যাবে। তাঁর দীর্ঘ বিজ্ঞান-সফরে তাক লাগিয়েছেন কাশ্মীরের ছেলে আশাক শাহ।
বান্দিপোরার পাপাচান এলাকার বাসিন্দা শাহ একেবারেই মধ্যবিত্ত বাড়ির ছেলে। প্রাথমিকের পড়াশোনা থেকে দ্বাদশ, সবটাই করেছেন সাধারণ সরকারি স্কুলে। তার পর শ্রীনগরের বেমিনায় সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক। কাশ্মীর যখন একের পর এক জঙ্গি হামলায় উত্তপ্ত, গোলা-বারুদের ধোঁয়ায় ঢেকে, শাহ স্বপ্ন দেখে গিয়েছেন পরমাণু গবেষণা নিয়ে। ভেবেছেন, কী ভাবে পৌঁছনো যায় ‘ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার ফিজিক্স’ (সার্ন)-এর গবেষণাগারে। কী ভাবে কাজ করা যায় আমেরিকার ইলিনয়ে বিখ্যাত ফার্মিল্যাব-এ।
এক-এক করে কঠিন সব পরীক্ষার ধাপ পেরিয়ে শাহ সুযোগ পেয়ে যান মুম্বইয়ের ‘ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার’ (বার্ক)-এ যোগ দেওয়ার। পরে ‘মেডিক্যাল অ্যান্ড রেডিয়েশন ফিজিক্স’ নিয়ে গবেষণার সুযোগ পান। সুযোগ আসে পরমাণু শক্তি বিষয়ক দফতরে কাজ করারও। কিন্তু ‘এত অল্পে’ খুশি হননি কাশ্মীরি তরুণ। ‘হিগস বোসন’ নিয়ে গবেষণার স্বপ্ন দেখে গিয়েছেন তিনি। ২০১৩ সালে ইটালির ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিয়োরিটিক্যাল ফিজিক্স’ (আইসিটিপি)-এ যোগ দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যান। যদিও তখনও হাতে পাসপোর্ট নেই। শাহ যোগ দেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানকার ‘রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ দলে।
২০১৫-য় শিকে ছেঁড়ে। পাসপোর্ট হাতে পেতেই সুইৎজারল্যান্ডের জেনিভায় পাড়ি দেন শাহ। সার্ন-এ সিলিকন সেন্সরস নিয়ে কাজ এবং বিএসএম হিগস বোসন কণা নিয়ে তাঁর গবেষণায় সাফল্য আসতেই ফার্মিল্যাব থেকে ফেলোশিপ মেলে।
আর কয়েকটা মাসের অপক্ষো। এক রাশ স্বপ্ন নিয়ে আগামী বছরের শুরুর দিকে আমেরিকার ফের্মিল্যাব পাড়ি দিচ্ছেন শাহ। বললেন, ‘‘ফের্মিল্যাবে কাজ করার এই সুযোগ পেয়ে আমি সত্যিই গর্বিত। কাশ্মীরের আরও বহু তরুণ-তরুণী গবেষণার কাজে গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ুক, এই আশাই রাখি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy