—ফাইল চিত্র
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ রুখতে দিল্লি সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকদের পথেই হাঁটার পরিকল্পনা করছে ব্যাঙ্ক কর্মী ও অফিসারদের ইউনিয়নগুলি।
আগামী ১৫ এবং ১৬ মার্চ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বিক্রির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে দেশ জুড়ে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ ইউনাইটেড ফোরাম অব ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন্স। তার আগে মোদী সরকারের উদ্দেশে একাংশের হুমকি, কেন্দ্রের আনা তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে যেমন সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়েছেন কৃষকেরা, বেসরকারি সংস্থাকে ব্যাঙ্ক বেচার চেষ্টা বন্ধ না-হলে তেমনই মাটি কামড়ে নাছোড় আন্দোলনে নামবেন কর্মীরা। প্রয়োজনে লাগাতার ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাকও দেওয়া হবে, জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশন (আইবক) এবং অল ইন্ডিয়া স্টেট ব্যাঙ্ক অফিসার্স ফেডারেশন (আইসবফ)। তাদের দাবি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে দক্ষ হাতে পরিচালনার ব্যবস্থা না-করে বিক্রির এই কৌশলে আখেরে ক্ষতিই হবে কর্মী ও গ্রাহকদের। ফলে সেটা আটকাতে রোদ, ঝড়, জল উপেক্ষা করে একটানা প্রতিবাদ ছাড়া পথ নেই।
কেন্দ্রকে তাঁদের কথা শুনতে বাধ্য করার জন্য কৃষকদের আন্দোলন যে উৎসাহ জোগাচ্ছে, সে কথা বলছে ব্যাঙ্ক শিল্পে কর্মী-অফিসারদের অন্যান্য ইউনিয়নও। তবে কোনও কোনও পক্ষের দাবি, আন্দোলনের ধাঁচ সকলের ক্ষেত্রে এক রকম না-ও হতে পারে। যদিও চূড়ান্ত পর্যায়ে তার ঝাঁঝ বাড়াতে লাগাতার ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে অধিকাংশই। গ্রাহক-সহ ব্যাঙ্ক শিল্পের বাইরের সকলের সহযোগিতা চাওয়া হবে বলেও জানিয়েছে তারা।
২০০৬ সালে স্টেট ব্যাঙ্কে টানা ৭ দিন ধর্মঘটের পরে পেনশন বৃদ্ধির দাবি আদায়ের নজিরের কথা উল্লেখ করে সম্প্রতি স্টেট ব্যাঙ্ক অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভার শেষে আইবকের সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত এবং আইসবফের সভাপতি দীপক কুমার শর্মা বলেন, ‘‘এ মাসের ১৫, ১৬ তারিখে ধর্মঘটের পরেও কেন্দ্রের টনক না-নড়লে লাগাতার ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দেব।’’ তাঁদের তোপ, এতদিন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অন্তত ৫১% অংশীদারি নিজেদের হাতে রেখে বাকিটা বিক্রির কথা বলত এই সরকার। এ বার গোটা ব্যাঙ্কই বেচে দিতে ময়দানে নেমেছে। শুধু ব্যাঙ্ক নয়, বেশিরভাগ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা থেকেও হাত তুলে নিয়ে বেসরকারি সংস্থার খুঁটি শক্ত করতে চায় তারা।
সৌম্যবাবুর দাবি, ‘‘কেন্দ্রের ওই পরিকল্পনা রুখতে জোট বাঁধবে ব্যাঙ্ক-সহ সব রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। যৌথ আন্দোলন সংগঠিত করতে আলোচনা শুরু করব। কৃষি আইনের বিরুদ্ধে যে ভাবে মাটি কামড়ে আন্দোলন করছেন কৃষকেরা, সেই ধাঁচে প্রতিবাদ চলবে।’’
কর্মী ইউনিয়ন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশনের (এআইবিইএ) সভাপতি রাজেন নাগরের বার্তা, ‘‘সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে লাগাতার ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি। তার আগে এক-দু’দিনের ক’দফা ধর্মঘট ডাকতে পারি।’’ টানা ধর্মঘটের কথা বলছেন ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ় ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস বসু চৌধুরীও। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রের বেপরোয়া মনোভাবের পরিচয় পেয়েছি। ফলে এটা ছাড়া পথ নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy