Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Bhopal Gas Tragedy

ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের নির্দেশ পেতে কেন্দ্রকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট

১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর গভীর রাতে মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ইউনিয়ন কার্বাইড নামে একটি কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস লিক হয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি মতে, মৃতের সংখ্যা ছিল ৫,২৯৫।

দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ মানতে নারাজ ভারত সরকার-সহ ভোপালের দুর্ঘটনাগ্রস্ত এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ মানতে নারাজ ভারত সরকার-সহ ভোপালের দুর্ঘটনাগ্রস্ত এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:৪৪
Share: Save:

ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ বাড়ানোর জন্য কি আবেদন করবে ভারত সরকার? এ নিয়ে কেন্দ্রের কাছ থেকে নির্দেশ পেতে আগামী ১১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

এই গ্যাস দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই ভারত সরকারকে ৪৭ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতিপূরণ দিয়েছে ইউনিয়ন কার্বাইড। যদিও এই ক্ষতিপূরণ মানতে নারাজ ভারত সরকার-সহ ভোপালের দুর্ঘটনাগ্রস্ত এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই মামলা চলছে।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিশান কলের নেতৃত্বাধীন সাংগঠনিক বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে সওয়াল করা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার কাছে বিচারপতি কলের মন্তব্য, ‘‘এই মামলায় (ক্ষতিপূরণ বাড়ানোর জন্য) কিউরেটিভ পিটিশন দাখিল করা হবে কি না, তা নিয়ে সরকারের অবস্থান জানাতে হবে।’’ যদিও ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের হয়ে সওয়াল করা আইনজীবী করুণা নন্দী বলেন, ‘‘সরকারের সিদ্ধান্ত যা-ই হোক না কেন, শীর্ষ আদালতে শুনানি চালিয়ে যাওয়া উচিত। তবে আদালত জানিয়েছে, কিউরেটিভ পিটিশনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নিজের অবস্থান স্পষ্ট করা না পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করতে রাজি।’’ আইনজীবীর দাবি, এই দুর্ঘটনায় মৃত, আহত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সংখ্যা পাঁচ গুণ বেড়েছে। সে সময় আদালতের প্রশ্ন, ক্ষতিপূরণের পরিমাণে কি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদল ঘটতে থাকবে। বিচারপতি কলের মন্তব্য, ‘‘চিরস্থায়ী অনিশ্চয়তা বলে কিছু থাকতে পারে না। কারণ কোনও কিছুরই আদর্শ পরিস্থিতি নেই।’’

প্রসঙ্গত, ১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর গভীর রাতে মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ইউনিয়ন কার্বাইড নামে একটি কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস লিক হয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ঘুমের মধ্যেই মারা যান ওই কারখানার আশপাশের বহু বাসিন্দা। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ছিল ৫,২৯৫। যদিও বেসরকারি মতে, মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে শারীরিক ক্ষতি হয় সাড়ে পাঁচ লক্ষেরও বেশি বাসিন্দার। সেই সঙ্গে অগুণতি পশুপাখিরও মৃত্যু হয়। সম্পত্তি নষ্ট হয় ৫,৪৭৮ জনের। এ নিয়ে দীর্ঘ দিনের মামলা চলার পর ২০১০ সালে ওই কারখানার নিচুতলার আট আধিকারিককে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। তবে সেই মামলায় ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আজও নিষ্পত্তি হয়নি। বিপুল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিলেও ইউনিয়ন কার্বাইডের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৭,৪০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চায় ভারত সরকার। বর্তমানে আমেরিকার ডাও কেমিক্যাল, কলকাতার ম্যাকলয়েড রাসেল ইন্ডিয়া এবং এভারেডি ইন্ডাস্ট্রিজের অধিগ্রাহক সংস্থা হল ইউনিয়ন কার্বাইড কর্পোরেশন। ২০২১ সালে এই সংস্থাকে নোটিস পাঠিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার আগে ক্ষতিপূরণ বৃদ্ধির দাবিতে বার বার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ভারত সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE