Advertisement
০১ মে ২০২৪
Bharat Jodo Nyay Yatra

‘হিংসায় প্ররোচনা, পুলিশের উপর হামলা’, হিমন্তের নির্দেশে রাহুলের বিরুদ্ধে তদন্তে সিআইডি

বুধবার হিমন্ত বলেছিলেন, ‘‘আমরা একটি ‘সিট’ (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠন করব। ‘সিট’ মামলাটির তদন্ত করবে এবং লোকসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পরে আমরা তাঁকে (রাহুল) গ্রেফতার করব।’’

(বাঁ দিকে) অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা। রাহুল গান্ধী (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা। রাহুল গান্ধী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:৩৬
Share: Save:

তাঁর নির্দেশে মঙ্গলবার রাহুল গান্ধী এবং তাঁর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র সঙ্গী কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে অশান্তি বাধানোর অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছিল অসম পুলিশ। এ বার মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সেই মামলার তদন্তের ভার দিলেন সিআইডি-কে। অসম পুলিশের ডিজি বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্টে জানিয়েছেন, সিআইডি ‘বিশেষ তদন্তকারী দল’ (সিট) গড়ে গুয়াহাটিতে মঙ্গলবারের অশান্তিপর্বের ঘটনার তদন্ত করবে।

রাহুল-সহ কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে বেআইনি জমায়েত, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, জনতাকে হিংসায় প্ররোচনা দেওয়া, সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করা এবং পুলিশের উপর হামলার মতো ন’টি ফৌজদারি ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রসঙ্গত, বিজেপি নেতা হিমন্ত বুধবার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, লোকসভা ভোটের পালা শেষ হলেই রাহুলকে গ্রেফতার করবে তাঁর পুলিশ। কিন্তু এফআইআর দায়ের করা হলেও এখনই কেন রাহুল এবং তাঁর সহ-অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না? জবাবে হিমন্ত বলেন, ‘‘এখনই গ্রেফতার করা হলে ওঁরা বিষয়টিকে রাজনৈতিক প্রচারের হাতিয়ার করবেন।’’

মঙ্গলবার সকালে গুয়াহাটিতে অশান্তির পরেই এক্স হ্যান্ডলে হিমন্ত লিখেছিলেন, ‘‘এমন ঘটনা অসমিয়া সংস্কৃতির অংশ নয়। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র। এই ধরনের ‘নকশাল কৌশল’ আমাদের সংস্কৃতির পক্ষে সম্পূর্ণ বিজাতীয়। জনতাকে হিংসায় উস্কানি দেওয়ার জন্য আপনাদের নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে আমি রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নির্দেশ দিয়েছি। আপনাদের ব্যবহার করা ভিডিয়ো ফুটেজই আপনাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করা হবে।’’ মঙ্গলবার রাতেই অসম পুলিশ রাহুলের পাশাপাশি, এফআইআর করে এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল, অসম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভূপেন বরা, টিম রাহুলের সদস্য কানহাইয়া কুমার-সহ কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধে।

হিমন্তের ওই এক্স পোস্টের পরেই রাহুল বলেছিলেন, ‘‘আমাকে মন্দির, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এটি ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’কে ভয় দেখানোর কৌশলের অঙ্গ। কিন্তু আমরা ভয় পাই না।’’ মঙ্গলবার রাজধানী গুয়াহাটিতে সাংবাদিক বৈঠক করার পূর্বঘোষিত কর্মসূচি থাকলেও রাহুলকে অনুমতি দিতে অস্বীকার করে হিমন্তের পুলিশ। তাঁকে গুয়াহাটিতে ঢুকতেও বারণ করা হয়। তা সত্ত্বেও প্রায় পাঁচ হাজার কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক রাজধানীতে প্রবেশের চেষ্টা করতেই রাহুল পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এর জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাহুলের ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র জমায়েত ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ নির্বিচারে লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। আহত হন অসম বিধানসভার বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া-সহ কংগ্রেসের বেশ কয়েক জন নেতা-কর্মী।

হিমন্তের প্রশাসনের দাবি, রাজধানীর ভিতরে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে যানজট এড়াতেই রাহুলের যাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের পাল্টা অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই তুচ্ছ অছিলায় রাহুলের যাত্রা গুয়াহাটিতে ঢুকতে বাধা দিয়েছে অসমের বিজেপি সরকার। প্রসঙ্গত, ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র পঞ্চম দিনে বৃহস্পতিবার রাহুল পৌঁছেছিলেন অসমে। সে রাজ্যে প্রথম সভাতেই বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রীকে চড়া সুরে আক্রমণ করেছিলেন তিনি। সরাসরি হিমন্তকে ‘দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত মুখ্যমন্ত্রী’ বলে তোপ দেগেছিলেন। রাহুলের ওই মন্তব্যের পরেই ধারাবাহিক ভাবে অসমে বিজেপি কর্মীরা ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র উপর হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ। তাতে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অসম পুলিশের বিরুদ্ধে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE