প্রতীকী ছবি।
বিজয় মাল্য, ললিত মোদী, নীরব মোদীরা বিদেশে আশ্রয় নেওয়ার পরে নতুন আইন তৈরির সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
আজ বিশেষ বৈঠক ডেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ‘ফেরার আর্থিক অপরাধী বিল’ বা ‘ফিউজিটিভ ইকনমিক অফেন্ডার্স বিল’-এ সিলমোহর বসিয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হবে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দফা। সেই অধিবেশনেই এই বিল পেশ করবে সরকার। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানান, ১০০ কোটি টাকার বেশি আর্থিক অপরাধ বা প্রতারণার মামলায় অভিযুক্তেরা বিদেশে পালিয়ে গেলে তাঁদের যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অধিকার দেওয়া হয়েছে এই বিলে। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, বিদেশে পালিয়ে গিয়েছেন এবং দেশে ফিরছেন না এমন ব্যক্তিদেরই ফেরার তকমা দেওয়া হবে।
আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে ইডি এত দিন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারত। কিন্তু অপরাধের মুনাফায় তৈরি সম্পত্তিই একমাত্র বাজেয়াপ্ত করা যেত। তা-ও সাময়িক ভাবে। অভিযুক্ত দোষী প্রমাণিত না হলে সেই সম্পত্তি নিলামে তোলা যেত না। জেটলির যুক্তি, নতুন আইনে কাউকে ফেরার তকমা দিলেই তাঁর সব সম্পত্তিই বাজেয়াপ্ত করা যাবে। এমনকী বিদেশে থাকা সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করার নিদান রয়েছে বিলে। তবে তার জন্য অন্য দেশের সাহায্য লাগবে।
যেখানে অন্য দেশগুলি বিজয় মাল্য, ললিত মোদীদের ফেরত পাঠাচ্ছে না সেখানে তারা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে সাহায্য করবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। সরকারের অবশ্য যুক্তি, নতুন আইনের ফলে ব্যাঙ্কগুলির পাওনা টাকার বেশিরভাগটাই ফেরত পাওয়া সহজ হবে। ফেরারদের উপরেও দেশে ফিরে আসার জন্য চাপ তৈরি হবে।
নীরব মোদীর কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পরে অডিটর বা চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন জেটলি। বলেছিলেন, কী করে নীরবের বেনিয়ম পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের নজর এড়িয়ে গেল? চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা বেনিয়মে জড়িয়ে পড়লে তাঁদের উপরে নজরদারির জন্য সংস্থা তৈরির দরকার রয়েছে বলেও সরকার যুক্তি দেয়।
আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ‘ন্যাশনাল ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং অথরিটি’ তৈরিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১৩ সালের কোম্পানি আইনে সংশোধন করেই এই নতুন সংস্থা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু নানা শিবিরে আপত্তি ওঠায় তা কার্যকর হয়নি। এ বার এই বিষয়ে বিধিনিয়ম জারি করে নতুন সংস্থা তৈরি করা হবে। শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত ও বড় মাপের চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে বেনিয়মের অভিযোগ এলেই তার তদন্ত করবে নতুন সংস্থা। শৃঙ্খলাভঙ্গ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
প্রশ্ন উঠেছে, নতুন আইনে কতখানি কাজ হবে? না কি নীরব মোদীর কেলেঙ্কারিতে অস্বস্তিতে পড়ে এখন মোদী সরকার নতুন আইন করে মুখরক্ষা করতে চাইছে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy