ফের মুখ্যমন্ত্রী হলেন ক্যাপ্টেন। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ ১০ বছর পর পঞ্জাবের মসনদে ফিরল কংগ্রেস সরকার। মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ। তবে জল্পনায় জল ঢেলে উপমুখ্যমন্ত্রী করা হল না কাউকেই। মন্ত্রিসভার তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে শপথ নিলেন নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। সকলকে বেশ খানিকটা চমকে দিয়েই শপথ শেষে ক্যাপ্টেনের পা ছুঁলেন তিনি। ‘ফিল গুড’ এই ছবিতে তুলির আলতো টান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তরফেও। টুইটারে মোদী ফের শুভেচ্ছা জানালেন পঞ্জাবের নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে।
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন শেষ একমাত্র পঞ্জাবেই সরকার গড়তে পেরেছে কংগ্রেস। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুর বিজেপি দখল করেছে। গত ১০ বছর পঞ্জাবে ক্ষমতাসীন ছিল যে অকালি-বিজেপি জোট, এ বার সে জোট পঞ্জাবে তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে অনেকগুলি আসন বেশি পেয়ে সরকার গড়েছে কংগ্রেস। আসনসংখ্যার বিচারে অনেক পিছিয়ে থাকলেও প্রধান বিরোধী দল হয়েছে আপ। বিজেপি-র একাধিক বারের সাংসদ নভজ্যোৎ সিংহ সিধু এ বার পঞ্জাব নির্বাচনের মাসখানেক আগেই কংগ্রেসে যোগ দেন। অমরেন্দ্র সিংহের নেতৃত্ব মেনে কাজ করতে সিধুর অসুবিধা থাকতে পারে, এমন জল্পনা যথেষ্টই ছিল পঞ্জাবের রাজনীতিতে। অমরেন্দ্র মুখ্যমন্ত্রী হলে সিধু উপমুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন, এমন ফর্মুলায় রফা হয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছিল। তবে সে বিষয়ে সিধু নিজে তো ননই, ক্যাপ্টেন বা রাহুল গাঁধীও কখনও কোনও মন্তব্য করেননি। বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বোঝা গেল, সিধুকে মন্ত্রিসভায় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিচ্ছে কংগ্রেস। তবে উপমুখ্যমন্ত্রী পদ তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না। অমরেন্দ্র সিংহ মুখ্যমন্ত্রী পদের শপথ নেওয়ার পর পঞ্জাবের প্রবীণতম কংগ্রেস বিধায়ক ব্রহ্ম মহীন্দ্রা মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। অর্থাৎ মন্ত্রিসভায় অমরেন্দ্র পরেই তাঁর স্থান। এর পরই শপথ নেন সিধু। অর্থাৎ মন্ত্রিসভার তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে সিধুকে স্বীকৃতি দিল কংগ্রেস।
শপথ গ্রহণের পর রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র ও তাঁর মন্ত্রীরা। ছবি: পিটিআই।
ক্যাপ্টেন এবং সিধুর মধ্যে টানাপড়েনের জল্পনা যতই থাক, দু’জনের কেউই নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন সে কথা বুঝতে দেননি। ঐক্যের বার্তাই দিয়েছেন। শপথ অনুষ্ঠানেও সিধু বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, পঞ্জাবে কংগ্রেস ঐক্যবদ্ধ। শপথ বাক্য পাঠ করার পর অমরেন্দ্র সিংহের পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নিলেন তিনি। সিধু আগের মতো এ দিনও বলেছেন, তিনি রাহুল গাঁধীর সৈনিক। পঞ্জাবের সমৃদ্ধির জন্য তিনি যে কোনও আত্মত্যাগে প্রস্তুত। অমরেন্দ্র সিংহও একই ভাবে সিধুর ব্যক্তিত্বের প্রতি সৌজন্য দেখিয়ে জানিয়েছেন, নভজ্যোৎ সিংহ সিধুর ভূমিকা স্বয়ং রাহুল গাঁধীই নির্ধারণ করবেন, পঞ্জাবের কোনও কংগ্রেস নেতা তা নির্ধারণ করবেন না।
আরও পড়ুন: রাহুলকে বাঁচাতে আত্মত্যাগের ঢল
সিধু এবং তাঁর ক্যাপ্টেনের মধ্যে সৌজন্য-প্রতি সৌজন্যের সুবাদে পঞ্জাবে এখন যে ‘ফিল গুড’ মেজাজ, তাকে নরেন্দ্র মোদী এ দিন আরও একটু সমৃদ্ধ করলেন। টুইটারে তিনি লিখলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য আপনাকে অভিনন্দন ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র। পঞ্জাবের উন্নয়নে কাজ করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।’’ নির্বাচনের ফল বেরনোর পরও অমরেন্দ্রকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন মোদী।
অমরেন্দ্র সিংহ আগেই জানিয়েছিলেন, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে একেবারেই সাদামাটা হবে। পঞ্জাবের মাথার উপর ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকার দেনার বোঝা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শপথ গ্রহণের জন্য বিপুল খরচ তিনি করতে চান না, এমনই জানিয়েছিলেন তিনি। কথা মতো যথা সম্ভব অনাড়ম্বরেই সেরে ফেলা হয়েছে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ পর্ব। কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy