গ্রাফিক- তিয়াসা দাস
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ‘ফ্রেন্ডশিপ ডে’ পালন করার এখন হাজারও উপায়। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে নিখাদ আড্ডায় মাতেন, কেউ উপহার দেন, কেউ সিনেমা যান, কেউ বা দল বেঁধে পিকনিকের মজা নেন। যাঁরা কোনওটাই পারেন না, তাঁরা নিদেনপক্ষে একটা মেসেজ করে দায় সারেন।
মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের ক্লাস টেনের এক ছাত্র অবশ্য কোনও চেনা রাস্তায় হাঁটেনি। বাবার দেরাজ থেকে ৪৬ লক্ষ টাকা সরিয়ে সে বিলিয়ে দিয়েছে স্কুল, কোচিং সেন্টার আর পাড়ার বন্ধুদের মধ্যে। তার মধ্যে স্থানীয় এক দিনমজুরের ছেলেকেই সে দিয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা। আর হোমওয়ার্ক করে দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এক বন্ধুকে সে দিয়েছে তিন লক্ষ টাকা। বন্ধুরাও সাগ্রহে গ্রহণ করেছে তার আর্থিক উপহার। টাকা পাওয়ার পর এক বন্ধু তা দিয়ে একটি গাড়িও কিনে ফেলেছে বলে জানা গিয়েছে।
স্কুলছাত্রের বাবা স্থানীয় প্রোমোটার। কিছুদিন আগেই সম্পত্তি বিক্রি করে তিনি ষাট লক্ষ টাকা পান। সেই টাকাই বাড়ির দেরাজে রেখেছিলেন। দেরাজে টাকা না পেয়ে পুলিশে খবর দেন তিনি। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ছেলের কীর্তি, আর সামনে আসে তার বন্ধুত্বপ্রীতির কথা।
আরও পড়ুন: মুজফফরপুর ধর্ষণ-কাণ্ড: জেলে ‘হান্টারওয়ালে আঙ্কল’-এর থেকে মিলল মন্ত্রীর নম্বর!
বাবার কাছ থেকে সমস্ত বন্ধুর তালিকা নিয়ে জনে জনে খোঁজ নিচ্ছে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ। আপাতত ৩৫ জনের নাম জানা গিয়েছে। তবে কাউকেই খালি হাতে ফেরায়নি সে। আর বন্ধুত্ব দিবসের উপহার হিসেবে সবাইকেই টাকা নয়, কাউকে বহুমূল্য স্মার্টফোন, কাউকে গয়নাও দিয়েছে এই স্কুলছাত্র।
আরও পড়ুন: পর্নোগ্রাফি দেখাতে বাধ্য করে ছ’মাস ধর্ষণ, ভোপাল হস্টেল কাণ্ডে প্রকাশ্যে চতুর্থ মহিলা
আপাতত উপহার পাওয়া বন্ধুদের অভিভাবকদের পাঁচ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত সাকুল্যে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা। বন্ধুত্বের উপহার পাওয়ার পর থেকেই নিরুদ্দেশ স্থানীয় দিনমজুরের ছেলে। তার কাছে আছে তিন লক্ষ টাকা। আর কাকে কত টাকা উপহার দেওয়া হয়েছে, সেই হিসেব নিজেও ভুলে গিয়েছে বন্ধুত্ব দিবসের এই ‘কল্পতরু’। আসলে বন্ধুত্বের কোনও হিসেব হয়না, তা মর্মে মর্মে বুঝেছে সে। যদিও হিসেব না মেলায় এখন বেজায় সমস্যায় পড়েছে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy